হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা/বাল্যবিবাহ

বাল্যবিবাহ।

 এই বাল্য-বিবাহ যে অতি অনিষ্টের মুল তাহা কাহার না বিদিত আছে, এবং এই বাল্য-বিবাহই আমাদিগের হীনাবস্থার এক প্রধান কারণ হইয়াছে, এই বাল্য বিবাহই আমাদিগের দুর্ভাগ্যের সোপান স্বরূপ! হে স্বদেশ হিতৈষী বন্ধুগণ! তোমরা অগ্রে এই বিষম অনিষ্টকর বিষয়টা নষ্ট করিয়া সাধারণের কষ্ট দূর কর, পরে অন্য বিষয়ে হস্তার্পণ করিবেন। আহা! এই বাল্য-বিবাহের যে কত যন্ত্রণা তাহা কে না জানেন, এবং এই বিবাহের নিমিত্ত কাহাকেই বা দগ্ধ হইতে না হয়, এবং এই বঙ্গদেশীয় দিগের মধ্যে কোন ব্যক্তিই বা ইহার প্রতি বিরক্ত না হন। আহা! আমাদিগের দেশে যদি এই বাল্য-বিবাহ প্রচলিত না থাকিত, তাহা হইলে আমাদিগের এদেশ কত সুখজনক হইত তাহা বলা যায় না। পিতা মাতা আপনাদিগের নয়ন তৃপ্ত করণাশয়ে হউক অথবা এই বৃহৎ কর্ম্ম সমাধা করিয়া সুখ স্বচ্ন্দে সংসার যাত্রা নির্ব্বাহ করিবার নিমিত্তই হউক, আপন আপন বাকল বালিকাগণকে অতি অজ্ঞানাবস্থাতেই বিবাহ দিয়া একেবারে চিরকালের নিমিত্ত বিষম বিপদ্গ্রস্ত করিয়া দেন। এই বিবাহ পিতা মাতা প্রভৃতি আত্মীয়গণের কিছু কাল কিঞ্চিৎ নয়ন তৃপ্তিকর হয় বটে, কিন্তু ঐ বর কন্যাগণের একেবারে মাথা খাওয়া হয়, কারণ উহাদিগের অনভিমতে ঐ কার্য্য সম্পন্ন হইয়া থাকে, এবং উভয়ে বয়ঃপ্রাপ্ত হইলে ভাল মন্দ বিবেচনা করিতে যখন সক্ষম হয়,তখন উহারা পরস্পরে দোষ গুণের বিষয় চিন্তা করিয়া অতিশয় বিষাদিত হইয়া চির কাল অতিবাহিত করে,হয়ত বরমূর্থতা ও পান দোষাদিতে মূর্তিমান হইয়া উভয় কুলস্থ বন্ধুগণকে দগ্ধ করিতে থাকেন, নয় ত ঐ কন্যা বরের মনোমত না হওয়া প্রযুক্ত বরই দুঃসহ যন্ত্রণা ভোগ করেন। এইরূপে উভয়ে সমতুল্য না হওয়া প্রযুক্ত পরস্পরের মিত্রভাব হওয়া দূরে থাকুক বরং বিষম বৈরী ভাবই উপস্থিত হইয়া থাকে, এই পূকারে প্রায় সকল গৃহেই দম্পতী কলহ উপস্থিত হইয়া থাকে। আহা! ঐ দম্পতীগণ যদ্যপি আপন মনোমত পতি ও পত্নী লাভ করিত,তবে আর তাহাদিগের সৌভাগ্যের পরিসীমা থাকিত না। আহা! কি অসঙ্গত কার্য্য, যে পিতা মাতার অথবা কোন এক জন আত্মীয়ের অভিমতানুসারেই ঐ কার্য্য নিষ্পন্ন হইয়া থাকে, এবং তাঁহারা কন্যা পাত্রাদির রূপ গুণাদির বিষয়ে সবিশেষ বিবেচনা না করিয়া কেবল তাহারা