সোনার তরী (১৮৯৩)/দরিদ্রা
(পৃ. ১৯৮)
দরিদ্রা।
দরিদ্রা বলিয়া তােরে বেশি ভালবাসি
হে ধরিত্রী, স্নেহ তাের বেশি ভাল লাগে,
বেদনা-কাতর মুখে সকরুণ হাসি
দেখে’ মাের মর্ম্ম মাঝে বড় ব্যথা জাগে!
আপনার বক্ষ হতে রস রক্ত নিয়ে
প্রাণটুকু দিয়েছিস্ সন্তানের দেহে,
অহর্নিশি মুখে তার আছিস্ তাকিয়ে
অমৃত নারিস্ দিতে প্রাণপণ স্নেহে!
কত যুগ হতে তুই বর্ণ গন্ধ গীতে
সৃজন করিতেছিস্ আনন্দ আবাস,
আজো শেষ নাহি হল দিবসে নিশীথে,
স্বর্গ নাই, রচেছিস্ স্বর্গের আভাস!
তাই তাের মুখখানি বিষাদ-কোমল,
সকল সৌন্দর্য্যে তাের ভরা অশ্রুজল!