মুর্শিদাবাদ-কাহিনী/রোশনীবাগ (ফর্হাবাগ)

রোশনীবাগ

ফর্হাবাগ

 মুর্শিদাবাদের বর্তমান নবাব-প্রাসাদের সম্মুখে, ভাগীরথীর পশ্চিম তীরে একটি সুন্দর ছায়াময় ও শান্তিময় উদ্যান দৃষ্ট হইয়া থাকে; এই উদ্যানটির নাম রোশনীবাগ। রোশনীবাগ ডাহাপাড়া গ্রামে অবস্থিত। উদ্যানটি আকারে বৃহৎ না হইলেও ইহার রমণীয়তা সর্বজন-প্রশংসনীয়। এই উদ্যানের সম্মুখে পূর্বে নবাবদিগের আলোকোৎসব হইত বলিয়া সাধারণতঃ সেই স্থানকে রোশনীবাগ বলে। আম্র প্রভৃতি বৃক্ষরাজি আপনাদিগের শ্যামপত্রপূর্ণ শাখা বিস্তার করিয়া পরস্পর পরস্পরকে আলিঙ্গন করিয়া থাকায়, রোশনীবাগের অভ্যন্তরে সূর্যরশ্মি প্রবেশ করিতে পারে না; এইজন্য স্থানটিকে অত্যন্ত ছায়াময় করিয়া রাখিয়াছে। নিদাঘের মধ্যাহ্ন-সময়ে এই রমণীয় উদ্যানের ছায়াতলে উপস্থিত হইলে, শরীর স্নিগ্ধ হইয়া যায় এবং ধীরে ধীরে মলয়সমীরণ প্রবাহিত হইয়া শরীরকে শীতল করিয়া তুলে। সেই সময় উদ্যানের চারি পাশ হইতে নানাধিধ সুকণ্ঠ বিহঙ্গের মধুরধ্বনি কর্ণকুহরে অমৃত ঢালিয়া দেয়। আবার উদ্যানের স্থানে স্থানে নানাবিধ প্রস্ফুটিত পুষ্প চারিদিকে সুগন্ধ বিস্তার করিয়া মনঃপ্রাণ প্রফুল্ল করিতে থাকে।

 এই রমণীয় উদ্যানের ছায়াতলে মুশিদাবাদের দ্বিতীয় নবাব সুজা উদ্দীন চিরসমাহিত আছেন। সুজা উদ্দীন মুর্শিদকুলী জাফর খাঁর জামাতা। সুজা পূর্বে উড়িষ্যার শাসনকর্তৃপদে নিযুক্ত ছিলেন; তাঁহার উড়িষ্যায় অবস্থানকালে, আলিবর্দী খাঁ ও তাঁহার জ্যেষ্ঠভ্রাতা হাজী আহাম্মদ সুজার অধীনতায় কার্যে নিযুক্ত হন; পরে তাঁহার নিজামতী সময়ে তাঁহাদিগের আরও উন্নতি হয়। সুজা উদ্দীনের তুল্য ন্যায়পর নবাব অল্পই দৃষ্ট হইয়া থাকে। তাঁহার ন্যায় পরোপকারিতা অমায়িক ব্যবহার ও ন্যায়ানুমোদিত শাসন মুর্শিদাবাদের কোন নবাবে দেখিতে পাওয়া যায় না। মুর্শিদাবাদের নবাবদিগের মধ্যে তিনিই প্রথমে হিন্দু-মুসলমান উভয় জাতিকে সমভাবে প্রতিপালন করিতে আরম্ভ করেন। মুতাক্ষরীণকার[] নওশেরোয়াঁর রাজত্বের সহিত তাঁহার রাজত্বের তুলনা করিয়াছেন। মুর্শিদকুলী খাঁ যে-সমস্ত জমিদারদিগকে বন্দী অবস্থায় রাখিয়া অশেষ কষ্ট প্রদান করিয়াছিলেন, সুজা উদ্দীন তাঁহাদিগকে মুক্ত করিয়া এবং মুর্শিদকুলীর হিন্দুদিগের প্রতি অত্যাচারী কর্মচারিদিগের প্রাণদণ্ডের আদেশ দিয়া, সর্বাপেক্ষা ন্যায়পরতার দৃষ্টান্ত দেখাইয়া গিয়াছেন। তাঁহার শাসনে হিন্দু-মুসলমান উভয়বিধ প্রজাই প্রীত ছিল।