কি প্রকারে শ্রেষ্ঠ পতি ও সর্ব্ব গুণালঙ্কৃতা পত্নী লাভ করিবে এবং কি প্রকারেই বা আপন অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ বংশে তাহাদিগের বিবাহ দিয়া আত্ম মান গৌরব বৃদ্ধি করিবেন তাহারই উপায় চিন্তা করেন ও দেশ বিদেশে ঘটক প্রেরণ পূর্ব্বক পাত্র কন্যার অন্বেষণ করেন, ঘটকগণ অর্থ লালসায় মিথ্যা ও প্রতারণার দ্বারা তাহাদিগকে বঞ্চনা করিতে প্রবৃত্ত হয়, এবং এই ঘটনাতে কোন কোন স্থানে বিষম বিপত্তি উপস্থিত হইয়া থাকে, ঘটকগণ স্বভাবতই অতি চতুর হয়, চতুরগণ চাতুর্য্য দ্বারা কোন্‌ কার্য্য করিতেই বা অসমর্থ, তাহারা অনায়াসেই উভয় পক্ষকে মু্গ্ধ করিয়া খাঁটির সহিত মেকি ভেঁজাল দিয়া সর্ব্বনাশ ঘটায়। আহা! কি পরিতাপের বিষয়, পিতা মাতা স্বীয় পুত্র কন্যাগণের মতামত গ্রহণ না করিয়া তাহাদিগকে চিরবন্ধন রূপ উদ্বাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেন, এবং তাহাদিগের ভবিষ্যৎ মঙ্গলামঙ্গলের বিষয় চিন্তা না করিয়া কেবল আপন মান গৌরবের উপরই লক্ষ করেন। এই স্থলে বক্তব্য এই যে পরস্পর ঐক্য পূর্ব্বক উদ্বাহ বন্ধনে বদ্ধ হওয়া দূরে থাকুক, যদ্যপি জনক জননী ও অন্যান্য সুহৃদগণ বিশেষ বিবেচনা পূর্ব্বক স্বচক্ষে পাত্র কন্যা দর্শন করিয়া তাহাদিগের স্বভাব ও সৌন্দর্য্যের প্রতি সবিশেষ দৃষ্টি করিয়া তাহাদিগের সমতুল্য পাত্র কন্যাগণের সহিত বিবাহ দেন এবং ঘটকালিরূপ হাড়কালিকর বিষয়টী রহিত করেন, তবে আর আমাদিগের সৌভাগে্যের পরিসীমা থাকে না। পূরেই বলা গিয়াছে যে উভয়ে সর্ব্বাংশে তুল্য না হইলে কখনই কোন বিষয়ে ঐক্য হইবার সম্ভাবনা নাই, দম্পতীর মধ্যে এক জন উত্তম অপর জন অধম হইলে একের প্রতি অন্যের তাচ্ছিল্য করিবার অধিক সম্ভাবনা, অতএব যে স্থলে দম্পতীর মধ্যে একের প্রতি অন্য অবজ্ঞা করিল সে স্থলে কি প্রকারে তাহারা অকৃত্রিম স্নেহে ও যথার্থ প্রণয়ে বদ্ধ হইবে এবং সেই প্রণয় বিরহ স্থলেই বা তাহারা কি প্রকারে আমরণ একতরে সহবাস করিতে সমর্থ হইবে, এবং তাহারা সেই বিষম পাশে বদ্ব হওত যাবৎ জীবন অতি ভীষণ ন্ত্রণা কি প্রকারেই বা সহ্য করিতে সমর্থ হইবে, এই দম্পতীর মধ্যে যদ্যপি স্বামী নিকৃষ্ট ও ভার্য্যা উৎকৃষ্টা হয়, তবে ভার্য্যার আর দুঃখের পরিসীমা থাকে না, যদি স্ত্রী স্বর্গ-বিদ্যাধরী সদৃশ সর্ব্বাঙ্গ সুন্দরী