১৯০৫ সালে বাংলা/ভবানীপুরে দাঙ্গা



ভবানীপুরের দাঙ্গা।

সেন ও শ্রীমান্ সুবোধচন্দ্র ঘোষ এই তিন জন যুবক বিদেশী দ্রব্যের বিক্রয়ে বাধা দেওয়া অপরাধে পুলিশ দ্বারা প্রহৃত ও অভিযুক্ত হন। শেষোক্ত দুইজন অতি তরুণ বয়স্ক, কলেজের ছাত্র। সুরথ কুমারের একমাস কঠোর কারাবাস ও দেড়শত টাকা জরিমানা, এবং ছাত্র দুইজনের এক শত টাকা করিয়া অর্থদণ্ড হইল।

 প্রথম আদালতের বিচারের বিরুদ্ধে চব্বিশ পরগণার জজের নিকট আপীল হয়। জজ সুরথের কারাদণ্ড অক্ষুণ্ণ রাখেন তবে জরিমানার টাকার পরিমাণ দেড়শতের পরিবর্ত্তে একশত স্থির করিয়া দেন। হাইকোর্টের চরম মীমাংসার যে কয়দিন [১৭ দিন] কারাদণ্ড ভোগ হইয়াছে তাহাই যথেষ্ট স্থির হইল। অর্থদণ্ড রহিত হইল, সুরথ বাবুর দোষ সাব্যস্তই রহিল, এক বৎসর মুচলেখার আদেশও পূর্ব্ববৎ বজায় রহিল।

 ছাত্রদ্বয়ের আপীল না-মঞ্জুর হইয়াছিল। সুরথ বাবুকে সম্মান নিদর্শন রজত পদক প্রদান করা হইয়াছিল, এবং ছাত্রদ্বয়ের নিকট রৌপ্য পরিদোলক লকেট প্রেরিত হইয়ছিল।



নোয়াখালি।

 নোয়াখালিতে একজন চতুর ব্যক্তি স্বদেশবৎসল সাজিয়া যুবক দিগকে বলে “বন্দেমাতরম্” আমাদিগের ইষ্ট মন্ত্র, সুতরাং গুরুদত্ত  ইষ্ট মন্ত্রের ন্যায় মনে রাখিতে হয়, মুখে আনিতে নাই। নোয়াখালির নবীন জমীদার বাবু নগেন্দ্রনাথ গুহরায় বয়সে বালক হইলেও উত্তর করেন মুমূর্ষুকালে ইষ্টমন্ত্র রাম নাম চীৎকার করিয়া বলিতে হয়। আমরা যে মরণাপন্ন, অতি চীৎকার করিয়া না বলিলে আমাদিগের মর্ম্মস্থলে ইষ্টমন্ত্র প্রবেশ করান সম্ভবপর নহে। শুনা যায় কোর্ট অফ ওয়ার্ডের কর্ত্তারা ইহাকে স্বদেশী আন্দোলন ত্যাগ করিতে বলেন, ইনি স্বীকৃত হন নাই। ইনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে পারেন নাই।

 নগেন্দ্র বাবুকে সম্মানের নিদর্শন “বন্দেমাতরম্” রজত-বন্ধনী [বা ব্রুচ] প্রদত্ত হয়।