কাদম্বরী (তারাশঙ্কর তর্করত্ন, ১৮৯২)/কথারম্ভ-১১
চন্দ্রাপীড় স্বভাবতঃ ধীরপ্রকৃতি হইয়াও কাদম্বরীর আদ্যোপান্ত বিরহবৃত্তান্ত শ্রবণে সাতিশয় অধীর হইলেন; এমন সময়ে প্রতীহারী আসিয়া কহিল, যুবরাজ! পত্রলেখা আসিয়াছে, এই সংবাদ শুনিয়া মহিষী পত্রলেখার সহিত আপনাকে অন্তঃপুরে প্রবেশ করিতে আদেশ করিলেন। অনেক ক্ষণ আপনাকে না দেখিয়া অতিশয় ব্যাকুল হইয়াছেন। চন্দ্রাপীড় মনে মনে কহিলেন, কি বিষম সঙ্কট উপস্থিত। এক দিকে গুরু জনের স্নেহ, আর দিকে প্রিয়তমের অনুরাগ। মাতা না দেখিয়া এক দণ্ড থাকিতে পারেন না, কিন্তু পত্রলেখার মুখে প্রাণেশ্বরীর যে সংবাদ শুনিলাম, ইহাতে আর বিলম্ব করা বিধেয় নয়। কি করি, কাহার অনুরোধ রাখি। এইরূপ চিন্তা করিতে করিতে অন্তঃপুরে প্রবেশিলেন। গন্ধর্ব্বনগরে কিরূপে যাইবেন দিন যামিনী এই ভাবনায় অতিশয় ব্যাকুল হইতে লাগিলেন। কতিপয় বাসর অতীত হইলে একদা বিনোদের নিমিত্ত শিপ্রানদীর তীরে ভ্রমণ করিতেছেন এমন সময়ে দেখিলেন, অতি দূরে কতকগুলি অশ্বারোহী আসিতেছে। তাহারা নিকটবর্ত্তী হইলে দেখিলেন অগ্রে কেয়ূরক, পশ্চাতে কতিপয় গন্ধর্ব্বদারক। রাজকুমার কেয়ূরককে অবলোকন করিয়া পরম পুলকিত হইলেন এবং প্রসারিত ভুজযুগল দ্বারা আলিঙ্গন করিয়া সাদর সম্ভাষণে কুশলবার্ত্তা জিজ্ঞাসিলেন। অনন্তর তথা হইতে বাটী আসিয়া নির্জ্জনে গন্ধর্ব্বকুমারীর সন্দেশবার্ত্তা জিজ্ঞাসা করাতে কহিল, আমাকে তিনি কিছুই বলিয়া দেন নাই। আমি মেঘনাদের নিকট পত্রলেখাকে রাখিয়া ফিরিয়া গেলাম এবং রাজকুমার উজ্জয়িনী গমন করিয়াছেন এই সংবাদ দিলাম। মহাশ্বেতা শুনিয়া ঊর্দ্ধে দৃষ্টিপাত ও দীর্ঘ নিশ্বাস পরিত্যাগ পূর্ব্বক কেবল এইমাত্র কহিলেন, হাঁ উপযুক্ত কর্ম্ম হইয়াছে। এবং তৎক্ষণাৎ গাত্রোত্থান করিয়া আপন আশ্রমে চলিয়া গেলেন। কাদম্বরী শুনিবামাত্র নিমীলিতনেত্র ও সংজ্ঞাশূন্য হইলেন। অনেক ক্ষণের পর নয়ন উন্মীলন করিয়া মদলেখাকে কহিলেন, মদলেখে! চন্দ্রাপীড় যে কর্ম্ম করিয়াছেন আর কেহ কি এরূপ করিতে পারে! এইমাত্র বলিয়া শয্যায় শয়ন করিলেন। তদবধি কাহারও সহিত কোন কথা কহেন নাই। পর দিন প্রভাত কালে আমি তথায় গিয়া দেখিলাম, কাদম্বরী সংজ্ঞাশূন্য, কেহ কোন কথা কহিলে উত্তর দিতেছেন না। কেবল নয়নযুগল হইতে অনবরত অশ্রুধারা পতিত হইতেছে। আমি তাঁহার সেইরূপ অবস্থা দেখিয়া অতিশয় চিন্তিত হইলাম এবং তাঁহাকে না বলিয়াই আপনার নিকট আসিয়াছি।