কিন্তু তাহার স্বামী অতিশয় কুরূপ ও বিকলাঙ্গ হয় আথবা নানাবিধ মাদক দ্রব্য সেবনে মত্ত ও বেশ্যাসক্ত হয়, তবে তদ্বণিতা যে কত দূর পরিমাণে সৌভাগ্য শালিনী হয়েন তাহা বলা যায় না, কিন্তু পুরুষ অতি কুৎসিত কদাকার হইয়াও যদ্যপি সৎচরিত্র বু্ধিমান ও সর্ব্ব গুণে গুণবান হয়েন, তবে তিনি পরম রূপাধার যে রতিপতি তদপেক্ষায়ও শোভমান হয়েন, কিন্তু যদ্যপি ভার্য্যা নিকৃষ্ট এবং তাহার স্বামী সর্ব্বাংশে শ্রষ্ঠে হয়েন, তবে সেই স্বামি অপেক্ষা ঐ ভার্য্যেরই মনোবেদনা অধিক হইয়া থাকে, কারণ নারীগণের রূপই বল, সেই রূপ বিহীনা যে নারী সে স্বামির নিকট যে কত দূর পরিমাণে আদরণীয়া হয় তাহা সকলেই জানেন। পুরুষগণ কুরূপ হইয়া বিদ্যা ও জ্ঞান বলে পরম শ্রেষ্ঠত্ব প্রাপ্ত হয়েন, কিন্তু নারীগণের সেরূপ হইবার কোন সম্ভাবনা নাই, আর গুণবতী হইলেই বা কি হইবে, তাহারা পুরুষ জাতির ন্যায় কোন অংশেই তুল্য হইতে সমর্থ নহে। হায়! আমাদিগের দেশে যদ্যপি বিবাহ বিষয়ক এরূপ অসঙ্গত নিয়ম প্রচলিত না থাকিত, তবে যে কত দূর পরিমাণে সুখের বিষয় হইত তাহা বলিবার নহে। স্ত্রী পুরুষ উভয়ে সমতুল্য না হইলে কখনই বিবাহ দেওয়া উচিত নহে, কারণ উভয়ে তুল্য না হইলে কোন প্রকারেই ঐক্য হইবার সম্তাবনা নাই এবং তদ্ব্যতিরেকে প্রণয় সংস্থাপনের আর উপায়ান্তর নাই, কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে পিতা মাতা প্রভৃতি আত্মীয়বর্গেরা এতাদৃশ ঘটনা সমূহ স্বচক্ষে প্রতি গৃহে দর্শন করিয়াও এতদ্বিষয় হইতে নিরস্ত হয়েন না, তাঁহারা প্রাণসম প্রিয়তম স্বীয় তনুজ ও তনুজাগণকে অসম যোগ্য পাত্র কন্যা গণের সহিত বিবাহ দিতে ক্ষান্ত হয়েন না। হায়! কি আক্ষেপের বিষয়, জনক জননীগণ স্বীয় তনয় তনয়াগণের রূপ চরিত্রাদি গোপন পূর্ব্বক তাহাদিগকে পরিণয় পাশে বদ্ধ করেন, এবং তাহারা অগত্যা তাহাতেই সম্মত হয়, কিন্তু যখন বয়ঃপ্রাপ্ত হইয়া ভাল মন্দ বিবেচনা করিতে সমর্থ হয় তখন উভয়ে অতিশয় মনস্তাপ পায়, এবং কেহ কেহ পুনর্ব্বার মনোমত স্ত্রী গ্রহণ করিতে প্রবৃত্ত হয়, কিন্তু ঐ পূর্ব্ব বিবাহিতা নারী একেবারে চির কালের নিমিত্ত বিষম দুঃখ পারাবারে পতিত হয়, ইহার মধ্যে যাঁহারা পরম জ্ঞানী ও বিকার বিহীন হয়েন, তাঁহারা অগত্যা সেই কুরূপা বণিতাতেই সন্তুষ্ট হইয়া সংসার যাত্রা নির্ব্বাহ করিয়া থাকেন, কোন কোন মহাত্মাগণকে স্বীয় কুরূপা কামিনীতেই বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করিতে দেখা যায় বেটে কিন্তু ঐ নারীর পক্ষে উহা উপহাসজনক হয়, সেই নিমিত্ত সে তাহাতে সন্তুষট না হইয়া বরং অতিশয় অনুতাপিত হয়, অতএব বাল্য-বিবাহ যে অতি অনর্থের মূল তাহা পদে পদেই প্রতীয়মান হইতেছে। এই বাল্য বিবাহ নিবারণ না করিলে কোন প্রকারেই আমাদিগের দেশে সুখোন্নতি হইবার আর উপায়ান্তর নাই, এবং এই বাল্য-বিবাহের অভাব না হইলে কখনই দম্পতীর সন্তাব হইবারও স্ভাবনা নাই, এই বাল্য বিবাহ সত্ত আমাদিগের দেশ হইতে বিদ্যাহীনতা যে বিষম দোষ তাহারও নিবারণ হইবে না, এবং এই বাল্য বিবাহের অভাব না হইলে বালিকাগণের অসহ্য বৈধব্য যন্ত্রণা হইতে মুক্ত হইবারও আর দ্বিতীয় উপায় নাই, এবং এই বাল্য বিবাহই বঙ্গদেশীয়গণের দুর্ব্বলতার এক প্রধান কারণ স্বরূপ হইয়াছে। এই বাল্য বিবাহ জন্য কোন কোন পুরুষ যোড়শ বা সপ্তদশ বর্ বয়ঃ প্রাপ্ত না হইতেই পুত্রের পিতা হইয়া বসেন, এবং বিদ্যা হীনতা প্রযুক্ত অর্থ উপার্জ্জন করণে অসমর্থ হইয়া সুত সুতা বনিতা প্রভৃতির ভরণ পোষণের নিমিত্ত লালাইত হয়েন, এবং কোন কোন স্থানে দ্বাদশ বা ত্রয়োদশ বর্ষীয়া মহিলা পুত্রবতী হইয়া বিষম বিপদগ্রস্ত হন, হয় ত প্রসব ক্ষেত্রেই সন্তান সহিত লোকযাত্রা সম্বরণ করিয়া উভয় কুলস্থ আত্মীয় গণকে অপার শোকার্ণরে মগ্ করেন, কেহ বা আপনি পরিত্রাণ পাইয়া প্রাণ সদৃশ সন্তানটীতে বঞ্চিত হইয়া অত্যল্প বয়সেই হৃদয় বিদারক অসহ্য শোকে অস্থির হয়েন, আহা! এই বাল্য বিবাহ চলিত না থাকিলে আর ঐ বালিকাগণকে এতাদৃশ অসহ্য যাতনা ভোগ করিতে হইত না। কিন্তু ইহার মধ্যে যিনি পরম সৌভাগ্য বশতঃ পুত্র সহিত ঐ বিপদ হইতে উদ্ধার হয়েন, তিনিও সম্পূর্ণরূপ সুখিনী হইতে পারেন না, হয় ত প্রসুতী বিষম সুতিকারোগে আক্রান্ত হইয়া অতীব যন্ত্রণা ভোগ করেন, নয় ত সন্তানটী অতিশয় রুগ্ন ও অতিশয় ক্ষীণ হইয়া পিতা মাতার যন্ত্রণা বৃদ্ধি করে, আর অল্প বয়স্কা বশতঃ মাতা সন্তানের লালন পালনে অসমর্থা হইয়া বিষম কষ্ট ভোগ করেন, অতএব এই বাল্য বিবাহ নিবারণ করা যে সর্ব্বতোভাবে বিধেয তাহার আর সন্দেহ নাই।

