উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র/বিবিধ প্রবন্ধ/অভিমানী রাজপুত্র

লুয়া ত্রুটি মডিউল:Header_template এর 348 নং লাইনে: bad argument #1 to 'next' (table expected, got nil)।

অভিমানী রাজপুত্র

 রুশিয়ার যুবরাজের পুত্র সকালে উঠিয়া মুখ ধুইতে চাহিতেন না। এক-দিন তাঁহার মাস্টার আসিয়া নালিশ করিল, ‘ছোট-কর্তা মুখ ধুইতেছেন না।’

 যুবরাজ বলিলেন, ‘বটে? আচ্ছা দেখা যাবে, এরপর সে কেমন করিয়া মুখ না ধুইয়া থাকে।’

 রাজপরিবারের ছেলে বুড়ো সকলকেই পাহারাওয়ালারা সেলাম করিবে, এরূপ নিয়ম। পরদিন চারি বৎসরের শিশু-কর্তাটি মাস্টারের সঙ্গে বেড়াইতে বাহির হইলেন। একজন পাহারাওয়ালার কাছ দিয়া তাঁহারা গেলেন, সে তাল-গাছপানা হইয়া দাঁড়াইয়া রহিল, সেলাম করিল না।

 যুবরাজের ছেলেকে সকলেই সেলাম করিয়া থাকে, সুতরাং তিনি ইহাতে একটু বিরক্ত হইলেন, কিন্তু কিছু বলিলেন না। একটু পরেই তাঁহারা আর একজন পাহারাওয়ালার নিকট দিয়া গেলেন। এই ব্যক্তিও কোনোরূপ সম্মান প্রদর্শন করিল না। যুবরাজনন্দন অত্যন্ত চটিয়া মাস্টারকে বলিলেন। এইরূপ বেড়াইবার সময় অনেক সিপাহীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হইল, কেহই

তাঁহাকে সেলাম করিল না। তিনি দৌড়িয়া যুবরাজের কাছে গিয়া বলিলেন—

 ‘বাবা! বাবা! তোমার বরকন্দাজগুলিকে চাবুক মার। আমি যাইবার সময় এরা আমাকে সেলাম করিতে চাহে না।’

 যুবরাজ বলিলেন, ‘বাছা, তাহারা ভালোই করে। পরিষ্কার সিপাহীরা কখনো অপরিষ্কার ছোট-কর্তাকে সেলাম করে না।’ এর পর হইতে যুবরাজ নন্দন প্রত্যহ প্রাতে স্নান করিতেন।

 যুবরাজপুত্রের অভিমানই তাহার কু-স্বভাব সংশোধন করাইল।