 সুজা উদ্দীন নানাবিধ সদ্‌গুণে সমলঙ্কৃত থাকিলেও তাঁহার কিঞ্চিৎ ইন্দ্রিয়দোষ ছিল। কাহারও কাহারও মতে যে ইন্দ্রিয়দোষের হস্ত হইতে মোগলকুলের আদর্শ সম্রাট্‌ আকবর শাহাও নিস্তার পান নাই, সুজা উদ্দীন যে তাহার দ্বারা আক্রান্ত হইবেন, ইহা বড় বিচিত্র নহে। সুজা মুর্শিদাবাদের মসনদে উপবেশন করিয়া অত্যন্ত বিলাসী হইয়া উঠেন। নবাব মুর্শিদকুলী খাঁর নির্মিত অট্টালিকাদি সুজার বিবেচনায় তাদৃশ মনোরঞ্জক না হওয়ায়, তিনি তৎপরিবর্তে অনেক সুন্দর সুন্দর অট্টালিকাদি নির্মাণ করেন। সর্বাপেক্ষা তাঁহার শ্রেষ্ঠ কীর্তি একটি উদ্যান; এই উদ্যানটির নাম ফর্হাবাগ বা সুখকানন। ফৰ্হাবাগ ডাহাপাড়াতেই অবস্থিত, এবং রোশনীবাগ হইতে কিছু উত্তরে। মুর্শিদকুলীর জনৈক অত্যাচারী কর্মচারী নাজীর আহম্মদ এই উদ্যানের নির্মাণ আরম্ভ করিয়া, তথায় মস্‌জেদাদির গঠন করিতেছিল। নবাব সুজা উদ্দীন তাহার অত্যাচারের প্রতিফলস্বরূপ প্রাণদণ্ডের বিধান করিয়া, পরে নিজে সেই উদ্যানটিকে সুশোভিত করিয়াছিলেন। মস্‌জেদটি সুন্দররূপে নিৰ্মাণ করিয়া তিনি উদ্যানের রমণীয়তা চতুর্গুণ বর্ধিত করেন। ঐ উদ্যানের মধ্যে সুন্দর সুন্দর প্রমোদ-অট্টালিকা নির্মিত হয়। উহাতে নানাজাতীয় বৃক্ষ শ্রেণীবদ্ধ হইয়া শোভা পাইত। স্থানে স্থানে ফোয়ারা, চৌবাচ্চা ও লহর জলভরে টল টল করিয়া উদ্যানটিকে একখানি ছবির ন্যায় প্রতিপন্ন করিত। ঐ উদ্যানে পুষ্করিণী খনন করিয়া চারিদিকে সোপান দ্বারা সুশোভিত করা হইয়াছিল। নানাবিধ সুগন্ধি পুষ্প প্রস্ফুটিত হইয়া লোকের মনঃপ্রাণ কাড়িয়া লইত। মুসলমান লেখকগণ বলেন যে, ইহার রমণীয়তার নিকট কাশ্মীরের উদ্যানসকল লজ্জা পাইত, এমন কি, স্বর্গের উদ্যানও ইহার নিকট হইতে সৌন্দর্য ঋণ করিয়া লইত। উদ্যানের রমণীয় শোভায় মুগ্ধ হইয়া স্বর্গের পরীগণ ইহাতে ভ্রমণ করিতে আসিত, এবং ইহার চারুসোপানাবলীসমন্বিত পুষ্করিণীর স্ফটিকশুভ্র স্বচ্ছজলে অবগাহন করিয়া, কুসুমগন্ধাপহারী মলয়সমীরে শরীর সুস্নিগ্ধ করিত। নবাব প্রহরীদের নিকট পরীদিগের আগমনের কথা অবগত হইয়া, ধূলিবৃষ্টিদ্বারা উদ্যানের সৌন্দর্য নষ্ট করিয়া তাহাদিগকে স্বৈরবিহার হইতে নিবৃত্ত করিয়াছিলেন।[]

