উনিশে মে: ভাষার সংকট/ধ্রুবপদ উনিশ/বাঙালির সংকট

বাঙালির সংকট

বাউলামি কথায় কান দিলেই বিপদ। তাদের তো কোনো কাজ নেই ধর্ম নেই মানুষকে উসকে দিলেই হল কথা দিয়ে গান দিয়ে। বাউল রাজারা কী সব স্বপ্নের কথা বলেন যা কোনোদিন সত্যি হবে না, অতীতের সত্য কি ফিরে আসে কখনও । প্রাক্তন সুন্দর বর্তমান হয়ে ফিরবে না কোনোদিন জেনেই হয়তো এমন সুন্দর পদের নির্মাণ, 'আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম, গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু মুসলমান।’ আগে পারলে এমন কী বিপত্তি ঘটল যে দিন হল অবসান! আসলে এখন হয়তো স্বপ্ন-টপ্ন দেখতে চায় না কেউ, অনেক তো দেখা হল। এবার একটু ভালো ভালো নতুন দিন দেখার পালা লণ্ডনের গঙ্গায়, গঙ্গার পারে দেখানোর দিন সাড়ে বত্রিশ ভাজা। খাও আর বাড়ি গিয়ে ঘুমোও। প্রশ্ন-টশ্ন করো না বাপু, প্রাণে মরবে তাহলে বলে দিচ্ছি। করেছিল তো কর্ণাটকে একজন মাস্টারমশাই তার হাল সবাই দেখেছে, ভ্যানিসই হয়ে গেলেন তিনি, আর একজন উত্তরপ্রদেশে কিছুই না করে জবাই হয়ে গেলেন একলা। কয়েকজন কবি সাহিত্যিক সংস্কৃতিকর্মী তাদের মতো করে প্রতিবাদ করায় তাদের কপালেও জুটল দুর্ভোগ। সম্পুরণ সিং নামে এক কলমচি বললেন কবি লেখকদের ওপর রাগ কেন, তাদের তো কোনো অস্ত্রশস্ত্র নেই হাতে কাগজ আর কলম সম্বল। দু'পয়সার পুরস্কারে তাদের লাভ বই ক্ষতি ছিল না সেও তো তারা ফিরিয়ে দিচ্ছে তাহলে কেন রাগ, তাদের সমর্থন করে দু'কথা বলায় এক মহারাজ অভিনেতাকে দেশদ্রোহী বলে দেওয়া হল। কিছুই বলা যাবে না, এ কেমন রাষ্ট্রীয় মৌনতা। রাষ্ট্রপ্রধানও রেগে থাকেন সর্বক্ষণ রাজ্যপ্রধানের মতো, কিন্তু রাজধর্ম পালনে মৌন থাকেন। আগে চোরের মন্ত্রীসভায় থাকব না বলে হেলায় সরে গেলেন একজন এখন চুরির অপবাদে জেলে থেকে একবছর ধরে মন্ত্রীত্ব চালাচ্ছেন সততার মন্ত্রীসভা সদস্য। রাষ্ট্ররাজ্য সব এখন একাকার। এখন আবার মাংসখণ্ড নিয়ে কালোনাটক। প্রতিবেশির সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার জন্য এক নেতাকে কালি মেখে দেওয়া নিয়ে যার শুরু দক্ষিণে মহারাষ্ট্রে উত্তরেও একই কাণ্ড এক বিধায়কের উপর। কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী মাংস খাননি, বলেছেন খেতেই পারে, অসহিষ্ণুরা বলছে খেয়ে দেখ গলা কাটব। তো এমতাবস্থায় কলুটোলা দিয়ে হাঁটছিলাম গতসন্ধ্যায়, নাখোদা মসজিদের উল্টোদিকে। হরিণবাড়ির একটি গন্তব্য