মিঠেকড়া/সিপাহী বিদ্রোহ


সিপাহী বিদ্রোহ

হঠাৎ দেশে উঠলাে আওয়াজ—“হাে-হহ, হাে-হহ, হাে-হাে”
চমকে সবাই তাকিয়ে দেখে-সিপাহী বিদ্রোহ।
আগুন হয়ে সারাটা দেশ ফেটে পড়লে রাগে,
ছেলে বুড়ো জেগে উঠলাে নব্বই সন আগে;
একশাে বছর গােলামিতে সবাই তখন ক্ষিপ্ত,
বিদেশীদের রক্ত পেলে তবেই হবে তৃপ্ত।
নানাসাহেব, আঁতিয়াটোপি, ঝাঁসীর রানী লক্ষ্মী
সবার হাতে অস্ত্র; নাচে বনের পশু-পক্ষী।
কেবল ধনী, জমিদার, আর আগের রাজার ভক্ত
যােগ দিলাে, তা নয়কো, দিলে গরীবেরাও রক্ত।
সবাই জীবন তুচ্ছ করে, মুসলমান ও হিন্দু,
সবাই দিতে রাজি তাদের প্রতি রক্ত বিন্দু।
ইতিহাসের পাতায় তােমরা পড়াে কেবল মিথ্যে,
বিদেশীরা ভুল বােঝাতে চায় তােমাদের চিত্তে।
অত্যাচারী নয়কো তারা, অত্যাচারীর মুণ্ড
চেয়েছিলাে ফেলতে ছিড়ে পালিয়ে অগ্নি কুণ্ড।
নানা জাতের নানা সেপাই গরীব এবং মূখ।
সবাই তারা বুঝেছিলাে অধীনতার দুঃখ;
তাই তাে তারা স্বাধীনতার প্রথম লড়াই লড়তে
এগিয়েছিলাে, এগিয়েছিলাে মরণ বরণ করতে!

আজকে যখন স্বাধীন হবার শেষ লড়াইয়ের ডঙ্কা
উঠছে বেজে, কোনাে দিকেই নেইকো কোনাে শঙ্কা;
জব্বলপুরে সেপাইদেরও উঠছে বেজে বাদ্য
নতুন করে বিদ্রোহ আজ; কেউ নয়কো বাধ্য,
তখন এদের স্মরণ করাে, স্মরণ করে নিত্য
এদের নামে, এদের পণে শানিয়ে তােলা চিত্ত।
নানাসাহেব, আঁতিয়াটোপি, ঝাঁসীর রানী লক্ষ্মী,
এঁদের নামে, দৃপ্ত কিশাের, খুলবে তােমার চোখ কি?