গন্ধর্ব্বকুমারীর বিরহবৃত্তান্ত শুনিতেছেন এমন সময়ে মূর্চ্ছা রাজকুমারের চেতন হরণ করিল। সকলে সসম্ভ্রমে তালবৃন্ত ব্যজন ও শীতল চন্দনজল সেচন করাতে অনেক ক্ষণের পর চেতন হইলেন। দীর্ঘ নিশ্বাস পরিত্যাগ পূর্ব্বক কহিলেন, কাদম্বরীর মন আমার প্রতি এরূপ অনুরক্ত তাহা আমি পূর্ব্বে জানিতে পারি নাই। এক্ষণে কি করি, কি উপায়ে প্রিয়তমার প্রাণ রক্ষা হয়! বুঝি, দুরাত্মা বিধি বিশৃঙ্খল ঘটনা ঘটাইয়া আমাকে মহাপাপে লিপ্ত ও কলঙ্কিত করিবার মানস করিয়াছে। এ সকল দৈববিড়ম্বনা সন্দেহ নাই। নতুবা নিরর্থক কিন্নরমিথুনের অনুসরণে কেন প্রবৃত্তি হইবে? অচ্ছোদসরোবরেই বা কেন যাইব? মহাশ্বেতার সঙ্গেই বা কেন সাক্ষাৎ হইবে? গন্ধর্ব্বনগরেই বা কি জন্য গমন করিব? আমার প্রতি কাদম্বরীর অনুরাগসঞ্চারই বা কেন হইবে? এ সকল বিধাতার চাতুরী সন্দেহ নাই। নতুবা, অসম্ভাবিত ও স্বপ্নকল্পিত ব্যাপার সকল কি রূপে সংঘটিত হইল? এইরূপ ভাবিতে ভাবিতে দিবাবসান হইল। নিশি উপস্থিত হইলে জিজ্ঞাসিলেন, কেয়ূরক! তোমার কি বোধ হয় আমাদিগের গমন পর্য্যন্ত কাদম্বরী জীবিত থাকিবেন? তাঁহার সেই পরম সুন্দর মুখচন্দ্র আর কি দেখিতে পাইব? কেয়ূরক কহিল, রাজকুমার! এই সংসারে আশাই জীবনের মূল। আশা আশ্বাস প্রদান না করিলে কেহ জীবিত থাকিতে পারে না। লোকেরা আশালতা অবলম্বন করিয়া দুঃখসাগরে নিতান্ত নিমগ্ন হয় না। আপনি নিতান্ত কাতর হইবেন না, ধৈর্য্যাবলম্বন পূর্ব্বক গমনের উপায় দেখুন। আপনি তথায় যাইবেন এই আশা অবলম্বন করিয়া গন্ধর্ব্বকুমারী কালক্ষেপ করিতেছেন, সন্দেহ নাই। অনন্তর রাজকুমার কেয়ূরককে বিশ্রাম করিতে আদেশ দিয়া কিরূপে গন্ধর্ব্বপুরে যাইবেন তাহাই চিন্তা করিতে লাগিলেন। ভাবিলেন যদি পিতা মাতাকে না বলিয়া তাঁহাদিগের অজ্ঞাতসারে গমন করি, তাহা হইলে কোথায় সুখ কোথায় বা শ্রেয়ঃ? পিতা যে রাজ্য-ভার দিয়াছেন সে কেবল দুঃখভার, প্রতিদিন পর্য্যবেক্ষণ না করিলে বিষমসঙ্কটের হেতুভূত হয়। সুতরাং তাঁহাকে না বলিয়া কি রূপে যাওয়া যাইতে পারে? বলিয়া যাওয়া উচিত; কিন্তু কি বলিব? গন্ধর্ব্বরাজকুমারী