আনন্দমঠ (১৮৮৩)/দ্বিতীয় খণ্ড/চতুর্থ পরিচ্ছেদ
চতুর্থ পরিচ্ছেদ।
ভবানন্দ গোস্বামী একদা রাজনগরে গিয়া উপস্থিত হইলেন। প্রশস্ত রাজপথ পরিত্যাগ করিয়া একটা অন্ধকার গলির ভিতর প্রবেশ করিলেন। গলির দুই পার্শ্বে উচ্চ অট্টালিকাশ্রেণী; সূর্য্যদেব মধ্যাহ্ণে এক একবার গলির ভিতর উকি মারেন মাত্র। তৎপরে অন্ধকারেরই অধিকার। গলির পাশের একটী দোতালা বাড়ীতে, ভবানন্দ ঠাকুর প্রবেশ করিলেন। নিম্নতলে একটী ঘরে, যেখানে অর্দ্ধবয়স্কা একটী স্ত্রীলোক পাক করিতেছিল, সেই খানে গিয়া ভবানন্দ মহাপ্রভু দর্শন দিলেন। স্ত্রীলোকটি অর্দ্ধবয়স্কা মোটা সোটা কালো কোলো, ঠোঁট পরা, কপালে উল্কি, সীমস্ত প্রদেশে কেশদাম চূড়াকারে শোভা করিতেছে। ঠন্ ঠন্ করিয়া হাঁড়ির কানায় ভাতের কাটি বাজিতেছে, ফর ফর করিয়া অলকদামের কেশগুচ্ছ উড়িতেছে, গল গল করিয়া মাগী আপনা আপনি বকিতেছে, আর তার মুখভঙ্গীতে তাহার মাথার চূড়ার নানাপ্রকার টলুনি টালুনির বিকাশ হইতেছে। এমন সময়ে ভবানন্দ মহাপ্রভু গৃহমধ্যে প্রবেশ করিয়া বলিলেনঃ—
“ঠাকুরুণ দিদি প্রাতঃপ্রণাম!”
ঠাকুরুণ দিদি ভবানন্দকে দেখিয়া, শশব্যস্তে বস্ত্রাদি সামলাইতে লাগিলেন। মস্তকের মোহন চূড়া খুলিয়া ফেলিবেন ইচ্ছা ছিল, কিন্তু সুবিধা হইল না, কেন না সকড়ি হাত। নিষেকমসৃণ সেই চিকুরজাল—হায়! তাহাতে পূজার সময় একটী বকফুল পড়িয়া- ছিল!—বস্ত্রাঞ্চলে ঢাকিতে যত্ন করিলেন; বস্ত্রাঞ্চল ঢাকিতে সক্ষম হইল না, কেন না ঠাকুরুণটী এক খানি পাঁচ হাত কাপড় পরিয়া ছিলেন। সেই পাঁচ হাত কাপড় প্রথমে গুরুভারপ্রণত উদরপ্রদেশ বেষ্টন করিয়া আসিতে প্রায় নিঃশেষ হইয়া পড়িয়াছিল, তার পরে দুঃসহ ভারগ্রস্ত হৃদয়মণ্ডলেরও কিছু আবরু পর্দ্দা রক্ষা করিতে হইয়াছে। শেষে ঘাড়ে পৌঁছিয়া বস্ত্রাঞ্চল জবাব দিল। কাণের উপর উঠিয়া বলিল আর যাইতে পারি না। অগত্যা পরম ব্রীড়াবতী গৌরী ঠাকুরাণী কথিত বস্ত্রাঞ্চলকে কাণের কাছে ধরিয়া রাখিলেন। এবং ভবিষ্যতে আট হাত কাপড় কিনিবার জন্য মনে মনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইয়া বলিলেন “কে গোঁসাই ঠাকুর? এস এস! আমায় আবার প্রাতঃপ্রণাম কেন ভাই?”
ভব। তুমি ঠান্দিদি যে!
গৌরী। আদর করে বল বলিয়া। তোমরা হলে গোঁসাই মনুষ, দেবতা। তা করেছ করেছ, বেঁচে থাক। তা করলেও করতে পার, হাজার হোক আমি বয়সে বড়।
এখন ভবানন্দের অপেক্ষায় গৌরী দেবী মহাশয়া বছর পঁচিশের বড়, কিন্তু সুচতুর ভবানন্দ উত্তর করিলেন, “সে কি ঠান্দিদি! রসের মানুষ দেখে ঠান্দিদি বলি। নইলে যখন হিসাব হয়েছিল, তুমি আমার চেয়ে ছয় বছরের ছোট হইয়াছিলে মনে নাই? আমাদের বৈষ্ণবের সব রকম আছে জান, আমার মনে মনে ইচ্ছা মঠধারী ব্রহ্মচারীকে বলিয়া তোমায় সাঙ্গা করে ফেলি। সেই কথাটাই বল্তে এসেছি।”
গৌরী। সে কি কথা ছি! অমন কথা কি বলতে আছে! আমরা হলাম বিধবা।
ভব। তবে সাঙ্গা হবে না কি?