 হে সর্ব্বজন হিতৈী বিদ্যোৎসাহী বন্ধুগণ! তোমরা যত্ন পূর্ব্বক সকল বিষয়ের প্রতিবন্ধক ও বিদ্যা বিষয়ের বিষম কণ্টক স্বরূপ এই বাল্য-বিবাহ রূপ অত্যাচার নষ্ট কর, এই বাল্য-বিবাহ সত্তে স্ত্রী-বিদ্যার উন্নতি সাধনেই বা কি প্রকারে সমর্থ হইবেন এবং কি প্রকারেই বা তদ্বিষয়ে কৃতকার্য্য হইতে পারিবেন। বালিকাগণ ত নবম বা দশম বর্ষ বয়ঃক্রম কালে বিবাহিতা হইয়া একাদশ বা দ্বাদশ বর্ষ বয়ঃপ্রাপ্ত না হইতেই শ্বশুর সদনে গমন পূর্ব্বক সংসার ধর্ম্মে নিযুক্ত হয়, তবে কি প্রকারে তাহাদিগের বিদ্যা ও বুদ্ধির উন্নতি হইবে, দশম বর্ষ পর্য্যন্ত বাল্যাবস্থা থাকে সুতরাং তদবস্থায় তাহাদিগের কোন বিষয়েরই বিশেষ জ্ঞান জন্মায় না, তবে তৎকাল পর্য্যন্ত শিক্ষা করিয়া তাহারা কি প্রকারে সর্ব্ব বিষয়ে নিপুণতা ও বিদ্যা বিষয়ে বিশুদ্ধ জ্ঞান লাভ করিতে সমর্থ হইবে, সেই হেতু এই বাল্য বিবাহের পরিবর্ত্তন না হইলে শিক্ষা বিষয়েও যত্ন বিফল হইবে।

 অতি পুরাকালে আমাদিগের দেশে এই অনিষ্টকর বিবাহ প্রচলিত ছিল না, এবং তাৎকালিক মহিলাগণও আমাদিগের মত বিদ্যা রত্ন বিহীনা হইয়া এই মহীমওলে কেবল বৃথা কার্য্যে রত থাকিতেন না, পুরাণ ও ইতিহাস গ্রন্থে ইহার ভূরি ভূরি প্রমাণ প্রাপ্ত হওয়া যায়, অতএব এক্ষণেও পুরাকালের ন্যায় সকলে আত্মজাগণকে অতি যত্ন পূর্ব্বক নানা বিষয়ে সুশিক্ষিতা করিয়া তাহাদিগের রূপ গুণাদির প্রতি বিশেষ দৃষ্টি করত তুল্য পাত্রে অর্ণ করিলে কতই সুখের বিষয় হয়, এবং মহিলাগণও এই ঘৃণিত অবস্থা হইতে মুক্ত হইয়া এই মহীতলে পরম সুখে অবস্থিতি করেন, কিন্তু অন্যান্য দেশীয়গণের ন্যায় অস্মদ্শীয়গণের বিবাহ নিয়ম কখনই সমান হইতে পারিবে না, কারণ এই দেশ অন্যান্য দেশ অপেক্ষা উষ্-প্রধান সুতরাং এস্থানবাসিরা অন্য দেশীয়গণ অপেক্ষা অল্প বয়সেই যৌবন প্রাপ্ত হয়, ইহাদিগের বিবাহও অন্য দেশীয়গণ অপেক্ষা অল্প বয়সেই দিতে হয়, সেই নিমিত্ত পুত্রগণের বিংশতি বৎসর বয়সে এবং কন্যাগণের ত্রয়োদশ বা চতুর্দ্দশ বৎসর বয়সকালে বিবাহ দেওয়া বিধেয়, তৎকালে কন্যাগণ বাল্যাবস্থা হইতে উত্তীর্ণ হইয়া তরণাবস্থা প্রাপ্ত হওত ভাল মন্দ বিবেচনা করিতে সমর্থ হয়, এবং বিদ্যা বিষয়ে কি অন্যান্য সাংসারিক কার্য্য বিষয়ে কিঞ্চিৎ পরিমাণে জ্ঞানোদয় হয়, আর তৎকালে শ্বশুরালয়ে গমন করিয়াও বালিকাগণের ন্যায় অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করিতে হয় না।