নাবিক-বধূ/চতুর্থ পরিচ্ছেদ

চতুর্থ পরিচ্ছেদ

ফেরিওয়ালাকে তৎক্ষণাৎ ভিতরে ডাকিয়া আনা হইল। লোকটার পরিচ্ছদের বৈচিত্র্য ছিল, সে ফেরিওয়ালা হইলেও ভারতীয় ফকিরের মত তাহার পরিচ্ছদ—তাহার অঙ্গে একটি প্রকাণ্ড আলখাল্লা, গলায় ফুতি ও স্ফটিকের মালা, মাথায় দরবেশের মত চুল,অথচ কাঁধে পণ্যদ্রব্যপূর্ণ বোঁচকা। ডড্‌লে বলিলেন, “ফেরিওয়ালারা কখনও এরূপ পরিচ্ছদে বাহির হয় না, আমি দীর্ঘকাল ভারতবর্ষে ছিলাম,ইহার ফকিরের পোষাক দেখিয়াই আমার সন্দেহ হয় —এ কখন আসল ফেরিওয়ালা নহে। এতদ্ভিন্ন উহার চক্ষু দুইটি দেখিয়াও উহাকে চিনিয়াছিলাম।”

 সামওয়েলি তাহার কাঁধের বোঁচকা নামাইয়া রাখিয়া মিঃ স্পরফিল্ডকে অভিবাদন করিল, মিঃ স্পরফিল্ড তাহাকে বলিলেন, “সামওয়েলি, ছদ্মবেশে তোমাকে প্রথমে চিনিতে পারি নাই, তোমার বাহাদুরী আছে।তুমি শীঘ্র ফিরিয়াছ দেখিয়া বড়ই আনন্দিত হইয়াছি, আশা করি কোন নূতন খবর দিতে পারিবে।

 সামওয়েলি বলিল, “হাঁ, কিছু কিছু নূতন খবর সংগ্রহ করিয়া আনিয়াছি বৈ কি। আমি আমেদ বে-হাসেনকে দেখিয়া আসিয়াছি, সেই কুত্তির বাচ্চা কি মতলব অটিয়াছে, তাহাও জানিতে পারিয়াছি।

 স্পরফিল্ড বলিলেন, “বটে তাহার বোটখানি এখন কোথায় নোঙ্গর করিয়াছে?

 সামওয়েলি বলিল, “তাহার ‘ধাও’ (বোট) মাজাজিম উপসাগরে নোঙ্গর করিয়া আছে॥

 ডড্‌লে বলিলেন, “সে যে মোজাম্বিক হইতে বহুদুর। সে এই অঞ্চল ইতে যাত্রা না করিয়া মাজাজিম উপসাগরে আড়াইয়াছে কেন বলিতে পার? আমি তাহার গতিবিধির প্রতি লক্ষ্য রাখিয়াছি ইহা কি সে জানিতে পারিয়াছে?”

 সামওয়েলি বলিল, “ইংরাজের জাহাজ তাহার ‘ধাও’ আক্রমণ করিতে পারে, এই ভয়ে সে মুহিবিদিতে (মোজাম্বিকে) আসে নাই।”

 সামওয়েলির কথা শুনিয়া ডড্‌লে অতান্ত উৎকণ্ঠিত হইলেন, সে যদি মোজাম্বিকে না আসে, তাহা হইলে তাঁহার সকল চেষ্টা বিফল হইবে। ডড্‌লে ব্যগ্রভাবে সামওয়েলিকে বলিলেন, “আমেদ বেন-হাসেন কি আমার মতলব জানিতে পারিয়াছে?”

 সামওয়েলি মাথা নাডিয়া বলিল, “হাঁ হুজুর, তাহা জানিতে পারে নাই, তবে সে এ সন্ধান পাইয়াছে যে, ইংরাজ মুহিবিদিতে উপস্থিত হইয়াছেন।”

 ডড্‌লে বলিলেন, “আমি এখানে আসিয়াছি তাহা সে কিরূপে জানিতে পারিল?”