গৌরী। তা ভাই, যা জান তা কর। তোমরা হলে পণ্ডিত, আমরা মেয়ে মানুষ কি বুঝি? তা, কবে হবে?
ভবানন্দ অতি কষ্টে হাস্য সম্বরণ করিয়া বলিলেন “সেই ব্রহ্মচারীটার সঙ্গে একবার দেখা হইলেই হয়। আর—সে কেমন আছে?”
গৌরী বিষণ্ণ হইল। মনে মনে সন্দেহ করিল সাঙ্গার কথাটা তবে বুঝি তামাসা। বলিল “আছে আর কেমন, যেমন থাকে।”
ভব। তুমি গিয়া একবার দেখিয়া আইস কেমন আছে, বলিয়া আইস আমি আসিয়াছি একবার সাক্ষাৎ করিব।
গৌরী দেবী তখন ভাতের কাটি ফেলিয়া, হাত ধুইয়া বড় বড় ধাপের সিড়ি ভাঙ্গিয়া, দোতালার উপর উঠিতে লাগিল। একটা ঘরে ছেঁড়া মাদুরের উপর বসিয়া, এক অপূর্ব্ব সুন্দরী। কিন্তু সৌন্দর্য্যের উপর, একটা ঘোরতর ছায়া আছে। মধ্যাহ্নে কুলপরিপ্লাবিনী প্রসন্নসলিলা বিপুলজলকল্লোলিনী স্রোতস্বতীর বক্ষের উপর অতি নিবিড় মেঘের ছায়ার ন্যায় কিসের ছায়া আছে। নদীহৃদয়ে তরঙ্গ বিক্ষিপ্ত হইতেছে, তীরে কুসুমিত তরুকুল বায়ুভরে হেলিতেছে, ঘন পুষ্পভরে নমিতেছে, অট্টালিকাশ্রেণীও শোভিতেছে। তরণীশ্রেণী-তাড়নে জল আন্দোলিত হইতেছে। কাল মধ্যাহ্ন, তবু সেই কাদম্বিনীনিবিড় কালো ছায়ায় সকল শোভাই কালিমাময়। এও তাই। সেই পূর্ব্বের মত চারু চিক্কণ চঞ্চল নিবিড় অলকদাম, পূর্ব্বের মত সেই প্রশস্ত পরিপূর্ণ ললাটভূমে পূর্ব্বমত অতুল তুলিকালিখিত ভ্রূধনু, পূর্ব্বের মত বিস্ফারিত সজল উজ্জ্বল কৃষ্ণতার বৃহচ্চক্ষু, তত কটাক্ষময় নয়, তত লোলতা নাই, কিছু নম্র। অধরে তেমনি রাগ রঙ্গ, হৃদয় তেমনি শ্বাসানুগামী পূর্ণতায় ঢল ঢল, বাহু তেমনি বন্যলতাদুষ্প্রাপ্য কোমলতাযুক্ত। কিন্তু আজ সে দীপ্তি নাই, সে উজ্জ্বলতা নাই, সে প্রখরতা নাই, সে চঞ্চলতা নাই, সে রস নাই। বলিতে কি, বুঝি সে যৌবন নাই। আছে কেবল সে সৌন্দর্য্য আর সে মাধুর্য্য। নূতন হইয়াছে ধৈর্য্য গাম্ভীর্য্য। ইহাকে পূর্ব্বে দেখিলে মনে হইত, মনুষ্যলোকে অতুলনীয়া সুন্দরী, এখন দেখিলে বোধ হয়, ইনি দেবলোকে শাপগ্রস্তা দেবী। ইহার চারি পার্শ্বে দুই তিন খানা তুলটের পুথি পড়িয়া আছে। দেওয়ালের গায়ে হরিনামের মালা টাঙ্গান আছে, আর মধ্যে মধ্যে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার পট, কালীয় দমন, নবনারী কুঞ্জর, বস্ত্রহরণ, গোবর্দ্ধনধারণ প্রভৃতি ব্রজলীলার চিত্র রঞ্জিত আছে। চিত্রগুলির নীচে লেখা আছে, “চিত্র না বিচিত্র?” সেই গৃহমধ্যে ভবানন্দ প্রবেশ করিলেন।
ভবানন্দ জিজ্ঞাসা করিলেন, “কেমন কল্যাণি, শারীরিক মঙ্গল ত?”
কল্যাণী। এ প্রশ্ন কি আপনি ত্যাগ করিবেন না? আমার শারীরিক মঙ্গলে আপনারই কি ইষ্ট, আর আমারই বা কি ইষ্ট?
