সোনার তরী (১৮৯৩)/আত্মসমর্পণ
(পৃ. ১৯৯)
আত্মসমর্পণ।
তােমার আনন্দগানে আমি দিব সুর
যাহা জানি দুয়েকটি প্রীতি-সুমধুর
অন্তরের গাথা; দুঃখের ক্রন্দনে
বাজিবে আমার কণ্ঠ বিষাদ-বিধুর
তােমার কণ্ঠের সনে; কুসুমে চন্দনে
তােমারে পূজিব আমি; পরাব সিন্দুর
তােমার সীমন্তে ভালে; বিচিত্র বন্ধনে
তােমারে বাঁধিব আমি; প্রমােদ-সিন্ধুর
তরঙ্গেতে দিব দোলা নব ছন্দে তানে!
মানব-আত্মার গর্ব্ব আর নাহি মাের,
চেয়ে তাের স্নিগ্ধশ্যাম মাতৃমুখ পানে,
ভাল বাসিয়াছি আমি ধুলি মাটি তাের!
জন্মেছি যে মর্ত্ত্য-কোলে ঘৃণা করি তারে
ছুটিব না স্বর্গ আর মুক্তি খুঁজিবারে!
৫ অগ্রহায়ণ, ১৩০০।