তীর্থ-সলিল/বৈরাগ্যোদয়

বৈরাগ্যোদয়।

বনের মধ্যে আমের বৃক্ষ দেখিলাম সুবিশাল,
শ্যামল তাহার পল্লব-ছায়া, ফল তা’র সুরসাল;
পথিকেরা এসে ফলের লালসে ভাঙিয়া ফেলিল শাখা!
হৃদয় কহিল—‘সংসার মাঝে আর শ্রেয় নয় থাকা।’
চিকণ দু’খানি সোনার কাঁকণ পরিল যখন নারী,
শব্দ হ’ল না বিন্দু মাত্র; হায়, কিছু পরে তারি
কাঁকণে কাঁকণ ঠেকিল যেমন দ্বন্দ উঠিল বাজি’!
হৃদয় কহিল ‘আর কেন? চল, সংসার সুখ ত্যজি’!
পক্ষীর দলে এসে পড়েছিল ভিন্ন দলের পাখী,
মুখে ছিল তা’র খাদ্যের ভার, তায় ছিল সে একাকী;

চঞ্চু আঘাতে সকলে মিলিয়া ব্যস্ত করিল তা’রে!
হৃদয় কহিল ‘পালাও, পালাও, কাজ নাই সংসারে।”
মসৃণ দেহ, উচ্চ ককুদ, উদ্ধৃত, বলবান
বৃষ চলিয়াছে; ভয়ে তার কাছে কেহ নহে আগুয়ান;
সে করিল এক ধেনুর কামনা,—অমনি শৃঙ্গাঘাত!
আমি লইলাম ভিক্ষাপাত্র; সংসারে প্রণিপাত।

বৌদ্ধজাতক গ্রন্থ।