হরিণ

এক হরিণ খালে জল পান করিতে গিয়াছিল। জল পান করিবার সময়ে, ঐ জলে তাহার শরীরের প্রতিবিম্ব পড়িয়াছিল। সেই প্রতিবিম্ব দর্শন করিয়া, হরিণ কহিল, আমার শৃঙ্গ যেমন দৃঢ়, তেমনই সুন্দর; কিন্তু, আমার পা দেখিতে অতি কদর্য্য ও অকর্ম্মণ্য। হরিণ, এই রূপে, আপন অবয়বের দোষ গুণ বিবেচনা করিতেছে, এমন সময়ে, ব্যাধেরা আসিয়া তাড়াতাড়ি করিল। সে প্রাণভয়ে এত বেগে পলাইতে লাগিল যে, ব্যাধেরা অনেক পশ্চাৎ পড়িল। কিন্তু, জঙ্গলে প্রবেশ করিবা মাত্র, তাহার শৃঙ্গ লতায় এমন জড়াইয়া গেল যে, আর সে পলায়ন করিতে পারিল না। তখন ব্যাধের আসিয়া তাহার প্রাণ বধ করিল। হরিণ এই বলিয়া, প্রাণত্যাগ করিল যে, আমি, যে অবয়বকে কদর্য্য ও অকর্ম্মণ্য জ্ঞান করিয়া, অসন্তুষ্ট হইয়াছিলাম, উহা আমায় শত্রুহস্ত হইতে রক্ষা করিয়াছিল; কিন্তু, যে অবয়বকে দৃঢ় ও সুন্দর জ্ঞান করিয়া, সন্তুষ্ট হইয়াছিলাম, তাহাই আমার প্রাণবধের হেতু হইল।