উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র/কবিতা ও গান/পাখির গান

পাখির গান

কত পাখি আছে, তাহা কব মোর কাছে
আহা, কত মত সাজে তারা ফেরে ধরা মাঝে।
তারা বলে কত বুলি, তারা করে কত খেলা,
দুখ নাহি কারো মনে, কারো কাজে নাহি হেলা।
নাচে খঞ্জন বাটে মাঠে, আর কোকিল গাহে ডালে,
আর কিবা মনে করে কাকা বসে আসি চালে।
মুনিঠাকুরেবি মত বক থাকে ঝিম ধরে,
মাছ এলে মুখ মেলে তাবে গেলে কপ করে।
কহে হুতোমেরে প্যাঁচা, ‘মুই বলি, শোন চাচা,
এই যে হাঁড়ি মুখে দাড়ি, এর বাহার বড় ভারি!’
শ্যামা, বুলবুল গাহে বনে, মিলি দোয়েলের সনে,
এসে চড়াই ঘরে বড়াই করে শঙ্কা নাহি মনে।
বলে শঙ্খচিল কেন যত ঘটিবাটি পাবে
আর গোদা বেটা কেন খালি ঘাড়ে লাথি খাবে?

কহ সে বা কোন পাখি যার বৌ না কহে কথা?
কিবা নামটি যার চোখে বড় হায় ব্যথা?
বটে চালাক বড় শালিক, রাখে দুনিয়ার খবর,
আর ময়না কাকাতুয়া তারা কথায় বড় জবর।
তার গলে দোলে ঝোল্লা, গায়ে কালো আলখাল্লা,
রূপের কিবা হয় জেল্লা, হাই তুল্লে হাড়গিল্লা!
আছে গগনবেড়, গৃধিনী, শাঁচানি, শকুনি,
পায়রা, ঘুঘু, ফিঙ্গা, পানকৌড়ি মাছরাঙ্গা
কাঠঠোক্‌রা, কাদাখোঁচা, হরবোলা, হাঁড়িচাচা,
টিয়া, টুনটুনি, টিঠিপাখি—কহ কত আর বাকি!