কবিতাকুসুমাঞ্জলি/পাপাত্মার অনুতাপ
পাপাত্মার অনুতাপ।
কি হইল, হায় হায়, বৃথা দিন গেল,
দেখিতে দেখিতে দেখ মৃত্যুকাল এল।
পূর্ব্বকৃত কার্য্য যত যত পড়ে মনে,
তত দহে মূঢ়মন গ্লানিহুতাশনে।
নৈরাশ্য বিকট আস্য করিয়া প্রকাশ,
খল খল হাস্য করে দেখে হয় ত্রাস।
কি আশ্চর্য্য! এক কালে যে পাপের কায়,
(নানা সাজে সাজি যাহা মানবে মজায়)
প্রলোভনে হয়েছিল লুব্ধ লঘু মন;
বাঁশীস্বরে ধরে ব্যাধ হরিণ যেমন;
এবে সেই কান্ত কায় মায়াময় পাপ,
ভীষণ মূরতি ধরি, দেয় মনস্তাপ।
অন্ধতায় বন্ধ্য হল জনম আমার,
হেরি চারি দিকে সদা অকূল পাথার।
হায় বিষবিমিশ্রিত পয়ঃ করি পান,
অবহেলে হারালাম অমূল্য পরাণ।
এলাম এ ভবহাটে হাটক কিনিতে,
কাচ পেয়ে ভুলিলাম নারিনু চিনিতে!
ছিন্ন ঘাসে তালি দিতে, দুখ কত কব,
খণ্ড খণ্ড করিলাম কাশ্মীর রাঙ্কব!
পরিণাম না ভাবিয়া মরিলাম হায়,
কুরস কলুষরসে মজে প্রাণ যায়।
শৈশরে মানস মম সুবিমল ছিল,
যৌবনে কলুষ পঙ্ক পঙ্কিল করিল।
হায় যদি সেই কালে হইত মরণ,
তবে কি যাতনানলে দহিত জীবন।
দশ দিক্ অন্ধকার হেরি শূন্যময়,
এখনো দেখরে পথ বিমূঢ় হৃদয়।
মিছে কেন হায় হায় করে মর আর,
প্রথমে উচিত ছিল বিচার ইহার।
যদি এ যাতনা হতে চাহ পরিত্রাণ,
ডাক সেই বিশ্বনাথে করুণানিধান।
অকপটে চাহ মাপ তাপ শান্তি হবে,
কলুষ বিষের জ্বালা নাহি আর রবে।