কবিতাকুসুমাঞ্জলি/প্রভাতের চন্দ্র

প্রভাতের চন্দ্র।

নিশা শেষে নিশাপতি! কোথা যাও দ্রুতগতি,
বিষাদে ছাড়িয়া নিজ দেশ,
নাই তব পূর্ব্বশোভা, সকলের মনোলোভা,
দুঃখ হয় দেখে দীনবেশ।
বিধু হে বিধুর কেন, মলিন হতেছ হেন,
বল বল, কিসের লাগিয়া,
কোথা সেই অভ্যুদয়, ধবল চন্দ্রিকাচয়,
কোথা গেল তোমারে ছাড়িয়া।
উজ্জ্বল মূরতি ধরি, ভূধর মস্তকোপরি,
পাদ ন্যাস এই করে ছিলে,
প্রকাশিলে কত গর্ব্ব, কে তাহা করিল খর্ব্ব,
কার ভয়ে এমন হইলে?
প্রিয়তম জানি মনে, চকোর চকোরীগণে,
বিতরিয়া নিজ সুধাধন!
প্রকাশিছ দীনভাব, নাই আর সে প্রভাব,
তাই হেন মলিনবদন!
কিম্বা বার অংশু ধনে, চুরি করি সংগোপনে,
প্রকাশ করিলে মদ কত,

দেখে তার আগমন, করিতেছ পলায়ন,
তাই বুঝি বিষণ্ণ এমত।
অথবা সে নিশীথিনী, অনাথিনী একাকিনী,
কোন দেশে করিল পয়ান,
সেই লাজ দুখভয়ে, অন্তরে আকুল হয়ে,
হতেছ কি মলিন-বয়ান?
কেন ভাব নিশানাথ! দেখা হবে তব সাথ,
দ্রুত যাও পশ্চিম প্রদেশে,
পুনঃ প্রিয় নিশা সঙ্গে, ভ্রমণ করিবে রঙ্গে,
এ সব যাতনা যারে শেষে।
দেখ দেখ তারাচয়, দেখে তব অসময়,
হল হেন কাতর অন্তরে,
আর তুমি নাহি রবে, ভাবি একে একে সবে,
ডুবিতেছে গগনসাগরে।
দেখ হে মানবগণ! অভ্যুদয় কত ক্ষণ
রহে, যায় জলবিম্ব প্রায়,
ক্ষণে হয়, ক্ষণ রয়, ক্ষণে ক্ষণে পায় লয়,
তবে কেন কর গর্ব্ব তায়।