 মুসলমান লেখকগণ এইরূপে ফর্হাবাগের অশেষ বর্ণনা করিয়া থাকেন। যখন বসন্তের মধুর স্পর্শে উদ্যানস্থ বৃক্ষরাজি নব-পল্লবে পরিশোভিত হইয়া শ্যামলতার ঢেউ খেলাইতে খেলাইতে আকাশের নীলিমার সহিত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রবৃত্ত হইত, নানাবিধ প্রফুল্ল কুসুম আপনাদিগের সুগন্ধ বিতরণে মলয়সমীরণের প্রত্যেক অণুকে অধিবাসিত করিয়া তুলিত, চূতমঞ্জরীর গন্ধে মাতোয়ারা হইয়া পিককুল অবিরত পঞ্চমে তান ছড়াইত এবং অন্যান্য সুকণ্ঠ বিহঙ্গগণের মধুর কাকলীতে চারিদিক মুখর হইয়া উঠিত, সেই সময় নবাব সুজা উদ্দীন কলকণ্ঠী গায়িকাগণের সহিত ফর্হাবাগে সমাগত হইয়া আমোদপ্রমোদে সময় অতিবাহিত করিতেন। ঝর ঝর শব্দে অবিরত ফোয়ারাগুলি সলিলবৃষ্টি করিতে থাকিত, সলিলভরে পরিপূর্ণ পুষ্করিণী, চৌবাচ্চা, লহরগুলি ঈষৎ সমীরস্পর্শে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তরঙ্গ তুলিয়া নৃত্য করিয়া উঠিত, তাহাদের সঙ্গে সঙ্গে বিহঙ্গমগণের কণ্ঠধ্বনির সহিত গায়িকাগণের মধুর কণ্ঠ মিশ্রিত হইয়া দিগন্তহৃদয়ে মধুর ধারা ঢালিয়া দিত। যদি স্বর্গের পরীগণ বাস্তবিকই পৃথিবীতে ভ্রমণ করিতে আসে, তাহা হইলে ফর্হাবাগের ন্যায় উদ্যানে তাহাদের আগমন বড় বিচিত্র নহে। মধ্যে মধ্যে নবাব স্বীয় অন্তঃপুরবাসিনীদিগের মনোরঞ্জনের জন্য এই সুখকাননে সমবেত হইয়া, নানাবিধ পবিত্র আমোদপ্রমোদ উপভোগ করিতেন। বাস্তবিকই ফর্হাবাগে তিনি প্রকৃত সুখের আস্বাদ পাইতেন। এই সমস্ত আমোদপ্রমোদ ব্যতীত তিনি আর একটি প্রশংসনীয় আমোদ উপভোগ করিতেন। সুজা প্রতি বৎসর যাবতীয় বিদ্বান ও গুণদিগকে নিমন্ত্রণ করিয়া সকলকে সমাদরের সহিত ফৰ্হাবাগে লইয়া যাইতেন, এবং তাহাদিগকে পরিতৃপ্তির সহিত ভোজন করাইতেন।[] নবাব সুজা উদ্দীন বিলাসী হইয়াও যে গুণের মর্যাদা করিতেন, ইহা হইতে তাহার পরিচয় পাওয়া যায়।