দেখে আসার ইচ্ছে, কুদ্দুস ভাই এর রোল কাবাবের দোকানটা কেমন আছে দেখে আসার বাসনা, সঙ্গে অন্য কোনো মনোকামনাও হয়তো ছিল। একই আছে গোমাংস বিপণির মাঝখানে সারে সারে শিকে সাজানো সাদা ব্রাউন কমলা এবং সবুজ রঙের ভিন্ননামের কাবাব খণ্ডগুলি। দেখলেই মন কেমন করে, ঘ্রাণ শুঁকলেই বাকি অর্দ্ধেকের জন্য রসনা আনচান করে। কুদ্দুস ভাই এর নামেই বোঝা যাচ্ছে খানদানি পাচক আর চারপাশের কশাইরাও তার একই বেরাদরির। কলকাতার নব্বুই শতাংশ পাঁঠা খাসির দোকানিই তো তারা। আমার জানা মতে দুটো মাত্র দোকানে সিঁদুরের ফোঁটা আছে, একটা কলেজ স্ট্রিটের বাঙালি পাঁঠা আর অন্যটি দমদমে একই সাইনবোর্ড। আর বাকি সবই হালাল কাটা, এই হালাল কাটাও তো গঙ্গাজল সাথে রান্না হয়, অন্যের ধর্মবিধি মেনে কাটা মাংস খেয়েও বেশ রক্ততিলক আঁকা যায়। তখন ঝটকা হালালের বিবাদ থাকে না। চারপেয়ে একটা কাটলে ধর্ম যায় না অন্যটার সাইজ বড়ো হলেই জাত গেল। আমার হরিণবাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যটা এখনও স্পষ্ট নয়। আসলে আমিও তো নই। কুদ্দুস ভাই এর কাবাবকথা অনেকের মুখেই শুনেছি, শুনে শুনে চেখে দেখার লোভ হয়নি বলতে পারি না। কিন্তু এখন আর তা হয় না, হচ্ছে না, আমি মন পাল্টে ফেলেছি, আমি হয়তো আর মাংসই খাব না। মাংসের প্রতি বিতৃষ্ণা জন্মে গেছে। তাহলে কি হিন্দুত্ববাদীদেরই জিতিয়ে দিলাম। নাকি প্রাণের ভয়, মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধিরামাইয়া বিখ্যাত মানুষ তার প্রাণরক্ষা করার মানুষ আছে, আমার নেই, তাই। আখলাখের কেউ ছিল না। গুরুদেব কালবর্গি তাঁর বইপত্র-ঘেরা আশ্রমেই তো থাকতেন। না না পশ্চিমবাংলায় ওসব ভয় নেই, এখানে ভোটের ভয় শুধু। আর গোমাংস তো শুনেছি বিলেত যাওয়ার আগে, বিদেশ যাওয়ার আগে সবাই খাওয়া শিখে নেয়, স্টেক খাবে না কারি খাবে। না হলে যে উপোস দিয়ে ফিরতে হবে। বাংলাদেশ গিয়েও দেখেছি অন্য বিদেশেও দেখেছি। আরবদেশেও বড়ো বড়ো চারপেয়েরা সহজলভ্য আহার। খাদ্যাখাদ্য নিয়ে কে যে কখন ভাবতে শুরু করেছে, চিন দেশে শুনেছি এমন কোনো প্রাণী নেই কেঁচো কেন্নো মাকড়সা সাপ কাঁকড়া ভূত প্রেত সবই খায়, এক চৈনিক গাইড আমাকে বলেছিল চিনদেশের বৈদ্যরা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চিকিৎসক, কারণ তারা খায় না এমন জিনিসের কোনো তালিকা নেই। তাই ডাক্তাররা জানেন কী খেলে কী প্রতিক্রিয়া হয়, জানেন তার প্রশমনের উপায়ও। চিন জাপান