সঞ্চয়িতা/ক্ষণিক মিলন
(পৃ. ৯৭)
ক্ষণিক মিলন
একদা এলোচুলে কোন্ ভুলে ভুলিয়া
আসিল সে আমার ভাঙা দ্বার খুলিয়া।
জ্যোৎস্না অনিমিখ, চারি দিক সুবিজন—
চাহিল একবার আঁখি তার তুলিয়া।
দখিন-বায়ু-ভরে থরথরে কাঁপে বন,
উঠিল প্রাণ মম তারি সম দুলিয়া।
আবার ধীরে ধীরে গেল ফিরে আলসে,
আমার সব হিয়া মাড়াইয়া গেল সে।
আমার যাহা ছিল সব নিল আপনায়,
হরিল আমাদের আকাশের আলো সে।
সহসা এ জগৎ ছায়াবৎ হয়ে যায়
তাহারি চরণের শরণের লালসে।
যে জন চলিয়াছে তারি পাছে সবে ধায়,
নিখিলে যত প্রাণ যত গান ঘিরে তায়।
সকল রূপহার উপহার চরণে—
ধায় গো উদাসিয়া যত হিয়া পায় পায়।
যে জন পড়ে থাকে একা ডাকে মরণে—
সুদূর হতে হাসি আর বাঁশি শোনা যায়।
জোড়াসাঁকো। কলিকাতা
৯ ভাদ্র ১২৯৬
৯ ভাদ্র ১২৯৬