চণ্ডিকা-মঙ্গল/ত্রয়োদশ অধ্যায়

ত্রয়োদশ অধ্যায়।

দেবী মাহাত্ম্য।

মুনি বলে মহারাজ দেবী বিবরণ।
কহিলাম এক মনে করিবা শবণ॥
অম্বিকার প্রভাবে যে স্থির থাকে ক্ষিতি।
যোগ নিদ্রা মহাবিদ্যা খ্যাত ভগবতী॥
তুমি আর এই বৈশ্য অত্যন্ত দুঃখিত।
দুঃখ দূর হবে কার্য্য করহ উচিত॥
সেই কার্য্য বলি শুন স্মরহ ঈশ্বরী।
রাজ্য আর মুক্তিপদ পাবে অধিকারী॥
শুনিয়া মুনির কথা সুরথ রাজন।
দেবী পূজা আরম্ভিল করি প্রাণপণ॥
উভয়ের দুঃখ নিবারণের কারণ।
বৈশ্য সহ রাজা করে দেবী আরাধন॥
রাজা বৈশ্য নদীতীরে হইয়া যে স্থিতি।
একাগ্র হৃদয়ে পূজে দেবী ভগবতী॥
দেবী মূর্ত্তি মৃত্তিকাতে করিয়া গঠন।
ধূপ দীপ দিয়া করে চণ্ডিকা অর্চ্চন॥
নিরাহার শুচিভূত হ’য়া দুইজন।
অঙ্গ কাটি রুধির যে করয়ে অর্পণ॥

এই রূপে দেবী স্তুতি করে দুইজন।
ত্রিবৎসর পরে দেবী দিলা দরশন॥
উচ্চৈঃস্বরে বলে শুন বৈশ্য নরপতি।
শুনিয়া সন্তুষ্ট আমি তোমাদের স্তুতি॥
দিব আমি যেই বর কর অভিলাষ।
অকপট চিত্তে কহি করিহ প্রকাশ॥
রাজা বলে শত্রু হ’তে রাজ্য কর দান।
বৈশ্যেতে প্রার্থনা করে দেও মোরে জ্ঞান॥
দেবী বলে অপেক্ষা করিয়া অল্পকাল।
শত্রুকে বধিয়া রাজ্য পাবে মহীপাল॥
অতঃপর বৈশ্য প্রতি ভগবতী কয়।
মম বরে তব হৃদে হবে জ্ঞানোদয়॥
বৈশ্য আর রাজাকে করিয়া বরদান।
জগত ঈশ্বরী তবে হ’লা অন্তর্ধান॥
সুরথ হইল মনু ভূবন মণ্ডল।
কাঙ্গাল ভৈরব রচে চণ্ডিকা মঙ্গল॥
এই বর চাহি মাগো জগতের আই।
অন্তকালে দিও মাগো শ্রীচরণে ঠাঁই॥
গুপ্ত ভৈরব নামে নহি পরচিত।
প্রকাশ্য শ্রী রাধাচরণ পদ্ধতি রক্ষিত॥
ভরদ্বাজ গোত্র মম ত্রিপ্রবর ইতি।
জোয়ারা গ্রামেতে হয় দীনের বসতি॥

ইতি শ্রীমার্কণ্ডেয় পুরাণে সাবর্ণিক মন্বন্তরে

দেবী মাহাত্ম্য

সমাপ্ত।