মেগাস্থেনীসের ভারত-বিবরণ (১৯৪৪)/২৫তম অংশ

ষ্ট্রাবো

পাটলিপুত্র নগর

 মেগাস্থেনীস বলেন, গঙ্গার বিস্তার গড়ে এক শত ষ্টাডিয়ম ও সর্বন্যূন গভীরতা এক শত ফুট।

 গঙ্গা ও অপর একটি নদীর সঙ্গমস্থলে পাটলিপুত্র (Palibothra) অবস্থিত। ইহার দৈর্ঘ্য আশী ষ্টাডিয়ম ও বিস্তার পনর ষ্টাডিয়ম। ইহার আকার সমান্তরাল ক্ষেত্রের ন্যায়। ইহা চতুর্দিকে কাষ্ঠময় প্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত, উহাতে তীর নিক্ষেপের জন্য রন্ধ্র আছে। ইহার সম্মুখে নগর রক্ষা ও উহার দূষিত জল গ্রহণের উদ্দেশ্যে পরিখা রহিয়াছে। যে জাতির রাজ্যে এই নগর অবস্থিত তাহা ভারতবর্ষে সর্বাপেক্ষা বিখ্যাত; উহার নাম প্রাচ্য (Prasioi)। ইহার রাজাকে স্বীয় বংশের নাম ভিন্ন পাটলিপুত্র নামও গ্রহণ করিতে হয় । যেমন, চন্দ্রগুপ্তকে এই নাম গ্রহণ করিতে হইয়াছিল;—মেগাস্থেনীস ইঁহারই নিকট দূতরূপে প্রেরিত হইয়াছিলেন। [ পাথিয়ানদিগের মধ্যেও এইরূপ প্রথা আছে; কারণ সকলের নামই আর্‌সাকাই (Arsakai), যদিচ প্রত্যেকরই বিশেষ বিশেষ নাম আছে; যথা— অরোডীস (Orodes), ফ্রাটীস (Phraates), অথবা অপর কিছু।]

 তৎপর নিম্নোদ্ধ্বত স্থল:—

 [সকলেই বলেন যে হাইপানিসের পরে সমুদায় দেশ অত্যন্ত উর্বর; কিন্তু এ বিষয়ের সূক্ষ্ম রূপে অনুসন্ধান হয় নাই। অজ্ঞতা ও দূরত্ব, এই উভয় কারণ বশত এই ভূভাগ সম্বন্ধে সমস্ত বর্ণনাই অত্যুক্তিপূর্ণ, কিংবা অত্যদ্ভুত রূপে অনুরঞ্জিত। যেমন, স্বর্ণখননকারী পিপীলিকা, বিচিত্র আকারের অদ্ভুতশক্তিবিশিষ্ট মানুষ ও অন্যান্য জন্তুর উপাখ্যান। তাহার দৃষ্টাস্ত এই । শুনা যায় সীর (Seres) জাতি এমন দীর্ঘজীবী যে তাহারা দুই শত বৎসরের অধিক কাল জীবিত থাকে। আরও শুনা যায় যে (এই ভূখণ্ডে) অভিজাতবর্গ দ্বারা গঠিত এক রাষ্ট্রতন্ত্র আছে, উহার পাঁচ শত সদস্য। সদস্যগণের প্রত্যেকে ঐ রাজ্যকে এক একটি হস্তী প্রদান করেন।]

 মেগাস্থেনীস বলেন যে প্রাচ্যগণের দেশেই সর্বাপেক্ষা বৃহৎ ব্যাঘ্র দৃষ্ট হয়। ইত্যাদি।