সেঁজুতি/অমর্ত্য
আমার মনে একটুও নেই বৈকুণ্ঠের আশা।—
ঐখানে মোর বাসা
যে মাটিতে শিউরে ওঠে ঘাস,
যার পরে ঐ মন্ত্র পড়ে দক্ষিণে বাতাস।
চিরদিনের আলোক-জ্বালা নীল আকাশের নিচে
যাত্রা আমার নৃত্য-পাগল নটরাজের পিছে।
ফুল ফোটাবার যে রাগিণী বকুল শাখায় সাধা
নিষ্কারণে ওড়ার আবেগ চিলের পাখায় বাঁধা,
সেই দিয়েছে রক্তে আমার ঢেউয়ের দোলাদুলি
স্বপ্নলোকে সেই উড়েছে সুরের পাখ্না তুলি’।
দায়-ভোলা মোর মন
মন্দে ভালোয় সাদায় কালোয় অঙ্কিত প্রাঙ্গণ
ছাড়িয়ে গেছে দূর দিগন্তপানে
আপন বাঁশির পথ-ভোলানো তানে।
দেখা দিল দেহের অতীত কোন্ দেহ এই মোর,
ছিন্ন করি’ বস্তুবাঁধন ডোর।
শুধু কেবল বিপুল অনুভূতি,
গভীর হতে বিচ্ছুরিত আনন্দময় দ্যুতি,
শুধু কেবল গানেই ভাষা যার,
পুষ্পিত ফাল্গুনের ছন্দে গন্ধে একাকার;
নিমেষহারা চেয়ে-থাকার দূর অপারের মাঝে
ইঙ্গিত যার বাজে।
যে-দেহেতে মিলিয়ে আছে অনেক ভোরের আলো,
নাম-না-জানা অপূর্বেরে যার লেগেছে ভালো,
যে-দেহেতে রূপ নিয়েছে অনির্বচনীয়
সকল প্রিয়ের মাঝখানে যে প্রিয়,
পেরিয়ে মরণ সে মোর সঙ্গে যাবে
কেবল রসে, কেবল সুরে, কেবল অনুভাবে॥
১১।৩।৩৭