রকম রকম/সূচনা
রকম রকম।
সূচনা।
এই কলিকাতা সহর জুয়াচোরে পূর্ণ, একথা প্রায়ই সর্ব্বদা সকলের মুখেই শুনিতে পাওয়া যায়। প্রকৃত-পক্ষে কলিকাতা একবারে জুয়াচোরে পরিপূর্ণ না হইলেও, ইহা যে অনেক জুয়াচোরের আবাস স্থল, সে সম্বদ্ধে আর কিছুমাত্র সন্দেহ নাই। এখানে অনেক জুয়াচোর অনেকরূপ উপায় অবলম্বন করিয়া নিত্য যে কত নিরীহ লোকগণকে প্রতারিত করিতেছে, তাহার সংখ্যা কে করে? কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, যে সকল পুরাতন জুয়াচুরির কৌশল অবলম্বন করিয়া জুয়াচোরগণ নিত্য লোকগণকে ঠকাইয়। থাকে, সেই সকল পুরাতন কৌশল-জালে এখনও নিত্য অনেক লোক পতিত হইতেছেন। আপনা হইতে সতর্ক হইতে না পারিলে, জুয়াচোরগণ কর্ত্তৃক প্রতারিত হইবার সম্পূর্ণ সম্ভাবনা। এই নিমিত্তই আমি মধ্যে মধ্যে বিস্তর জুয়াচুরির বিবরণ এই দারোগার দপ্তরে বর্ণন করিয়া সর্ব্বসাধারণকে সতর্ক করিয়া দিয়া থাকি। আমার লিখিত জুয়াচুরির বিষয় পাঠ করিয়া, অনেক পাঠক মধ্যে মধ্যে জুয়াচোরগণের হস্ত হইতে পরিত্রাণ পাইয়া থাকেন, একথাও অনেক সময় আমি সেই সমস্ত পাঠকগণের প্রমুখাৎ শ্রবণ করিয়াছি। তথাপি নিরীহ মফঃস্বল-বাসীগণের মধ্যে অনেকেই কলিকাতায় আসিয়া জুয়াচোরগণ কর্ত্তৃক এখনও প্রতারিত হইতেছেন! তাঁহাদিগকে সতর্ক করিয়া দিবার অভিলাষে, যে সকল জুরাচুরি সর্ব্বক্ষণ কলিকাতায় চলিতেছে, তাহার মধ্য হইতে কয়েকটামাত্র এই স্থানে বর্ণনা করিলাম। এই সকল বিষয় সবিশেষরূপ সুখ-পাঠ্য না হইলেও, আশা করি, পাঠক মহাশয়গণ জুয়াচোরগণের হস্ত হইতে পরিত্রাণ পাইবার মানসেই অন্ততঃ একবার ইহা সবিশেষ মনোযোগের সহিত পাঠ করিবেন। কেবল এগুলিই বা কেন, এ পর্য্যন্ত আমি জুয়াচুরির যে সকল কৌশল ইতিপূর্ব্বে বর্ণন করিয়াছি, এবং ভবিষ্যতে আরও যে সকল বর্ণন করিব, সেই সকল বিষয় উত্তমরূপে অবগত থাকিলে জুয়াচোরগণ সহজে তাঁহাদিগের নিকট আসিতে সমর্থ হইবে না। অথচ এই সকল বিষয় পাঠ করিয়া যত লোক জুয়াচোরের হস্ত হইতে পরিত্রাণ লাভ করিবেন, আমি ততই আমার পরিশ্রম সার্থক মনে করিব।