বর্মা থাই এসব দেশ বৌদ্ধপ্রধান, বৌদ্ধরা তো জানি গরু শুয়োর দুটোই খায়, বুদ্ধদেব আবার হিন্দুদের দশাবতারের একজন। বৌদ্ধ ভুটিয়াদের আবিষ্কার শুয়োরের মাংসের পুর দেওয়া মোমো। বুদ্ধদেব কিংবা যিশুকে নিয়ে তেমন সমস্যা নেই সব গোল শুধু প্রিয় বন্ধু হজরত মহম্মদ শিষ্যদের নিয়ে, ঝুলির একমাত্র বেড়াল এবং এর জন্য গোরক্ষণ গোমাতা ইত্যাদি তত্ত্ব। গতকাল লেখক স্বপ্নময় এরকম একটা পোস্ট দিয়েছেন দেখলাম ফেসবুকে, গরু আমাদের মাতা, কাল থেকে ষাঁড় পিতা মহিষ জেঠা পাঁঠা কাকু। স্বপ্নময় লেখক মানুষ, রসসাহিত্যিক, লিখতেই পারেন। কিন্তু এবার বলি আমার নিরামিষাশী হওয়ার ইচ্ছেকারণ। একজন বামপন্থী নেতা যাঁকে বেশ সম্ভ্রমের চোখেই দেখা হয়, মহানাগরিকও ছিলেন, এমন কোনো আলপটকা কথাও বলেননি কোনোদিন। রোলমডেল হওয়ার একটা কিছু ছিল তাঁর মধ্যে, আর একজন সদ্য বাম টপকানো এক কবির একে অপরকে প্রকাশ্যে ক্যামেরা দেখিয়ে গোমাংস ভক্ষণের বীভৎসতা দেখে বিতৃষ্ণা এসে গেল। ক্ষুন্নিবৃত্তির দরকার না পড়লে হয়তো খাওয়াটাই ছেড়ে দিতাম। এসব কী হচ্ছে এ দেশে, কে একজন তো বলেই দিলেন এসব বীভৎস বীরত্ব কলকাতার ভোটবছরে না দেখিয়ে গুজরাট দিল্লিতে গিয়ে দেখালে বোঝা যেত কত টাকা কিলো নরমাংস। এই হল বাঙালির বুদ্ধিজীবন পশ্চিমবঙ্গের চল্লিশ ষাটের ভোট-রাজনীতিতে।

 বাউল সম্রাটের আপন দেশে ব্লগার হত্যা দিয়ে শুরু হয়েছিল। শাহবাগ আন্দোলন যে আশার আলো দেখিয়েছিল, ধর্মীয় মৌলবাদের কলঙ্ক তাকেও নিভিয়ে দিল এখন। যাদের হত্যা করা হল তাদের লেখালেখি যারা ছাপছেন তাদের হত্যা করার পরিকল্পনায় অভিনবত্ব কিছু নেই। পুরো প্রক্রিয়াটাই বাঙালিশূন্য বিশ্বায়নের এক সুচতুর প্রক্রিয়া। না হলে কেন এতদিন বাঙালি হত্যার প্রশিক্ষণ দিতে বাংলাদেশেই আলফাদের মূল ঘাঁটি ছিল! কেউ কেউ বলছেন ওসব অতীতকথা চুকেবুকে গেছে। শেখ হাসিনা ভুল শুধরে প্রত্যর্পণ করেছেন। আসলে আলফা-অস্ত্র ভোঁতা হতেই দুই রাষ্ট্রশক্তির ওদের প্রতি কৌতূহল কমে যায়। কারণ ততদিনে গোকুলে বেড়ে উঠেছে নতুন বধ্যাস্ত্র। আইনি শস্ত্র, নাম এনআরসি আর ডি ভোটার। জাতিবিদ্বেষের বীজ বিষগাছে বিকশিত হয়েছে এবং এখন তো ভোটরঙ্গের খেউড় জমানো আসরও জমজমাট। রাজনীতির কারবারিরা এখন সাঁড়াশি আক্রমণে বাঙালি-বধের আয়োজন সম্পূর্ণ করেছেন। বশংবদ প্রশাসন প্রস্তুত, বিচারব্যবস্থাও মদতদার হিসেবে সক্রিয়। আর বিধানব্যবস্থাও তথৈবচ, অর্থদপ্তরের থলি খুলে দেওয়া