আমাকে দেখিয়া প্রণয়পাশে বদ্ধ হইয়াছেন, আমি সেই প্রাণেশ্বরী ব্যতিরেকে প্রাণ ধারণ করিতে পারি না, কেয়ূরক আমাকে লইতে আসিয়াছে, আমি চলিলাম, নিতান্ত নির্লজ্জ ও অসারের ন্যায় এ কথাই বা কি রূপে বলিব? বহুকালের পর বাটী আসিয়াছি; কি ব্যপদেশেই বা আবার শীঘ্র বিদেশে যাইব? পরামর্শ জিজ্ঞাসা করি এরূপ একটী লোক নাই। প্রিয়সখা বৈশম্পায়নও নিকটে নাই। এরূপ নানাপ্রকার চিন্তা করিতে করিতে রাত্রি প্রভাত হইল।
প্রাতঃকালে গাত্রোত্থান পূর্ব্বক বহির্গত হইয়া শুনিলেন, স্কন্ধাবার দশপুরী পর্য্যন্ত আসিয়াছে। শত শত সাম্রাজ্যলাভেও যেরূপ সন্তোষ না হয়, এই সংবাদ শুনিয়া তাদৃশ আহ্লাদ জন্মিল। হর্ষোৎফুল্ল নয়নে কেয়ূরককে কহিলেন, কেয়ূরক! আমার পরম মিত্র বৈশম্পায়ন আসিতেছেন, আর চিন্তা নাই। কেয়ূরক সাতিশয় সন্তুষ্ট হইয়া কহিল, রাজকুমার! মেঘোদয়ে যেরূপ বৃষ্টির অনুমান হয়, পূর্ব্বদিকে আলোক দেখিলে যেরূপ রবির উদয় জানা যায়, মলয়ানিল বহিলে যেরূপ বসন্ত কালের সমাগম বোধ হয়, কাশকুসুম বিকসিত হইলে যেরূপ শরদারম্ভ সূচিত হয়, সেইরূপ এই শুভ ঘটনা অচিরাৎ আপনার গন্ধর্ব্বনগরে গমনের সূচনা করিতেছে। গন্ধর্ব্বরাজকুমারী কাদম্বরীর সহিতও আপনার সমাগম সম্পন্ন হইবেক, সন্দেহ করিবেন না। কেহ কখন কি চন্দ্রমাকে জ্যোৎস্নারহিত হইতে দেখিয়াছে? লতাশূন্য উদ্যান কি কখন কাহারও দৃষ্টিপথে পতিত হইয়াছে? কিন্তু বৈশম্পায়ন আসিতে ও তাঁহার সহিত পরামর্শ করিয়া আপনার গন্ধর্ব্বনগরে যাত্রা করিতে বিলম্ব হইবে বোধ হয়। কাদম্বরীর যেরূপ শরীরের অবস্থা তাহা রাজকুমারকে পূর্ব্বেই নিবেদন করিয়াছি, অতএব আমি অগ্রসর হইয়া আপনার আগমনবার্ত্তা দ্বারা তাঁহাকে আশ্বাস প্রদান করিতে অভিলাষ করি।
কেয়ূরকের ন্যায়ানুগত মধুর বাক্য শুনিয়া চন্দ্রাপীড় পরম পরিতুষ্ট হইলেন। কহিলেন, কেয়ূরক! ভাল যুক্তিযুক্ত কথা বলিয়াছ। এতাদৃশী দেশকালজ্ঞতা ও বুদ্ধিমত্তা কাহারও দেখিতে পাওয়া যায় না। তুমি শীঘ্র গমন কর এবং আমাদিগের কুশল সংবাদ ও আগমনবার্ত্তা দ্বারা প্রিয়তমার প্রাণ রক্ষা কর। প্রত্যয়ের নিমিত্ত পত্রলেখাকেও তোমার সহিত পাঠাইয়া দিতেছি। পরে মেঘনাদকে ডাকাইয়া কহিলেন, মেঘনাদ! পূর্ব্বে তোমাকে যে স্থানে রাখিয়া আসিয়াছিলাম, পত্রলেখা