কবিতাকুসুমাঞ্জলি/মৃগের স্বাধীনতা

মৃগেরস্বাধীনতা।

কও হে কুরঙ্গ! কৃপা করিয়া আমায়,
কত পুণ্য করেছিলে সুধাই তোমায়।
ক্ষুধাপেলে নব নব তৃণাঙ্কুর খাও,
নিদ্রা এলে তরু মূলে সুখে নিদ্রা যাও।
বিষাক্ত-বিশিখ-সম-গর্ব্বিত-বচনে
পরিপূর্ণ ধনিমুখ না দেখ নয়নে;
অন্নাভাবে দীনভাবে ধনিদের দ্বারে,
না হয় আমার মত যাইতে তোমারে;
আশা ভঙ্গে মনে যত হয় দুঃখোদয়,
সে সব তোমারে কভু সহিতে না হয়।
ধন অংশে ধনিজনে সেবিবারে যত
দুঃখ হয়, তাহা আদি কহিব হে কত।
নরাধমে প্রভু বলি সম্বোধিতে হয়,
রসনা, তুষিতে তারে কত মৃষা কয়।
শ্রবণ কাতর হয়, শুনি তার ভাষ
কর্কশ বিরস যেন বিষের আবাস।
মন নহে অভিলাষী যার সহবাসে,
তথাপি থাকিতে হয় তাহার আবাসে।



তার তুল্য দুঃখী নাই, শুন হে কুরঙ্গ;
যে জন নিয়ত করে অপ্রিয়ের সঙ্গ।
এ সব দুঃসহ দুখ ওহে মৃগবর,
কখন না হয় তব স্বপন গোচর।
আহা মরি কি তোমার তপস্যার ফল,
যে ফলে ফলেছে এই স্বাধীনতা ফল।