আজাদী সৈনিকের ডায়েরী/লেগ্যিতে বোমাবর্ষণ
৩১শে মার্চ ১৯৪৫:
কর্ণেল সেহগলের আদেশ অনুসারে রেজিমেণ্টের হেড্কোয়ার্টার লেগ্যিতে আসিয়াছে।
সাইরেন্ বাজিল। বিমান আক্রমণের সতর্কতা। একটি পরিখার মধ্যে বসিয়া আছি। মাথার উপরে বারোখানি বৃটিশ বিমান দেখা গেল। তারপর আরম্ভ হইল বোমা বর্ষণ। অবিরাম গুম্-গুম্ গুম্-গুম্। তিন ঘণ্টা ধরিয়া এইরূপ চলিল। বিমানের শব্দ দূর আকাশে মিলাইয়া গেলে ট্রেঞ্চ হইতে উঠিয়া দেখিলাম—আমাদের ক্ষতি অতি সামান্যই।
৩রা এপ্রিল ১৯৪৫:
আজ আমাদের উপর আক্রমণ চলিয়াছে। কামানের গোলা আসিয়া পড়িতেছে; কর্ণভেদী শব্দে আকাশ বাতাস মুখরিত। আমরাও তাহাদের উত্তর দিতেছি।
আমাদের পিছনের ২নং ঘাটি শত্রু দখল করিয়াছে।
কর্ণেল সেহগল্ ১নং ব্যাটেলিয়নকে আদেশ দিলেন একটি রিজার্ভ দল ঠিক রাখিতে।
৪ঠা এপ্রিল ১৯৪৫:
আজও মধ্যে মধ্যে গোলা পড়িতেছে। আমরা অটল আছি। কিন্তু কতকগুলি ভীরু সৈনিক বিশ্বাসঘাতকতা করিয়াছে; ১নং ব্যাটেলিয়নের দুটি প্লেটুন্ শত্রু পক্ষে চলিয়া গিয়াছে।
কর্ণেল সেহগল ১নং ব্যাটেলিয়ন্কে আদেশ দিলেন শত্রুকে আক্রমণ করিয়া আমাদের নষ্ট ঘাঁটি পুনরধিকার করিবার জন্য।
এক দল সেনা বিপক্ষের উপর ঝাঁপাইয়া পড়িয়াছে। গুলিবর্ষণের শব্দ শুনিতেছি। প্রায় অর্দ্ধ ঘণ্টা পরেই সংবাদ আসিল—আমাদের আক্রমণ সফল হইয়াছে—ঘাঁটি আবার আমাদেরই হাতে। এই সৈনিকেরা অসীম সাহস ও বীরত্ব দেখাইয়াছে।
আজ লেফট্ন্যাণ্ট খাজিন শা পলায়ন করিয়াছে। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়।
টেলিফোন যোগে ডিভিসনের হেড্ কোয়ার্টারের সহিত সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা বৃথা হইল।
কর্ণেল সেহগল্ আদেশ দিলেন আমাদের পোপা পাহাড়ে যাইবার জন্য।