ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ/খৃষ্টধর্ম্ম সম্বন্ধে বারাণসীর তত্ত্বজ্ঞানীদের অভিপ্রায়
খৃষ্টধর্ম্ম সম্বন্ধে বারাণসীর তত্ত্বজ্ঞানীদের অভিপ্রায়।
বারাণসীয় তত্ত্বজ্ঞানীরা বলিলেনঃ—“যদি তোমরা খৃষ্টধর্ম্মাবলম্বী হও,—তোমরা যাহা পাইয়াছ তাহাই সযত্নে রক্ষা কর। তাহার ওদিকে আর যাইও না। খৃষ্টধর্ম্ম একটি চমৎকার আদর্শ—বহুশতাব্দী হইতে ইহা পাশ্চত্যদিগের ঠিক্ উপযোগী হইয়া রহিয়াছে, এবং ইহার মূলে সত্য অবস্থিত। তোমরা খৃষ্টকে পাইয়া একজন দেব-প্রতিম গুরুকে পাইয়াছ—এমন একটি গুরু যিনি চিরকালই জীবিত আছেন;—কেন না, এ জগতে মৃত বলিয়া কিছুই নাই; তিনি তোমাদের “মুখ্য পথ ও জীবন”; এবং মৃতেরা তাঁহাতে যে আশা স্থাপন করে সে আশা হইতে তাহারা বঞ্চিত হইবে না।
কিন্তু খৃষ্টধর্ম্মের যদি কোন বিশেষ মত, “যে অক্ষর প্রাণঘাতী”,—ধর্ম্মগ্রন্থের সেইরূপ কোন আক্ষরিক অংশ যদি তোমাদের যুক্তিবিরুদ্ধ বলিয়া মনে হয়, তাহা হইলে তুমি আমাদের নিকটে আসিও। যদি তোমার নিকট ভক্তির পথ, প্রার্থনার পথ রুদ্ধ হয়, তাহা হইলে আমরা তোমার সম্মুখে সুসূক্ষ্ম জ্ঞানের পথ উদ্ঘাটিত করিব; সে পথটি অধিকতর দুরূহ ও অধিকতর কঠোর, কিন্তু কল্পকাল পূর্ণ হইলেই, ঐ উভয় পথই আবার একত্র আসিয়া মিলিত হয় এবং একই গম্যস্থানে লইয়া যায়।”
আরও তাঁহারা বলিলেনঃ—“প্রার্থনা বোধ হয় ছোট ছোট জাগতিক ঘটনার গতি ফিরাইতে পারে না। কিন্তু আত্মার ক্রমোন্নতি ও শান্তিলাভের পক্ষে প্রার্থনাই শ্রেষ্ঠ উপায়।
আমরা ইহা বিশ্বাস করি না যে, মহান্ ঈশ্বর,—(এই ঈশ্বরের কথা এখানে সকলেই বর্জ্জন করে।) মানুষের প্রার্থনা শোনেন। কিন্তু আমরা যাহারা জীবিত আছি আমাদের চতুর্দ্দিকে, সেই মহান্ ঈশ্বরেরই অংশসমূহ, পৃথক সত্তায় পরিণত হইয়া, শুভঙ্কর আত্মারূপে সূক্ষ্মজগতে ছড়াইয়া রহিয়াছে!...আর তোমরা খৃষ্টান তোমাদিগকে খৃষ্ট আহ্বান করিতেছেন; তিনি যে আছেন সে বিষয়ে সন্দেহ করিও না—অন্তত তাঁহার মধ্যে কেহ-না-কেহ অবস্থিতি করিতেছেন—তাঁহার কোন আত্মীয় অবস্থিতি করিতেছেন; তিনিই তোমার বাক্য শ্রবণ করেন।”