বরষণ।

নীরব আঁধার, নীরব হইয়ে,
দাঁড়ায়ে রয়েছে ধারে;
হাসিতেছে যেন ভ্রুকুটির সাথে,
প্রলয় পিনাক রূপে।
গাঢ় মেঘদল, আর গাঢ়তর,—
ছাইল গগন কোলে;
চকিত্তে মোহিয়ে, চকিতের সাথে,
হরষে দামিনী খেলে!

দিগ্‌ দিগঙ্গনা, বিস্মিত নয়নে
হেরিছে তরাসে যেন!
এলো চুল তার, কপোল ঢাকিয়ে,
কি জানি পড়েছে কেন।
প্রশান্ত মুখেতে, প্রশান্ত ছায়াটী,
মধুরে ফুটেছে তার;–
হেরে কবিজন, পায় নিজ মন,
শোধে জীবনের ধার!

কাঁপিল হটাৎ;কড় কড় বাজ—
রোষেতে পড়িল দুবে;

ক্ষিপ্তপ্রায় হ’য়ে, যেন চারি দিকে,
প্রতিধ্বনি গেল ছুটে।
তরাসে আমনি, প্রশান্ত বালিকা,—
তরাসে লুকাল কোথা!
স্তম্ভিতের মত, কিছুক্ষণ মোর,
নয়নে লাগিল আঁধা!

সহসা অদূরে, দেখি চাহিয়ে,
হরষে খেলছে বালা!
ময়ূর ময়ূরী, দুধারে দাঁড়ায়ে,—
কানন করেছে আলা।
ঝুরু ঝুরু করি, পড়িতেছে বারি,
তিতিয়া দুকুল-বাস;
স্বর্ণ-আভরণ, মরি কি শোভন,
খেলিছে মোহিনী হাস!