আনন্দ-বাণী

হৃদয়ের সরোবরে নীরবে নিয়ত ভরে
তব প্রেম, হে প্রেম নিলয়!
অমৃতের উৎস তুমি আর্দ্র কর মরুভূমি,
স্বরূপ দেখাও কৃপাময়!
তোমার প্রেমের স্রোত করিয়াছে ওতঃপ্রোত
প্রিয় তব ভকতের প্রাণ,
ছিনু আমি অকিঞ্চন তুমি দেছ সর্ব্বধন,
আমি কিবা দিব প্রতিদান।

সকল ভক্তের পিছে। আছি আমি সব নীচে
হে দেবতা! সত্য সনাতন!
পরম পরশ দিয়া তনু মন গলাইয়া
গ্লানি তাপ কর বিমোচন।
চিন্তার অতীত যাহা চিন্তা কর তুমি তাহা
চিন্তামণি! অমিয়-সাগর!
সর্ব্বকালে-স্বপ্রকাশ! মিনতি করিছে দাস
যোগ্য স্তুতি শিখাও শঙ্কর!
অনন্ত আনন্দ-সুধা! নাহি ক্ষোভ নাহি ক্ষুধা
নাহি ক্ষয়, নাহি নাহি ক্ষতি,
প্রলয় অনল মাঝে মহিমায় স্থানু রাজে,
শূন্যমাঝে পূর্ণ পরিণতি।
বাঁধ্‌ যত অবহেলে ভেঙে ফেলে তুমি এলে
হিয়াতলে বন্যার মতন,
আমাতে করিলে বাস! এর বেশী কোন্ আশ
করিব তোমারে নিবেদন?
ক্ষিতি-জল-অগ্নি-বায়- ব্যোমে বিস্তারিয়া কায়
ভূতের অতীত ভূতনাথ!
তোমারে দেখেছি আজ আমি সর্ব্ব-ভূত-মাঝ
সুপ্রভাত! আজি সুপ্রভাত।
তুমি ধারা চেতনার জীবনের পারাবার,
কে জানে হে তব বিবরণ!

আমার তিমির নাশ করিলে হে স্বপ্রকাশ!
সূর্য্য সম বিতরি’ কিরণ।
রশ্মিময়, পিঙ্গ জট, তুমি হে অনাদি বট,
সূর্য্য, তারা, পৃথ্বী তব ফল;
বারিগর্ভ হুতাশন! কেবা পর? কে আপন?
বল মোরে, নিখিল-সম্বল!
আমারে গ্রহণ করি’ নিজেরে সঁপিলে, মরি;
কে জিতিল? তোমারে সুধাই,
আমারি অন্তরে ঘর বাঁধিলে, হে মহেশ্বর;
কুলাল না ত্রিভুবনে ঠাঁই!

মাণিক্কবাচকর।