সঙ্গ।

যেমন লোকের সেবা করে নরগণ,
সেবিত যেমন জনে হয় অনুক্ষণ,
তেমন হইবে সেই মানব-আচার
কখনো নাহিক কিছু সংশয় ইহার।
অসতের সঙ্গে দোষী হয় সত যত,
সঙ্গদোষে শান্তনব গোহরণে রত,
দেখহ, তাপিত লৌহে পড়িলে জীবন
নাম মাত্র নাহি তার রহে কদাচন।

নলিনী-পাতায় হয় যখন পাতিত
মুকুতা-আকারে মরি হয় সুশোভিত,
যদি পড়ে স্বাতি যোগে শুকুতির মাঝে
অমূল্য মুকুতা হয়ে ভূতলে বিরাজে।
অধম, মধ্যম আর উত্তম ধরম,
সহবাসে অনায়াসে লভয়ে জনম।
কিন্তু, এর মাঝে এক ভেদ এই রয়
সাধু সঙ্গে গুণ তত সহজে না হয়,
যতেক সহজে হয় দোষেতে পতন
ততেক সহজ নহে উন্নতি-সাধন।
দেখ শিলা গিরি’ পরে হয় আরোপিত
বহুল যতনে, কিন্তু সহজে পাতিত।
সুসঙ্গের গুণ কি বা করিব বর্ণন,
পরশ-পরশে হয় আয়স কাঞ্চন।
কুসুমের সনে কীট দেব-শিরে যায়,
অঙ্গার অনলযোগে উজলতা পায়।
যদিও না পাও উপদেশ সাধু হতে
তথাপি সেবিবে তাঁয় সদা বিধিমতে,
যেহেতু সাধুর স্বৈর বচন-নিচয়
শাসন বলিয়া মান্য জেনো অসংশয়।
এহেতু সতের সঙ্গ অতি চিতকর,
সতত ধরহ নর দোষ-রাশি-হর।