কবিতাকুসুমাঞ্জলি/কটুভাষিণী রসনা
(পৃ. ৬২-৬৩)
কটুভাষিণী রসনা।
রসনা! সরসা তুমি, কথা কেন বিরস,
বজ্রসম বাজে কাণে জ্বলে যায় মানস।
ভাষাদোষে নিজ জনে পর কর ক্রমশঃ,
দারা সুত আদি সবে হয়ে বসে অবশ।
বৃথা কেন কর পীড়া-কর পর-কুযশ,
কিবা হয় সুখোদয়, আছে তায় কি রস।
পরদোষঘোষণায় কেন এত যতন,
জান না কি তাহে হয় পরযশোহরণ।
ভাব মনে, ধনিজনে সুখী হবে শুনিয়া,
তাই কত তোষামোদ কর তুমি রচিয়া।
কিছু ফলোদয় নাই সেই কথা কখনে,
সুজনে কি শুনে কভু মৃষাভাষা শ্রবণে।
জ্বলে যায় শুনে তায় চটে উঠে তখনি,
শ্রবণে শ্রবণে তাহা জ্ঞান হয় অশনি।
তুষিবারে পরিহাস কথা কহ বহুশঃ,
অন্যে তাই বিষ ভাবে তুমি ভাব পীযূষ।
কুভাষা বলিতে তব রস হয় রসনা!
জগদীশ গুণগানে নাহি দেথি বাসনা।
সুনৃত বচন যদি বল ভূমি রসনে!
হেলায় তুষিতে পার সে সকল সুজনে।
অতএব শুন বলি, ত্যজ কথা কুরস,
বল তাহা, আছে যায় শমরস সুরস।