ভব। যে বৃক্ষ রোপণ করে, সে তাহাতে নিত্য জল দেয়। গাছ বাড়িলেই তাহার সুখ। তোমার মৃত দেহে আমি জীবন রোপণ করিয়াছিলাম, বাড়িতেছে কি না, জিজ্ঞাসা করিব না কেন?
ক। বিষ বৃক্ষের কি ক্ষয়?
ভব। জীবন কি বিষ?
ক। না হলে অমৃতসিঞ্চনে আমি তাহা ধ্বংস করিতে চাহিয়া ছিলাম কেন?
ভব। সে অনেক দিন জিজ্ঞাসা করিব মনে ছিল, সাহস করিয়া জিজ্ঞাসা করিতে পারি নাই। কে তোমার জীবন বিষময় করিয়াছিল?
কল্যাণী স্থিরভাবে উত্তর করিলেন, “আমার জীবন কেহ বিষময় করে নাই। জীবনই বিষময়। আমার জীবন বিষময়, আপনার জীবন বিষময়, সকলের জীবন বিষময়।”
ভব। সত্য কল্যাণি, আমার জীবন বিষময়। যে দিন অবধি―তোমার ব্যাকরণ শেষ হইয়াছে?
ক। সকলই শেষ হইয়াছে। কেবল স্ত্রীত্য শেষ হয় নাই।
ভব। অভিধান?
ক। স্বর্গ বর্গ বুঝিতে পারিলাম না। আপনি বুঝাইয়া দিতে পারেন?
ভব। যাহা আপনি বুঝি না, তাহা বুঝাইতে পারি না। সাহিত্য পূর্ব্বমত পড়া হইতেছে?
ক। পূর্ব্বাপর বুঝি না। কুমারসম্ভব পরিত্যাগ করিয়া হিতোপদেশ পড়িতেছি।
ভব। কেন কল্যাণি?
কল্যাণী। কুমারে দেবচরিত্র, হিতোপদেশে পশুচরিত্র।
ভব। দেবচরিত্র ছাড়িয়া, পশুচরিত্রে এ অনুরাগ কেন?
ক। বিধিলিপি। আমার স্বামীর সম্বাদ কি প্রভু?
ভব। বার বার সে সম্বাদ কেন জিজ্ঞাসা কর? তিনি ত তোমার পক্ষে মৃত।
ক। আমি তার পক্ষে মৃত, তিনি আমার পক্ষে নন।
ভব। তিনি তোমার পক্ষে মৃতবৎ হইবেন বলিয়াই ত তুমি মরিলে। বার বার সে কথা কেন কল্যাণি?
ক। মরিলে কি সম্বন্ধ যায়? তিনি কেমন আছেন?
ভব। ভাল আছেন।
ক। কোথায় আছেন? পদচিহ্নে?
ভব। সেই খানেই আছেন।
ক। কি কাজ করিতেছেন?
ভব। যাহা করিতেছিলেন। দুর্গনির্ম্মাণ, অস্ত্রনির্ম্মাণ। তাঁহারই নির্ম্মিত অস্ত্রে সহস্র সহস্র সন্তান সজ্জিত হইয়াছে। তাঁহার কল্যাণে কামান, বন্দুক, গোলা, গুলি, বারুদের আমাদের আর অভাব নাই। সন্তানমধ্যে তিনিই শ্রেষ্ঠ। তিনি আমাদিগের মহৎ উপকার করিতেছেন। তিনি আমাদিগের দক্ষিণ বাহু।
ক। আমি প্রাণত্যাগ না করিলে কি এত হইত? যার বুকে কাদা পোরা কলসী বাঁধা সে কি ভবসমুদ্রে সাঁতার দিতে পারে? যার পায়ে লোহার শিকল সে কি দৌড়ায়? কেন সন্ন্যাসী তুমি এ ছার জীবন রাখিয়াছিলে?
ভব। স্ত্রী সহধর্ম্মিণী, ধর্ম্মের সহায়।
ক। ছোটা ছোট ধর্ম্মে। বড় বড় ধর্ম্মে কণ্টক। আমি বিষকণ্টকের দ্বারা তাঁহার অধর্ম্মকণ্টক উদ্ধৃত করিয়াছিলাম। ছি! দুরাচার পামর ব্রহ্মচারী! এ প্রাণ তুমি ফিরাইয়া দিলে কেন?
ভব। ভাল, যা দিয়াছি তা না হয় আমারই আছে। কল্যাণি! যে প্রাণ তোমায় দিয়াছি, তা কি তুমি আমায় দিতে পার?
ক। আপনি কিছু সম্বাদ রাখেন কি, আমার সুকুমারী কেমন আছে?
