কথামালা (১৮৭৭)/কাক ও জলের কুজো
(পৃ. ৩০-৩১)
কাক ও জলের কলসী
এক তৃষ্ণার্ত্ত কাক, দূর হইতে জলের কলসী দেখিতে পাইয়া, আহ্লাদিত হইয়া, ঐ কলসীর নিকটে উপস্থিত হইল, এবং জল পান করিবার নিমিত্ত, নিতান্ত ব্যগ্র হইয়া, কলসীর মধ্যে ঠোঁট প্রবেশ করাইয়া দিল; কিন্তু কলসীতে জল অনেক নীচে ছিল, এজন্য কোনও মতে পান করিতে পরিল না। তখন, সে প্রথমে কলসী ভাঙ্গিয়া ফেলিবার চেষ্টা পাইল; পরে, কলসী উল্টাইয়া দিয়া, জল পান করিবার চেষ্টা করিল; কিন্তু বলের অল্পতা প্রযুক্ত, তাহার কোনও চেষ্টাই সফল হইল না। অবশেষে, কতকগুলি লুড়ি সেই খানে পড়িয়া আছে দেখিয়া, এক একটি করিয়া, সমুদয় লুড়িগুলি কলসীর ভিতরে ফেলিল। তলায় লুড়ি পড়াতে, জল কলসীর মুখের গোড়ায় উঠিল, তখন কাক, ইচ্ছামত জল পান করিয়া, তৃষ্ণা নিবারণ করিল।
বলে যাহা সম্পন্ন না হয়, কৌশলে তাহা সম্পন্ন হইতে পারে।
কাজ আটকাইলে বুদ্ধি যোগায়।