মালা/সে কি গো আসিবে ফিরে
সে কি গো আসিবে ফিরে?
কোথায় গিয়াছে চলি সে কি গো আসিবে ফিরে?
আশা-পথ চাহি তারি ভাসিতেছি আঁখি-নীরে।
এখন কে যেন কাণে গাহিতেছে আশা-গান।
কে যেন এখনও প্রাণে করিতেছে আশা দান॥
হৃদয়-দুয়ার খুলি আশাতে বসিয়া রই।
আসিবার আশা করি এ যাতনা প্রাণে সই॥
সারাদিন বসে ভাবি আসিবে সে এইবার।
ফুরাল সকল বেলা হ’য়ে এল অন্ধকার।
কই সে এল না ফিরে বেলা যে বহিয়া যায়।
রজনীর আঁধারেতে ঘিরিল ধরণী হায়!
আন্ মনে রহি বসি চাহি সেই আশা-পথ।
আকুল নয়নে চাহি চারি দিকে অবিরত।৷
ব্যাকুলিত এ হৃদয়ে খোঁজে তারে চারি ধার।
কোথায় গিয়াছে চলি সে আমার—সে আমার॥
হতাশের হতাশ্বাসে ভরিল জীবন মোর।
মিলিল তাহার সহ এ দুঃখ-যামিনী ঘোর।৷
কাটিল যে সারা বেলা আসিবার আশে তার।
আকুল উচ্ছাস প্রাণে ডাকি তারে বার বার॥
কোথা লুকাইল হায় দীপ্তি মম জীবনের।
আঁধারেতে মিশিতেছে এ আঁধার হৃদয়ের।৷
রজনীর অন্ধকার ঘনাইয়া এল ওই।
এখন এল না ফিরে আমার সে কই?—কই?
নীরব নিশীথ ওই গাহিতেছে দুঃখগান।
না হেরিয়া তারে যেন বিষাদেতে ম্রিয়মান।৷
আসিবে না সেকি আর মনে সুধু ভাবি তাই।
সুধাইব কার কাছে হেন জন কোথা পাই?
চুপি চুপি আসি পাছে অভিমানে ফিরি যায়।
কাতরা দেখিয়া মোরে যদি প্রাণে ব্যথা পায়।৷
হেরিয়া আমার যদি নয়নেতে অশ্রুজল।
ফিরি যায় দুঃখভরে করি আঁখি ছল ছল॥
নিরখিয়া আমারে যে পতিত এ ধরাসনে।
বিষাদে ব্যাকুল হ’য়ে রহিবে সে আন্ মনে।৷
মালা নবনীত সুকোমল ছিল যে গো সে হৃদয়।
সহিত না তাহে কভু দুঃখ তাপ জ্বালাময়॥
পরশিলে এ অনল দহিবে তাহার প্রাণ।
স্নেহেতে গঠিত তাহা দিয়া স্নেহ-উপাদান॥
হেরিয়া অনল-ভরা বিষাদিত এ জীবন।
লুকাইয়া রহিয়াছে নাহি দেয় দরশন॥
আঁধারে ঢাকিল ধরা ঢাকিল জীবন মোর।
নয়নেতে বহে ধারা হৃদয়ে তামসী ঘোর॥
আইল আঁধার নেমে ব্যাপিল জগৎ হায়!
বেলা শেষে সবে যে গো যে যার গৃহেতে যায়॥
সারা বেলা প্রাণপণে সারি কাজ জীবনের।
গৃহ মুখে ফিরে সবে সাথে ওই তপনের॥
জীবনের কাজ সারি চলি গেছ কোন্ ধাম?
বিশ্রামের দিনে বুঝি লভিলে চিরবিশ্রাম।৷