এপিক্টেটসের উপদেশ/কথা নয়—কাজ
কথা নয়—কাজ।
১। আপনাকে তত্ত্বজ্ঞানী বলিয়া কখন ঘোষণা করিও না; তত্ত্বজ্ঞানের কথা ইতরসাধারণের নিকট বড় একটা বলিও না; তত্ত্বজ্ঞানের যা উপদেশ—তাহা তুমি কার্য্যা পরিণত কর। যেমন মনে কর—কোন ভোজের সময়, কিরূপ আহার করা কর্ত্তব্য সে বিষয়ে বক্তৃতা না দিয়া, যেরূপ আহার করা কর্ত্তব্য, সেইরূপ যদি তুমি নিজে আহার কর, তাহা হইলেই ঠিক হয়। সক্রেটিস্ কি করিতেন?—তিনি কোন প্রকার আড়ম্বর করিতেন না,আপনি জ্ঞানী বলিয়া অভিমান করিতেন না; তাঁহার নিকট কেহ যখন কোন তত্ত্বজ্ঞানীর সন্ধানে অসিত, তিনি তাহাকে অন্যের নিকট লইয়া যাইতেন। তিনি সর্ব্বপ্রকার উপেক্ষা ও অবজ্ঞা অম্লান বদনে সহ্য করিতেন।
২। যদি সাধারণ লোকের কথাবার্ত্তার মধ্যে তোমার দর্শনতন্ত্র সম্বন্ধে কোন কথা উঠে,—অধিকাংশ সময়ে তুমি নীরব থাকিবে; কেন না, তাহাতে একটা বিপদ আছে;—হয় ত যাহা এখনো ভাল করিয়া পরিপাক করিতে পার নাই, অন্যের নিকট তাহাই তুমি উদ্গীর্ণ করিবে। যদি কেহ সেই সময়ে তোমাকে বলে,—“তুমি কিছুই জান। না,” তখন এই কথাটা যদি তোমার মনে না বেঁধে তবেই জানিবে, তোমাতে তত্ত্বজ্ঞানের কাজ আরম্ভ হইয়াছে।
৩। মেষেরা কি পরিমাণ আহার করিয়াছে তাহা দেখাইবার জন্য তাহারা তাহাদের খাদ্য মেষপালকের নিকট লইয়া আসে না; পরন্তু সেই খাদ্য পরিপাক করিয়া গাত্রে লোম ধারণ করে এবং দুগ্ধ দেয়। সেই রূপ তুমিও ইতর সাধারণের নিকট তোমার তত্ত্বজ্ঞান ফলাইও না; কিন্তু সেই তত্ত্বজ্ঞান পরিপাক হইয়া তাহা হইতে যে কার্য্য উৎপন্ন হয়, সেই কার্য্যফল তুমি আপনার জীবনে প্রকটিত কর।