উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র/বিবিধ প্রবন্ধ/ফ্যামিলো

ফ্ল্যামিঙ্গো

 জানোয়ারের মধ্যে যেমন জিরাফ, পক্ষীর মধ্যে তেমনি ফ্ল্যামিঙ্গো। শরীরের আন্দাজে ঠ্যাং দুটি বেখাপ্পারকম লম্বা আর তেমনি লম্বা গলাটি। পৃথিবীর নানা জায়গায়—আমেরিকায়, আফ্রিকায়, এমন-কি, আমাদের দেশেও কোনো কোনো জায়গায় এ-পাখি দেখা যায়। এরা জলের ধারে দল বেঁধে থাকে। আমেরিকার কোনো কোনো জায়গায় এক সঙ্গে হাজার হাজার ফ্ল্যামিঙ্গো বাস করে এমন অনেক সময়েই দেখা যায়। জলের মধ্যে ঠোঁট ডুবিয়ে শামুক গুগলি চিংড়ি আর ছোট-ছোট মাছ ধরে খেতে ফ্ল্যামিঙ্গোরা খুবই ভালোবাসে কিন্তু তা যদি না জোটে, তা হলে ধান, শস্য, খুদ, এমন-কি, রান্না পায়েস পর্যন্ত খেতে তার

আপত্তি নেই।

 ফ্ল্যামিঙ্গোর গায়ের রঙ সব দেশে একরকম নয় তবে প্রায়ই সাদা না-হয় লালচে গোছের হয়। সব চেয়ে সুন্দর রঙ আমেরিকার ফ্ল্যামিঙ্গোদের। উজ্জ্বল গোলাপী রঙের পালক, লাল চোখ, লাল ঠোঁট, লাল পা। জলে হেঁটে বেড়ান, সাতার কাটা, আকাশে ওড়া, এ-সব বিষয়ে ফ্ল্যামিঙ্গোরা খুব ওস্তাদ। কিন্তু শরতের শেষে যখন তাদের পালক প’ড়ে নূতন পালক ওঠে, তখন বেচারাদের দুরবস্থার একশেষ! তারা না পারে উড়তে, না পারে সাঁতার কেটে পালাতে এইসময় মানুষেরা তাড়া করে সহজেই তাদের ধরে আনে আর তাদের পালক নিয়ে বাজারে বিক্রি করে।

 যেমন অদ্ভুত পাখি তেমনি অদ্ভুত তার বাসা। পা দিয়ে কাদার ঢিপি বানিয়ে তার মধ্যে গর্ত করে নীল রঙের ডিম পেড়ে রাখে। ডিমে তা দিবার সময় পা গুটিয়ে সেই ঢিপির উপর বসতে হয়।