দুই

একদিন তুচ্ছ আলাপের ফাক দিয়ে
কোন অভাবনীয় স্মিতহাস্যে
আমার আত্মবিশ্বল যৌবনটাকে
দিলে তুমি দোলা;
হঠাৎ চমক দিয়ে গেল তােমার মুখে
একটি অমৃতরেখা;
আর কোনােদিন তার দেখা মেলে নি।
জোয়ারের তরঙ্গ-লীলায় গভীর থেকে উৎক্ষিপ্ত হল
চিরদুর্লভের একটি রত্নকণা
শতলক্ষ ঘটনার সমুদ্র-বেলায়।

এমনি এক পলকে বুকে এসে লাগে
অপরিচিত মুহুর্তের চকিত বেদনা
প্রাণের আধ-খােলা জানায়।
দূর বনান্ত থেকে
পথ-চলতি গানে।

অভূতপূর্বের অদৃশ্য অঙ্গুলি বিরহের মীড় লাগিয়ে যায়
হৃদয়তারে
বৃষ্টিধারামুখর নির্জন প্রবাসে,
সন্ধ্যাযুথীর করুণ স্নিগ্ধ গন্ধে
রেখে দিয়ে যায় কোন্ অলক্ষ্য আকস্মিক
আপন খ্বলিত উত্তরীয়ের স্পর্শ।

তার পরে মনে পড়ে
একদিন সেই বিস্ময়-উন্মনা নিমেষটিকে
অকারণে অসময়ে;
মনে পড়ে শীতের মধ্যাহ্নে,
যখন গােরু-চরা শস্যরিক্ত মাঠের দিকে
চেয়ে চেয়ে বেলা যায় কেটে;
মনে পড়ে, যখন সঙ্গহারা সায়াহ্নের অন্ধকারে
সূর্যাস্তের ও পার থেকে বেজে ওঠে
ধ্বনিহীন বীণার বেদনা।