 সুজা উদ্দীনের সাধের ফর্হাবাগ এক্ষণে হতশ্রী হইয়া ধূ ধূ করিতেছে। সে-সমস্ত শ্রেণীবদ্ধ সুন্দর বৃক্ষরাজির চিহ্নমাত্রও নাই। মধ্যস্থলে একটি বৃহৎ পুষ্করিণী শুষ্ক অবস্থায় রহিয়াছে। অল্পদিন হইল, ভাগীরথী মস্‌জেদটিকে নিজ গর্ভে আশ্রয়দান করিয়াছেন। লহর চৌবাচ্চা এ-সকলের কোন নিদর্শন দেখা যায় না, মধ্যে মধ্যে অট্টালিকার ভিত্তির ভগ্নাবশেষমাত্র দেখিতে পাওয়া যায়। দক্ষিণ দিকের একটি তোরণদ্বারের এবং উত্তরদিগের প্রাচীরের কতকটা ভগ্নাবশেষ আজিও বর্তমান আছে। ফর্হাবাগের মধ্যে দুই-এক ঘর কৃষক বাস করিতেছে; তাহারা উদ্যানের ভূমি কর্ষণ করিয়া, তাহাতে সর্ষপাদি শস্য বপন করিয়া থাকে। স্থানটিকে আজিও ফর্হাবাগ বলে, নতুবা লোকে অনুসন্ধান করিয়াও সুজা উদ্দীনের প্রমোদকাননের স্থান নির্দেশ করিতে পারিত না।

 সুজা উদ্দীন হিঃ ১১৩৯ অব্দে মুর্শিদাবাদের সিংহাসনে আরোহণ করিয়া, ১২৫১ অব্দে পরলোকগমন করেন। রোশনীবাগের ছায়াতলে তিনি বিশ্রামলাভ করিতেছেন। রিয়াজ প্রভৃতি গ্রন্থে লিখিত আছে যে, তাঁহাকে কেল্লার সম্মুখে ডাহাপাড়ার মস্‌জেদভবনে সমাহিত করা হয়। এই মস্‌জেদ তাঁহার নিজ-নির্মিত কিনা বলা যায় না। রোশনীবাগে যে-মস্‌জেদটি বিদ্যমান আছে, তাহাতে হিঃ ১১৫৬ অব্দ লিখিত আছে এবং লোকমুখে শুনিতে পাওয়া যায় যে, নবাব আলিবর্দী খাঁ মহাবৎজঙ্গ উক্ত মস্‌জেদ নির্মাণ করিয়াছিলেন। সুজা উদ্দীন হইতে তাঁহার যাবতীয় উন্নতির সূচনা হওয়ায়, আলিবর্দী স্বীয় পূর্ব-প্রভুর পরকালের কল্যাণোদ্দেশে তাঁহার সমাধিভবনে উক্ত মস্‌জেদ নির্মাণ করিয়া থাকিবেন। রোশনীবাগের বর্তমান সমাধিভবনের উত্তর দিকে ইহার প্রবেশদ্বার। প্রবেশদ্বার অতিক্রম করিয়া কয়েক পদ অগ্রসর হইলে সুজার সমাধিগৃহ দৃষ্ট হয়। প্রায় ৩ হাত উচ্চ একটি বিস্তৃত ভিত্তির উপর সমাধিভবন নির্মিত হইয়াছে। পূর্বের সমাধিভবন ধ্বংসমুখে পতিত হইলে, তাহারই ভিত্তিতে এই নূতন সমাধিভবন নির্মিত হয়। সমাধিভবনটি দৈর্ঘ্যে ১৪ ও প্রস্থে ১৩ হাত হইবে। সম্মুখভাগে তিনটি দ্বার; মধ্যদ্বারে উপরে কৃষ্ণপ্রস্তরফলকে ফারসী ফাষায় লিখিত আছে যে, “১১৫১ হিজরীর ১৩ই জেলহজ্জ মঙ্গলবার সুজা উদ্দৌলা সর্বোচ্চ স্বর্গের অধিবাসিপদ লাভ করেন।” গৃহাভ্যন্তরে সুজা উদ্দীনের বিশাল সমাধি বিরাজ করিতেছে। এরূপ বৃহৎ আকারের সমাধি মুর্শিদাবাদে আর দৃষ্ট হয় না। সমাধিটি দৈর্ঘ্যে প্রায় ৭ হাত। গৃহের পশ্চাতে অর্থাৎ দক্ষিণ দিকে একটি ক্ষুদ্র বারাণ্ডা, তাহাতে আর একটি সমাধি আছে। সমাধিভবন হইতে উত্তর-পশ্চিম দিকে এবং সমাধিগৃহ ও প্রবেশদ্বারের মধ্যে একটি ত্রিগম্বুজবিশিষ্ট মস্‌জেদ। এই মস্‌জেদে উপাসনাদি কার্য হইয়া থাকে। মস্‌জেদে হিঃ ১১৫৬ অব্দ লিখিত আছে; এইজন্য ইহা আলিবর্দীর নির্মিত বলিয়া বোধ হয়। মস্‌জেদটি উত্তর-দক্ষিণে দৈর্ঘ্যে ২৩ হাতের অধিক এবং পূর্ব-পশ্চিমে প্রস্থে ১২ হাত হইবে। উত্তরদিকের প্রবেশদ্বার ব্যতীত দক্ষিণদিকে আর একটি ক্ষুদ্র দ্বার আছে; উদ্যানের উত্তর-পূর্ব দিকে প্রহরীদের একটি অসংস্কৃত বাসস্থান রহিয়াছে। সমাধিভবনটির সংস্কার হওয়ায় ইহাকে অত্যন্ত সুন্দর বোধ হইতেছে। আম্র প্রভৃতির বৃক্ষসকল এই সমাধিভবন ও মস্‌জেদকে ছায়া দ্বারা আবৃত করিয়া অতীব মনোরম করিয়া রাখিয়াছে। মুর্শিদাবাদের মধ্যে এরূপ ছায়াময় ও শান্তিময় স্থান অতি বিরল। উদ্যানের স্থানে স্থানে পুষ্পসকল প্রস্ফুটিত হইয়া আছে। রোশনীবাগের সমাধি মন্দিরের নিম্ন দিয়া ভাগীরথী প্রবাহিতা হইতেছেন। বর্ষাকালে তাঁহার সলিলরাশি উদ্যানপ্রাচীরের অতি নিকটে উপস্থিত হয়। বৈদেশিক ভ্রমণকারিগণ ছায়াময় রোশনীবাগের সবিশেষ প্রশংসা করিয়া থাকেন।