 সামওয়েলি বলিল, “তাহা জানি না হুজুর! —তবে সে যে ইহা জানিতে পারিয়াছে, এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই। খোদার ফজলে আমরা এই কুত্তাটাকে ‘জবে’ করিব, এ কথা স্থির জানিবেন। হুজুর কি এখনও তাঁহার ‘ধাও’ ধরিতে যাইবার জন্য উৎসুক আছেন?”

 মিঃ ডড্‌লে বলিলেন, “হাঁ, তোমার কথা শুনিয়াও আমার সঙ্কল্প ত্যাগ করি নাই। কিন্তু আমি এখানে আসিয়াছি শুনিয়া সে ত আর এ অঞ্চলে আসিতেছে না, এ অবস্থায় কিরূপে আমার আশা পুর্ণ হইবে?”

 সামওয়েলি বলিল, “আমি এথানে আসিতে-আসিতে সে কথা চিন্তা করিয়াছি, উপায়ও স্থির করিয়াছি। এই আমেদ বেন্-হাসেনটা একটা মস্ত বেয়াকুফ্, বেয়াকুফের বেটা বেয়াকুফ্। সে মনে করে তাহার মত চতুর লোক দুনিয়ায় আর কেহ নাই, কিন্তু শীঘ্রই সে জানিতে পরিবে— তাহার অপেক্ষাও চতুর লোক আছে। সে যখন তাহার ‘ধাও’ লইয়া যাত্রা করিবে—তখন সে দশজন খালাসী লইবে, আমি যে তাহার খালাসীদের মধ্যে একজন, তাহা সে বুঝিতে পারে নাই, কিন্তু আমাকে অতি সাবধানে এই কাযটি লইতে হইবে, নতুবা সকল চেষ্টাই বৃথা হইবে।”

 ডড্‌লে বলিলেন,”তুমি বেশ ভাল কথাই বলিয়াছ, কিন্তু আমি কি কৌশলে তাহার সঙ্গ লইব, তাহা ত বলিলে না।”

 সামওয়েলি বলিল, “সেজন্য আপনি চিন্তা করিবেন না, আমি সমস্ত ঠিক করিয়া দিব। আমেদ বেন্-হাসেন অদৃষ্টবাদী, তাহার কুসংস্কারের অন্ত নাই। ইহা আমাদের পক্ষে বড়ই সুবিধার কথা। আরবদের বিশ্বাস, যে সকল লোকের মাথা খারাপ, তাহাদের দেখিলে যাত্রা সফল হয়, আমেদেরও এইরকম সংস্কার আছে।”

 ডড্‌লে স্পরফিল্ডকে বলিলেন, “ব্যাপারখানা কতকটা বুঝিতে পারিতেছি। শুনিয়াছি আরবেরা কোন কার্য্যসিদ্ধির উদ্দেশ্যে যাত্রা করিবাব সময় যদি পথিমধ্যে কোন উন্মাদ বা বিকৃতমস্তিষ্ক লোককে দেখিতে পায়, তাহা হইলে মনে করে তাহার আশা পূর্ণ হইবে। সামওয়েলি বোধ হয় সেই কথাই বলিতেছে।”—অনন্তর তিনি সামওয়েলিকে বলিলেন, “তুমি কি আমেদ বেন- হাসেনকে এ কথা বলিয়াছিলে?”