হয়েছে মন্ত্রী সংসদীয় সচিব নামে, এই যখন সমস্ত রথী পরিবৃত বাঙালির অবস্থা, তার মুণ্ড গড়াগড়ি যাবে না তো কী হবে, ভাগা করে বিক্রি হবে নিদেনপক্ষে। এনআরসি নিয়ে যে কত রঙ্গ চলছে, একটার পর একটা হচ্ছে ছল, শেয়ালের কুমীরছানার মতো সবক'টাকে সাবাড় করে একটাকেই দেখিয়ে যাচ্ছে ডি ঢ্যাঁড়া মেরে। ডিটেনশন আর ডাউটফুল, ডি-শব্দে যে এত বিষ বাঙালি জানেনি। ঘাড়ধাক্কা বলে কোনো খেলা যে কোথাও নেই সে কথা ভালই জানে চক্রান্তকারীরা, পুশব্যাক হয় না। তাই নিরক্ষর চাষি বাঙালিকে ভয় দেখানোর দোকান খোলা হয়েছে। রাস্তাঘাট যেমন আছে থাকুক ব্রডগেজ থাকুক নাগরিক মানোন্নয়ন নিয়ে ভাবলে চলবে না, চুপ এনআরসি চলছে। খেলার মধ্যে আবার খেলা দেখানো হচ্ছে। বলছে, বাঙালি হিন্দু থাকবে, এনআরসি-তে নয়, নাগরিকত্ব থাকবে না, নামকাটা সেপাই হয়ে থাকুক। এসবের কী যে মানে সে যে জানে সেই জানে আর জানে হিংটিং ছট। তাহলে চাষবাসে রত মুসলমান বাঙালির কী হবে, তাদের দোষ কী। ওরাও তো নিরক্ষর, বংশবৃক্ষ দেখানোর মতো শিক্ষা থাকলে তো ওরা লণ্ডনি হয়ে যেত, বিদেশি তকমা থাকত না। একটা রাষ্ট্র কেন স্পষ্ট কথা বলতে পারছে না আটষট্টি বছরেও। যদি বিদেশিই হয়, তার মানে তাকে চিহ্নিত করা হয়েছে অন্য একটি দেশের নাগরিক হিসেবে, তাহলে সেই দেশে কেন তাকে সসম্মানে ফেরত পাঠানো হবে না। ডিটেনশন ক্যাম্পটা কী, ডি ভোটারের প্রহসন কেন। বিনা বিচারে বন্দী করে রেখে দেওয়ার বর্বরতা কেন। বৃহত্তম গণতন্ত্রের এই পরিহাস মেনে নেব কেন।

 এবার একটা খবরে আসা যাক। পরিসংখ্যান বেরিয়েছে খবরের কাগজে। পশ্চিমবঙ্গে ষাটোর্ধ নাগরিক সংখ্যা সর্বাধিক। সারা দেশে এক নম্বরে। কত শতাংশ সে বিচার্য নয়। কেউ কেউ বলছেন পশ্চিমবাংলা শুধু প্রমোদতরণী নয় একটি বৃদ্ধাশ্রমও বটে হা হা। এ বড়ো সুখের সময় নয় বলে পরিহাস মুখর হওয়ার কথা নয়। কেন হল এই অবস্থা, একটা ভারসাম্য তো থাকবে। তার মানে পশ্চিমবঙ্গে যৌবনের কোনো ঠাঁই নেই বলে এই হাল। চাকরি নেই ব্যবসা বাণিজ্য নেই সিণ্ডিকেট আর প্রমোটারি ছাড়া, সারদা চুরিও তো বন্ধ। শোনা যাচ্ছে রাজ্য জুড়ে নতুন চিটিং শুরু হয়েছে খুনোখুনিও হচ্ছে। সেসব ভিন্ন কথা। বাঙালি যৌবন কি তবে আরবে যাচ্ছে, লণ্ডন আনা গেল না বলে লণ্ডন যাচ্ছে। দক্ষিণ ভারতের মলে মলে ওদের দেখা যায়। খাবারের দোকানে রাঁধুনি টেবল বয়-দারোয়ান নির্মাণশ্রমিক ওসব দেশে সব বাঙালি। সব সস্তার শ্রমিক এরা। হট্ট মন্দিরে শোয় দিনে