ও কেয়ূরককে সমভিব্যাহারে লইয়া পুনর্ব্বার তথায় যাও। শুনিলাম বৈশম্পায়ন আসিতেছেন, তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করিয়া আমিও তথায় যাইতেছি! মেঘনাদ যে আজ্ঞা বলিয়া গমনের উদ্যোগ করিতে গেল। রাজকুমার কেয়ূরককে গাঢ় আলিঙ্গন করিয়া বহুমূল্যের কর্ণাভরণ পারিতোষিক দিলেন। বাষ্পাকুল লোচনে কহিলেন, কেয়ূরক! তুমি প্রিয়তমার কোন সন্দেশবাক্য আনিতে পার নাই, সুতরাং প্রতিসন্দেশ তোমাকে কি বলিয়া দিব। পত্রলেখা যাইতেছে ইহার মুখে প্রিয়তমার যাহা শুনিতে ইচ্ছা হয় শুনিবেন। পত্রলেখাকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, পত্রলেখে! তুমি সাবধানে যাইবে। গন্ধর্ব্বনগরে পঁহুছিয়া আমার নাম করিয়া কাদম্বরীকে কহিবে যে, আমি বাটী আসিবার কালে তোমাদের সহিত সাক্ষাৎ করিয়া আসিতে পারি নাই তজ্জন্য অত্যন্ত অপরাধী আছি। তোমরা আমার সহিত যেরূপ সরল ব্যবহার করিয়াছিলে আমার তদনুরূপ কর্ম্ম করা হয় নাই। এক্ষণে স্বীয় ঔদার্য্যগুণে ক্ষমা করিলে অনুগৃহীত হইব।
পত্রলেখা, মেঘনাদ ও কেয়ূরক বিদায় হইলে রাজকুমার বৈশম্পায়নের সহিত সাক্ষাৎ করিতে অতিশয় উৎসুক হইলেন। তাঁহার আগমন পর্য্যন্ত প্রতীক্ষা করিতে পারিলেন না। আপনিই স্কন্ধাবারে যাইবেন স্থির করিয়া মহারাজের আদেশ লইতে গেলেন। রাজা প্রণত পুত্ত্রকে সস্নেহে আলিঙ্গন করিয়া গাত্রে হস্তস্পর্শ পূর্ব্বক শুকনাসকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, অমাত্য! চন্দ্রাপীড়ের শ্মশ্রুরাজি উদ্ভিন্ন হইয়াছে। এক্ষণে পুত্ত্রবধূ-মুখাবলোকন দ্বারা আত্মাকে পরিতৃপ্ত করিতে বাঞ্ছা হয়। মহিষীর সহিত পরামর্শ করিয়া সম্ভ্রান্তকুলজাত উপযুক্ত কন্যা অন্বেষণ কর। মন্ত্রী কহিলেন, মহারাজ! উত্তম কল্প বটে! রাজকুমার সমুদায় বিদ্যা শিখিয়াছেন, উত্তম রূপে রাজ্য শাসন ও প্রজা পালন করিতেছেন। এক্ষণে নববধূর পাণিগ্রহণ করেন ইহা সকলের বাঞ্ছা। চন্দ্রাপীড় মনে মনে কহিলেন, কি সৌভাগ্য! গন্ধর্ব্বকুমারীর সহিত সমাগমের উপায়চিন্তাসমকালেই পিতার বিবাহ দিবার অভিলাষ হইয়াছে। এই সময় বৈশম্পায়ন আসিলে প্রিয়তমার প্রাপ্তিবিষয়ে আর কোন বাধা থাকে না। অনন্তর স্কন্ধাবারের প্রত্যুদ্গমনের নিমিত্ত পিতার আদেশ প্রার্থনা