কথামালা (১৮৭৭)/একচক্ষু হরিণ
(পৃ. ৩২)
একচক্ষু হরিণ
এক একচক্ষু হরিণ সতত নদীর তীরে চরিয়া বেড়াইত। নদীর দিকে ব্যাধ আসিবার আশঙ্কা নাই, এই স্থির করিয়া, নিশ্চিন্ত হইয়া, স্থলের দিকে ব্যাধ আসিবার ভয়ে, সতত সেই দিকে দৃষ্টি রাখিত। দৈবযোগে, এক দিবস, কোনও ব্যাধ নৌকায় চড়িয়া যাইতেছিল। সে দূর হইতে ঐ হরিণকে চরিতে দেখিয়া শর নিক্ষেপ করিল। হরিণ মনে মনে এই ভাবিয়া প্রাণ ত্যাগ করিল, আমি যে দিকে বিপদের আশঙ্কা করিয়া সতর্ক থাকিতাম, সে দিকে কোনও ভয় হইল না; কিন্তু যে দিকে বিপদের আশঙ্কা নাই ভাবিয়া নিশ্চিন্ত ছিলাম, সেই দিক হইতেই শত্রু আসিয়া আমার প্রাণ সংহার করিল।