স্বার্থ।

ধন্য ওরে স্বার্থ! তোর কি বিষম কল,
নিয়ত ঘুরিছে তাহে ভুবন সকল।
তোমার মহিমা কত কে বলিতে পারে,
তব বশে লোকে যায় সাগরের পারে।
ছাড়ি সব পরিজনে আর নিজ দেশে,
অনেকে বিদেশে থাকে তোমার আদেশে।
হইয়া তোমার দাস মানবনিকরে,
নিরন্তর লাঠালাঠি কাটাকাটি করে।—
যাহা কিছু দেখি সব স্বার্থের বিষয়,
স্বার্থ হানি হলে কারু প্রাণে নাহি সয়।
ধন্য ওহে স্বার্থ! তুমি ধর কত বল।
একেশ্বর এভুবনে তুমিই কেবল।
ন্যায় ধর্ম্মে মন্ত্রী করি যদি কার্য্য কর,
তবেই তোমার কাজ হয় শুভকর।
কেবল তোমারে ধরি যদি কোন লোকে,
কার্য্য করে, হয় তবে নিন্দিত এ লোকে।
বড় লোকে তুচ্ছ ভাবে তোমারে সতত,
আত্মসম দেখে এই ভুবন বিতত।—

সংসারে আপন ভাবে যাহার হৃদয়,
তাঁর কাছে আত্ম পর সব সম হয়।
স্বার্থ ত্যজি করে যেই পরার্থ ঘটন,
সেই ত পুরুষসিংহ সংসারভূষণ;
স্বার্থ রেখে করে যেই পরার্থ সাধন,
সেও লোকে হতে পারে প্রশংসাভাজন।
স্বার্থ হেতু নাশ করে যেই পরহিত,
মানুষ রাক্ষস তারে বলাই উচিত;
নিরর্থক পর পীড়া করে যেই জন,
কি জানি কি বলে তারে সেজন কেমন।