ললিতাসুন্দরী ও কবিতাবলী/কবিতাবলী/তিরোধান
যখন ছড়ায়ে যায় কাদম্বিনী দল,
কোথা থাকে সোণার বিজলী?
যখন শুকায়ে যায় উন্নত বিটপী,
কোথা থাকে পল্লব-অঞ্জলি?
যখন ঝরিয়ে যায় কুসুম সুন্দর,
কোথা থাকে তাহার সৌরভ?
যখন ভাঙিয়ে যায় মধুর মুরলী,
কোথা থাকে তাহার সুবব?
যখন পলায়ে যায় হরিত বসন্ত,
কোথা থাকে মলয় পবন?
যখন মিলায়ে যায় সাধের প্রণয়,
কোথা পাই তা’র দরশন?
যখন মুদিত হয় মধুর চন্দ্রমা,
এ জগত অন্ধকার হয়;
যখন নিদ্রিত হয় মৃদুল অনিল,
নীরবেতে রয় উর্ম্মিচয়;
যখন বিগত হয় দিবার প্রতিভা,
কাঁদে জলে একাকী তপন;
যখন মলিন হয় পদ্মের প্রতিমা,
মধুকর নীরব তখন;
যখন পরাণ পাখী করে পলায়ন,
পড়ে থাকে সোণার শরীর;
যখন পলায়ে যায় সাধের প্রণয়
পড়ে থাকে হৃদয় অধীর!
যখন চলিয়ে যায় সুখের সময়,
ফিরে নাহি আসে পুনরায়;
যখন ভাঙিয়ে যায় তরল লহরী,
নদী পুন দেখে না তাহায়;
যখন নিবিয়ে যায় পরিণয় দীপ,
পুন তায় দেখে না দম্পতী;
যখন ফুরায়ে যায় নবীন যৌবন,
তাহারে না পায় রূপবতী;
যখন চলিয়ে যায় পরাণ-পবন,
পুন তাহ ফিরে নাহি বয়;
যাইলে ফিরিয়ে আর আসে না কখন