ভব। অনেক দিন সেসম্বাদ পাই নাই। জীবানন্দ অনেক দিন সে দিকে যান নাই।
ক। সে সম্বাদ কি আমায় আনাইয়া দিতে পারেন না? স্বামীই আমার ত্যজ্য, বাঁচিলাম ত কন্যা কেন ত্যাগ করিব? এখনও সুকুমারীকে পাইলে এ জীবনে কিছু সুখ সম্ভাবিত হয়। কিন্তু আমার জন্য আপনি কেন এত করিবেন?
ভব। করিব কল্যাণি। তোমার কন্যা অনিয়া দিব। কিন্তু তার পর?
ক। তার পর কি ঠাকুর?
ভব। স্বামী?
ক। ইচ্ছা পূর্ব্বক ত্যাগ করিয়াছি।
ভব। যদি তার ব্রত সম্পূর্ণ হয়?
ক। তবে তাঁরই হইব। আমি যে বাঁচিয়া আছি তিনি কি জানেন?
ভব। না।
ক। আপনার সঙ্গে কি তাঁহার সাক্ষাৎ হয় না?
ভব। হয়।
ক। আমার কথা কিছু বলেন না?
ভব। না, যে স্ত্রী মরিয়া গিয়াছে তাহার সঙ্গে স্বামীর আর সম্বন্ধ কি?
ক। কি বলিতেছেন?
ভব। তুমি আবার বিবাহ করিতে পার, তোমার পুনর্জ্জন্ম হইয়াছে।
ক। আমার কন্যা আনিয়া দাও।
ভব। দিব, তুমি আবার বিবাহ করিতে পার।
ক। তোমার সঙ্গে নাকি?
ভব। বিবাহ করিবে?
ক। তোমার সঙ্গে নাকি?
ভব। যদি তাই হয়?
ক। সস্তানধর্ম্ম কোথায় থাকিবে?
ভব। অতল জলে।
ক। পরকাল?
ভব। অতল জলে।
ক। মহাব্রত? এই ভবানন্দ নাম?
ভব। অতল জলে।
ক। কিসের জন্য এসব অতল জলে ডুবাইবে?
ভব। তোমার জন্য। দেখ, মনুষ্য হউন, ঋষি হউন, সিদ্ধ হউন, দেবতা হউন, চিত্ত অবশ; সন্তানধর্ম্ম আমার প্রাণ, কিন্তু আজ প্রথম বলি তুমিই আমার প্রাণাধিক প্রাণ। যে দিন তোমায় প্রাণদান করিয়াছিলাম, সেই দিন হইতে আমি তোমার পাদমূলে বিক্রীত। আমি জানিতাম না, যে সংসারে এ রূপরাশি আছে। এমন রূপরাশি আমি কখন চক্ষে দেখিব জানিলে, কখন সন্তানধর্ম্ম গ্রহণ করিতাম না। এ ধর্ম্ম এ আগুনে পুড়িয়া ছাই হয়। ধর্ম্ম পুড়িয়া গিয়াছে, প্রাণ আছে। আজি চারি বৎসর প্রাণও পুড়িতেছে, আর থাকে না! দাহ! কল্যাণি দাহ! জ্বালা! কিন্তু জ্বলিবে যে ইন্ধন তাহা আর নাই। প্রাণ যায়। চারি বৎসর সহ্য করিয়াছি আর পারিলাম না। তুমি আমার হইবে?
ক। তোমারই মুখে শুনিয়াছি যে সন্তানধর্ম্মের এই এক নিয়ম যে, যে ইন্দ্রিয়পরবশ হয়, তার প্রায়শ্চিত্ত মৃত্যু। একথা কি সত্য?
ভব। এ কথা সত্য।
ক। তবে তোমার প্রায়শ্চিত্ত মৃত্যু।
ভব। আমার একমাত্র প্রায়শ্চিত্ত মৃত্যু।
ক। আমি তোমার মনস্কামনা সিদ্ধ করিলে, তুমি মরিবে?
ভব। নিশ্চিত মরিব।
ক। আর যদি মনস্কামনা সিদ্ধ না করি?
ভব। তথাপি মৃত্যু আমার প্রায়শ্চিত্ত; কেন না চিত্ত আমার ইন্দ্রিয়ের বশ হইয়াছে।
ক। আমি তোমার মনস্কামনা সিদ্ধ করিব না। তুবি কবে মরিবে?
ভব। আগামী যুদ্ধে।
ক। তবে তুমি বিদায় হও। আমার কন্যা পাঠাইয়া দিবে কি?
ভবানন্দ সাশ্রুলোচনে বলিল, “দিব। আমি মরিয়া গেলে আমায় মনে রাখিবে কি?”
কল্যাণী বলিল, “রাখিব। ব্রতচ্যুত অধর্ম্মী বলিয়া মনে রাখিব।”
ভবানন্দ বিদায় হইল, কল্যাণী পুথি পড়িতে বসিল।