১৯০৫ সালে বাংলা/ভবানীপুরে সভা
জননী জন্মভূমির সেবায় প্রবৃত্ত হইয়া যাঁহাাঁ কর্ত্তৃপক্ষের নিকটে লাঞ্ছিত হইয়াছেন, সেই সকল মহাত্মাদিগের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করিবার জন্য ১৮ই ফেব্রুয়ারি ৬ই ফাল্গুন রবিবার কলিকাতা ভবানীপুরের সাউথ সুবাবরন স্কুলে সর্ব্ব শ্রেণীর হিন্দু মুসলমান সমবেত হইয়া একটী সভা করেন। সে সময় অবিরাম বৃষ্টিপাত হইতেছিল, তথাপি সেই দুর্য্যোগেও সভায় যোগদান করিতে কেহই পশ্চাৎপদ হন নাই। বাবু চারুচন্দ্র ঘোষ বি-এল্, মহাশয়ের প্রস্তাব এবং পণ্ডিত শিবনাথ শাস্ত্রী এম্-এ, মহাশয়ের সমর্থনে কলিকাতা হাইকোর্টের সরকারী উকীল শ্রীযুক্ত শ্রীশচন্দ্র চৌধুরী সভাপতির আসন গ্রহণ করেন। সভাপতি মহাশয় প্রথমে একটা হৃদয়গ্রাহী বক্তৃতা করিলে ভবানীপুরের স্বদেশসেবক সমিতি কতিপয় স্বদেশ সঙ্গীত গাইয়া সমাগত জনসমূহকে সম্মোহিত করেন। মুন্সী দেদার বক্স, মৌলবী আবুল হোসেন, পণ্ডিত কালীপ্রসন্ন কাব্যবিশারদ, গীম্পতি রায় চৌধুরী কাব্যতীর্থ প্রভৃতি প্রসিদ্ধ বক্তৃগণ সভায় বক্তৃতা করেন। অত:পর সভাপতি মহাশয় স্বদেশের হিতসাধন বিষয়ে বক্তৃতা করেন গ্রাও থিয়েটারের সভায় ভট্টপল্লীর শ্রীযুক্ত ভূতনাথ ভট্টাচার্য্য উপস্থিত হইতে পারেন নাই, এই সভায় তিনি উপস্থিত হন এবং তাহার স্বদেশ হিতৈষণার জন্য তাঁহাকে পদক ও প্রশংসাপত্র প্রদত্ত হয়। পণ্ডিত শিবনাথ শাস্ত্রী তাহাকে পুষ্পমাল্যে ভূষিত করেন। বাবু সুরেন্দ্রনাথ মল্লিক বি, এল, মহাশয়ের প্রস্তাব ও ভাক্তার কৈলাস চন্দ্র মুখোপাধ্যায় এম্, বি, মহাশয়ের অনুমোদন ক্রমে সভাপতির ধন্যবাদ করা হইলে সভাভঙ্গ হয়।
ভবানীপুরের স্বদেশে সেবক সম্প্রদায় দ্বারা যে সকল গান গীত হইয়াছিল এবং তদ্ভিন্ন অন্যান্য দুই একটী ক্ষুদ্র সভায় মনোমোহন বাবু নবীনচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাব্য বিশারদের ষে কয়েকটা গান গাওয়া হয় সে সমস্ত গানই “স্বদেশ সঙ্গীত” নামক পুস্তকে আছে। সুতরাং তাহার পুনঃ প্রকাশ আবশ্যক বোধ হইল না।