তীর্থ-সলিল/লামার গান
লামার গান।
আকাশের পথে রবি শশী ধায়
সোহাগে ধরায় বেড়িয়া ধরে,
বিধাতার দীপ আলো করে দিক্
কিবা দক্ষিণে কি উত্তরে;
সে আলোকে সুখে ভাসে নরলোক,—
তা’রে কি কুকাজে মলিন করে?
সুদূর পূরবে আবরি’ আকাশ
তুষার শীর্ষ জাগে শিখরী,
গগন শয়ান তা’রি গহ্বরে
হিংসা বিরত ফিরে কেশরী;
সে ত’ নহে ক্রুর, হে শীত বাতাস,
তবে কেন হও তাহার অরি?
দখিণ বনের রাণী সে বাঘিনী
সকল শ্বাপদ অধীন তা’র,
যখন সাহসে জনপদে পশে
শোভা গৌরব ধরে না আর;
হে বসুন্ধরা! মঙ্গল-করা!
অপকার যেন না হয় তার।
পশ্চিমে,—হ্রদে অগাধ সলিলে
নানা জীব সুখে নৃত্য করে,
সোনালী দু’ চোখ তুলে ভেসে চলে
দেখিবারে দূর রত্নাকরে;
বাঁকা বঁড়্শী কি ছলভরা জালে
তা’রা যেন কভু ধরা না পড়ে।
উদীচি শিখরে পাহাড়ের নীড়ে
গৃধ্র বিহরে পাখীর চূড়া,
সে নহে দস্যু নহে নরঘাতী,
তুষ্ট সে পেলে ক্ষুদ্ কি কুঁড়া;
বিষ মাখা বাণ পেয়ে সন্ধান
গরিমা যেন গো না করে গুঁড়া;
লামা মিললাপা ইহাদের মাঝে
এই গহ্বরে বসতি করে,
রচে গান, জপ-চক্র ঘুরায়
নিখিল জীবের হিতের তরে;
নিশাচরী কোনো যাদুকরী যেন
ভ্রষ্ট না করে ভিক্ষুবরে।