হিতদীপ/প্রণয় বা বন্ধুত্ব

প্রণয় বা বন্ধুত্ব।

আহা কিবা মহাধন প্রণয় রতন
যে ধনের গুণে সুখী হয় দুখীজন,
ভকতি, বৎসলভাব আদি গুণ যত
সকলি সুধন বলি জগতে বিদিত।
কিন্তু এই মহাধন যে সুখ বিতরে,
সে সুখ করিতে দান পারে কি অপরে?
অনন্ত আনন্দদায়ী সুধাপান তরে,
লোলুপ যখন সুধী সাধু মধুকরে,
তখন ব্যাঘাতময় কণ্টক নিচয়,
সখা বিনা দূর করে কোন্‌ সহৃদয়?
সখার মোহনরূপ হেরিলে নয়ন
বরষে পুলক-অশ্রু অজস্র তখন
বিষাদ মলিন মন সুবিশদ হয়,
বদন কমল ফুল্ল হয় শোভাময়।

সুধাময় “সখা” নাম জুড়ায় শ্রবণ,
কথনে অকথ্য সুখে করয়ে মগন।
শশিহীন নিশা যথা, রবিহীন দিন,
অথবা ভোজন পান যথা রস-হীন,
তেমতি মলিন আর দুখদ জীবন
যাবত না পায় নর “সখা” দরশন।
হে সখে! হৃদয়চন্দ্র! হৃদয়-মোহন,
সুচারু মূরতি! সুধা মধুর বচন!
মানস-সরসে তুমি বিকচ কমল,
জীবন বাসরে সদা মিহির বিমল,
ভবরণভূমে তুমি ভীম সেনাপতি,
অনুদ্যম বিষ নাশে পীযুষ মুরতি,
মকর কুম্ভীরপুর্ণ এ হৃদি সাগরে
আছ তুমি মণিমুক্তা রতন আকারে,
এ মনোনন্দনে তুমি কল্পতরু সম,
সংসার-সাগরে তুমি তরি অনুপম,
ধন্য, ধন্য, সেই সাধু সুদী নরগণ,
নিয়ত লভয়ে যারা তব দরশন।
হে সখে! অগণ্য ধন্যবাদ করি দান,
তুমি হে অশেষ গুণ-শকতি-নিধান
সসীম ভাষায় তব শকতি বর্ণন
হয় না, হয় না, কভু হৃদয়-রঞ্জন!

অনন্ত কালের মম ওহে ভালবাসা!
তেঁই এ সুদীন জন ছাড়িল সে আশা[]
তোমার প্রণয়-সুধা সাগর ভিতরে
ডুবিনু তোমায় স্মরি চিরকাল তরে,
ভিন্ন স্থিতিলোপ মম হইল, এখন
তুমি আছ, তেঁই আছি জানুক ভুবন।


  1. গুণবর্ণনের আশা।