১৯০৫ সালে বাংলা/ইমার্সন লীলা

ইমার্সন লীলা।

 তখন কেম্পের এজেহার গৃহীত হইল। ম্যাজিষ্ট্রেট সুরেন্দ্রনাথকে বলিলেন, “আপনাদিগের ব্যবহার কি লজ্জাজনক নহে? তাহাতে সুরেন্দ্রবাবু কহিলেন, আমি এরূপ ভাষা ব্যবহারের প্রতিবাদ করি।” ম্যাজিষ্ট্রেটের মুখে এরূপ ভাষা শোভা পায় না। ম্যাজিষ্ট্রেট বলিলেন, আপনি আদালতের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করিতেছেন, সুতরাং আপনাকে অভিযুক্ত করিতেছি।

 সুরেন্দ্র বাবু। তাহা হইলে আপনি ইহার বিচার করিতে পারেন না।

 ম্যাজিষ্ট্রেট। আমি আমার কর্ত্তব্য বেশ বুঝি। ইষ্টার পর্ব্বের ছুটির সময়ে, ম্যাজিষ্ট্রেটের গৃহে আদালতের প্রতি অবজ্ঞা এই ভাবে গড়াইতে লাগিল। কাণ্ড দেখিয়া হুজুরের বন্ধুর আর এক হুজুর সুরেন্দ্র বাবুকে বলিলেন, “ক্ষমা প্রার্থনা করিয়া ব্যাপারটা মিটাইয়া ফেলূন” সুরেন্দ্র বাবু বলিলেন, “আমি তাহাতে প্রস্তুত নহি।”

 ম্যাজিষ্ট্রেট। আমি আপনাকে আর একবার সময় দিতেছি। আপনি আপনার কথার প্রত্যাহার করুন।

 সুরেন্দ্র বাবু। আমি কোন অন্যায় কথা বলি নাই, সুতরাং কোন কথারই প্রত্যাহার করিব না। আদালতের অবজ্ঞার জন্য সুরেন্দ্রবাবুর দুই শত টাকা জরিমানা হইল।

গ্রেপ্তারের পরিশিষ্ট।

 তখন সুরেন্দ্রবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগকারী কেম্প সাহেবের এজেহার গৃহীত হইতে লাগিল। এই এজেহারের সহিত সরকারি প্রকাশিত এজেহার কিরূপ মিলিয়াছে, তাহা পাঠকবর্গ বুঝিতেই পারিতেছেন। ১১৮ ধারার মামলায় বিনা ওয়ারেণ্টে পুলিশ গ্রেপ্তার করিতে পারে না, তথাপি সুরেন্দ্রবাবু অবরুদ্ধ ও দণ্ডিত হইলেন। দুইশত টাকা জরিমানা অথবা তাহার পরিবর্ত্তে একমাস কারাবাসের অনুমতি হইল।