করিলেন। রাজাও সম্মত হইলেন। বৈশম্পায়নকে দেখিবার নিমিত্ত এরূপ উৎসুক হইয়াছিলেন যে, সে রাত্রি নিদ্রা হইল না। নিশীথ সময়েই প্রস্থানসূচক শঙ্খধ্বনি করিতে আদেশ দিলেন। শঙ্খধ্বনি হইবামাত্র সকলে সুসজ্জ হইয়া রাজপথে বহির্গত হইল। পৃথিবী জ্যোৎস্নাময়, চতুর্দ্দিক্ আলোকময়। সে সময় পথ চলার কোন ক্লেশ হয় না। চন্দ্রাপীড় দ্রুত বেগে অগ্রে অগ্রে চলিলেন। রাত্রি প্রভাত না হইতেই অনেক দূর চলিয়া গেলেন। স্কন্ধাবার যে স্থানে সন্নিবেশিত ছিল, প্রভাতে ঐ স্থান দেখিতে পাইলেন। গাঢ় অন্ধকারে আলোক দেখিলে যেরূপ আহ্লাদ জন্মে, দূর হইতে স্কন্ধাবার নেত্রগোচর করিয়া রাজকুমার সেইরূপ আনন্দিত হইলেন। মনে মনে কল্পনা করিলেন, অতর্কিত রূপে সহসা উপস্থিত হইয়া বন্ধুর মনে বিস্ময় জন্মাইয়া দিব।
ক্রমে নিকটবর্ত্তী হইয়া স্কন্ধাবারে প্রবেশিলেন। দেখিলেন কতকগুলি স্ত্রীলোক এক স্থানে বসিয়া কথা বার্ত্তা কহিতেছে। তাহাদিগকে জিজ্ঞাসা করিলেন, বৈশম্পায়ন কোথায়? তাহারা রাজকুমারকে চিনিত না; সুতরাং সমাদর বা সম্ভ্রম প্রদর্শন না করিয়াই উত্তর করিল কি জিজ্ঞাসা করিতেছ, বৈশম্পায়ন এখানে কোথায়? আঃ কি প্রলাপ করিতেছিস্ রোষ প্রকাশ পূর্ব্বক এই কথা বলিয়া রাজকুমার তাহাদিগের যৎপরোনাস্তি তিরস্কার করিলেন। কিন্তু তাঁহার অন্তঃকরণ নিতান্ত ব্যাকুল ও চঞ্চল হইয়া উঠিল। অনন্তর কতিপয় প্রধান সৈনিক পুরুষ নিকটে আসিয়া বিনীত ভাবে প্রণাম করিল। চন্দ্রাপীড় জিজ্ঞাসা করিলেন, বৈশম্পায়ন কোথায়? তাহারা বিনয়বচনে কহিল, যুবরাজ! এই তরুতলে শীতল ছায়ায় উপবেশন করুন, আমরা সমুদায় বৃত্তান্ত বর্ণন করিতেছি। তাহাদিগের কথায় আরও উৎকণ্ঠিত হইয়া জিজ্ঞাসিলেন, আমি স্কন্ধাবার হইতে বাটী গমন করিলে কি কোন সংগ্রাম উপস্থিত হইয়াছিল? কি কোন অসাধ্য ব্যাধি বন্ধুকে কবলিত করিয়াছে? কি অত্যহিত ঘটিয়াছে? শীঘ্র বল। তাহারা সসম্ভ্রমে কর্ণে করক্ষেপ করিয়া কহিল না, না, অত্যহিত বা অমঙ্গলের আশঙ্কা করিবেন না। রাজকুমার প্রথমে ভাবিয়াছিলেন বন্ধু জীবদ্দশায় নাই; এক্ষণে সে ভাবনা দূর হইল ও শোকাশ্রু আনন্দাশ্রু রূপে পরিগণিত হইল। তখন গদ্গদ বচনে কহিলেন, তবে বৈশম্পায়ন কোথায় আছেন, কি নিমিত্ত আসিলেন না? তাহারা কহিল, রাজকুমার! শ্রবণ করুন।