উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র/বিবিধ প্রবন্ধ/বেলুন: ৩
বেলুন: ৩
মার্চ মাসের সখায় বেলুনের একটা ছবি ছিল, তাহাতে একটা নঙ্গর আঁকা ছিল। কেহ কেহ আমাদিগকে প্রশ্ন করিয়াছেন, ‘ঐ নঙ্গরটা ওখানে কেন আসিল?’
নঙ্গরটা ওখানে নঙ্গরের কার্য করিতেই আসিয়াছে। নৌকার নঙ্গর জলে ফেলিলে নৌকা যেমন আর চলিতে পারে না, বেলুনের নঙ্গরও সেইরূপ। অনেক সময় বাতাসে ঠেলিয়া বেলুনটাকে এমন স্থানে লইয়া যাইতে চাহে যে বেলুনের আরোহী তাহা পছন্দ করেন না। তখন ঐ নঙ্গর নীচে নামাইয়া দেওয়া হয়। এইরূপ করিয়া যদি নঙ্গরটাকে নিম্নস্থ কোনো গাছ বা অন্য কিছুতে আটকাইয়া দেওয়া যায় তবেই বেলুন আর চলিয়া যাইতে পারে না।
সম্প্রতি প্যারিস নগরে একপ্রকার বেলুন প্রস্তুত হইয়াছে, তাহাকে জাহাজের ন্যায় যেখানে ইচ্ছা সেইখানে চালাইয়া নেওয়া যায়। এই বেলুনের আকৃতি ময়রার দোকানে যে চম্চম্ বিক্রি হয় তাহার ন্যায়। চম্চম্টাকে থালের উপরে যেভাবে কাত করিয়া রাখে এই বেলুনও শূন্যে ঠিক সেইভাবে থাকে। বাতাসের ভিতর দিয়া চলিবার সময় যাহাতে বিশেষ বাধা না পায় তাহার জন্যই এরূপ করা হইয়াছে। এই চম্চমের এক মাথায় একটি হাল। আরোহীদের বসিবার দোলা চমচমের গায়ে ঝুলিতেছে। এই দোলায় বেলুন চালাইবার কল। কলটি তড়িতের বলে চলে। এই বেলুন চালাইতে তিনটি লোকের আবশ্যক। একজন হাল ধরে; আর একজন কল চালায়; আর একজন বালির বস্তাগুলির প্রতি দৃষ্টি রাখে—অর্থাৎ বেলুন নামিয়া পড়িতে চাহিলে বালির বস্তা খালি করিয়া তাহাকে হালকা করে।