মদন ও বসন্ত
মদন

আমি পঞ্চশর, সখা— এক শরে হাসি,
অশ্রু এক শরে; এক শরে আশা, অন্য
শরে ভয়; এক শরে বিরহমিলন
আশাভয় দুঃখসুখ এক নিমেষেই।

বসন্ত

শ্রান্ত আমি, ক্ষান্ত দাও সখা! হে অনঙ্গ,
সাঙ্গ করো রণরঙ্গ তব। রাত্রিদিন
সচেতন থেকে তব হুতাশনে আর
কতকাল করিব ব্যজন! মাঝে মাঝে
নিদ্রা আসে চোখে, নত হয়ে পড়ে পাখা,
ভস্মে ম্লান হয়ে আসে তপ্তদীপ্তিরাশি।
চমকিয়া জেগে আবার নূতন শ্বাসে
জাগাইয়া তুলি তার নব-উজ্জ্বলতা।
এবার বিদায় দাও সখা।

মদন

জানি তুমি
অনন্ত অস্থির, চিরশিশু। চিরদিন

বন্ধনবিহীন হয়ে দ্যুলোকে ভূলোকে
করিতেছ খেলা। একান্ত যতনে যারে
তুলিছ সুন্দর করি বহুকাল ধ’রে,
নিমেষে যেতেছ তারে ফেলি ধূলিতলে
পিছে না ফিরিয়া। আর বেশি দিন নাই,
আনন্দচঞ্চল দিনগুলি লঘুবেগে
তব পক্ষ-সমীরণে হুহু করি কোথা
যেতেছে উড়িয়া চ্যুত পল্লবের মতো।
হর্ষ-অচেতন বর্ষ শেষ হয়ে এল।