 এই সমাধি-উদ্যান মুর্শিদাবাদ কেল্লার সম্মুখস্থ; ইহার নিকটস্থ ভাগীরথীতীরে মুর্শিদাবাদের প্রধান প্রধান উৎসবোপলক্ষে নানারূপ আলোকক্রীড়া হইত, সেইজন্য ইহার নাম রোশনীবাগ। বংশ নির্মিত দ্বিতল, ত্রিতল প্রভৃতি গৃহ আলোকমালায় বিভূষিত করা হইত। ভাগীরথীর অপর পার হইতে নবাববংশীয় ও অন্যান্য সন্ত্রাস্ত জনগণ এই আলোকক্রীড়া দেখিতেন, এবং নদীবক্ষে অনেক লোকে পরিপূর্ণ হইয়া তরণীসকল বিরাজ করিত। যখন কোন প্রধান উৎসব বা পর্বের সময় আসিত, তখনই রোশনীবাগে আলোকের ক্রীড়া হইত। মুর্শিদাবাদে এক্ষণে আর সেরূপ আলোকোৎসব হয় না। কেবল রোশনীবাগের নামমাত্র রহিয়াছে। এক্ষণে কোন কোন সময়ে এই স্থানে সামান্যরূপ আলোকোৎসব দেখা যায়। মুর্শিদাবাদের সমস্ত উৎসব ও পর্ব এক্ষণে জীবনহীন হইয়া পড়িয়াছে। এই সমস্ত দেখিয়া বোধ হয়, মুর্শিদাবাদের গৌরব চিরঅস্তমিত হইতে বসিয়াছে।

  1. Seir Mutaqherin. (Translation) Vol. I, p. 350, পারস্যদেশের নওশেরোয়াঁ সসাসেনীয়বংশসম্ভূত; তিনি অত্যন্ত ধাৰ্মিক রাজা বলিয়া কথিত ছিলেন। তাঁহারই রাজত্বসময়ে মহম্মদের জন্ম হয়।
  2. Riyaz-us-salatin, p. 292.
  3. Riyaz-us-salatin, p. 307.