দশ-কুড়ি টাকার টপআপে কথা বলে মা-বাবা বউ প্রেমিকার সঙ্গে। আর বাবুরাও আছেন আইটির সস্তা শ্রমিকরা মলমদ্য করে বাড়িঘর মনে করতেই পারে না। এ শুধু পশ্চিমবাংলা নয়, সোনাই সোনাবাড়িঘাটেরও গল্প। বরাক উপত্যকার পরিসংখ্যান এক। বাঙালির বাচ্চারা যদি হঠাৎ করে সব দেশে ফিরতে শুরু করে তাহলে তো বৃদ্ধাশ্রম উঠে যাবে, পরিসংখ্যান পাল্টাবে। প্রশ্ন কিন্তু তাও নয়। এই যারা এখন চেন্নাই কর্ণাটক অন্ধ্র মহারাষ্ট্রে থাকতে গেছে তারা কে, কী তাদের পরিচয়। আসাম থেকে বরাক থেকে উত্তর-পূর্ব থেকে যারা গেছে তাদের নাম কি থাকবে কুচক্রীদের দিল্লিকা লাড্ডু এনআরসি তে। ওরা যদি ফিরে আসে তাহলে কি ওরা আবার নতুন করে রাষ্ট্রহীন হয়ে যাবে।

 এসব কি অতিভাবনা। যুক্তি তো বলে ইতিহাস বলে অতিকথা বলে, ভূগোল ভাঙে বারবার, নতুন করে গড়ে। ইহুদিকে এখন আর কেউ ইহুদি বলে না। ওদেরও রাষ্ট্র আছে। এক্সোডাস থেকে অমিয়ভূষণ আমরা শুনেছি প্রব্রজনের গল্প। বাঙালিও কি তাহলে পাবে তার রাষ্ট্র এই ভারতে। দলিত বাঙালি বলে কেউ কেউ একটা খণ্ড করেছেন বাঙালির, বাঙালি মানেই তো দলিত। ওরা আছেন কর্নাটকে মহারাষ্ট্রে দণ্ডকবনে ঝাড়খণ্ডে বিহারে, ওরা প্রতিস্থাপিত হয়েছেন নেহরু স্যারের সৌজন্যে, বাংলা নায়কদেরই বা বাদ দেব কেন। ওরা পারতেন না একখণ্ড ভূমিতে স্থাপিত করতে তাদের পাপে বিতাড়িত বাঙালিকে। যাই হোক যারা আন্দামান টান্দামানে গেলেন তাদের সবাইকে কি নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে। হয়নি, থাকতে দেওয়া হয়েছে শুধু। হলোকাস্টের জন্য বাঙালিকে কাঁঠাল পাতা খাইয়ে রেখে দেওয়া হয়েছে। আর এখন ভান হচ্ছে যেন ঘুম ভেঙেছে, নবীন এই ধর্মীয় রাষ্ট্রব্যবস্থার উলঙ্গ রাজা বেহালা বাজাচ্ছেন এরোপ্লেনে আর বাঙালির দহনকাণ্ডের নীলনক্সা সাজাচ্ছেন।

 পশ্চিমবাংলায় মহম্মদ বিন তুঘলক পূর্বাশ্রমের কালিদাস হয়ে রাষ্ট্রব্যবস্থার ডাল কাটছেন মুচকি হাসিতে, খেয়াল থাকলেও ভাবছেন শেষ কোপ তো মারিনি, তখন নেমে চলে যাব অন্য ডালে। লণ্ডনেই চলে যাব। কিন্তু বরাক উপত্যকার বাঙালির, উত্তর-পূর্বের বাঙালির অন্য অপশন নেই, তাকে জোট বাঁধতেই হবে। গোমাংসের রাজনীতি যেমন বর্জন করেছে উত্তরপূর্বদেশ তেমনি এনআরসি প্রহসনকেও প্রতিরোধ করবে বাঙালির যৌথ নেতৃত্ব। আর প্রতিরোধের জন্যও চাই স্বপ্ন সঞ্চয়, বাউলের গানকে সম্পদ করেই এগোতে হবে। আগের সুন্দর দিন ফিরিয়ে আনতে হবে।

 দ্বিরালাপ ৭১। অক্টোবর ২০১৫