 সামওয়েলি বলিল, “হাঁ হুজুর, আমি দরবেশের ছদ্মবেশে সেই কুত্তার সহিত দেখা করিয়াছিলাম, তাহাকে বলিয়াছি যাত্রাকালে কোন দেওয়ানার সহিত সাক্ষাৎ হইলে তাহার কার্য্যসিদ্ধি। আমাদের মতলব হাসিল করিবার জন্যই এই চাল চালিয়াছি।”

 ডড্‌লে বলিলেন, “তুমি খুব ভাল চাল চালিয়াছ, ইহা অপেক্ষা ভাল ফন্দী আর কিছুই নাই, সামওয়েলি, তুমি বড বুদ্ধিমান। তোমার মতলব বুঝিয়াছি, আমি পাগল সাজিয়া তাহার সম্মুখে যাই-ইহাই বোধ হয় তোমার ইচ্ছা। “কিন্তু আমি কি করিয়া পাগল সাজিব? মিঃ স্পরফিল্ড, আপনি কোন উপায় স্থির করিতে পারেন?”

 মিঃ স্পরফিল্ড বলিলেন,”চতুর সামওয়েলিই সে কথা তোমাকে বলিয়া দিবে। এ সকল বিষয়ে তাহার মাথা খুব পরিষ্কার।”  ডড্‌লে সামওয়েলিকে এই প্রশ্ন করিলে সে বলিল, “কাযটা আপনার পক্ষে কিছুমাত্র কঠিন হইবে না, কিন্তু হুজুর যদি আরবী না জানেন, তাহা হইলে মুস্কিলের কথা বটে।”

 ডড্‌লে বলিলেন, “আমি আরবীতে কথা কহিতে পারি বটে, কিন্তু আমেদ বেন-হাসেনের মত তাডাতাডি বলিতে পারি না, তবে পাগলের মুখ দিয়া যতটুকু আরবী বাহির হইতে পারে—তাহা পারিব। কি করিতে হইবে?”

 সামওয়েলি বলিল, “কোরাণের কোন ‘বয়েৎ’ আপনার মুখস্ত আছে কি?”

 ডড্‌লে তৎক্ষণাৎ আসল মৌলবীর মত দুলিতে-দুলিতে কোরাণের একটি ‘বয়েৎ' আবৃত্তি করিলেন। বয়েৎটি তিনি এরূপ শুদ্ধরূপে উচ্চারণ করিলেন যে, সামওয়েলি তাহাকে বাহবা না দিয়া থাকিতে পারিল না, মিঃ স্পরফিণ্ড বিস্ময়-বিস্ফারিত নেত্রে তাঁহার মুখের দিকে চাহিয়া রহিলেন, তাহার পর বলিলেন, “তুমি ত চমৎকার অভিনয় করিতে শিখিয়াছ। কোথায় শিখিলে?”

 ডড্‌লে বলিলেন, “কায়রো নগরে। আমি সেখানে মধ্যে মধ্যে ভিক্ষাজীবি দরবেশদের গান শুনিতাম, এবং তাহা লিখিয়া লইয়া মুখস্ত করিতাম।—কেমন সামওয়েলি ঠিক হইয়াছে ত?”

 সামওয়েলি বলিল, “হাঁ হুজুর, ইহাতেই চলিবে।—এখন ভোল বদলাইবার কি ব্যবস্থা হইবে বলুন। পোষাক আর চামডা এই দুইটিই বদল করা আবশ্যক।”

 ডড্‌লে সবিস্ময়ে বলিলেন, “চামডা বদল করিতে হইবে?—ইহা ত সম্ভব নহে।”

 সামওয়েলি বলিল, “ওয়াজুঙ্গুর (ইংরাজের) চামড়া বড শাদ, শাদা চামডা লইয়া আপনি কিরূপে আমেদ বেন-হাসেনের—'ধাও'র উপর উঠিবেন? ধরা পডিবেন যে। আপনার রঙ কালো করিতে হইবে, এবং আরবের ছদ্মবেশ ধারণ করিতে হইবে।”

 ডড্‌লে হাসিয়া বলিলেন, “আমাকে পাগল আরব সাজিতে হইবে, তুমি কি আমাকে সাজাইতে পারিবে?—রঙ চাই, পোষাক চাই, সে সকল ত জোগাড় করিতে হইবে।”

 সামওয়েলি বলিল, “এ আর শক্ত কায কি? সে সব আমার কাছেই আছে, আমি সংগ্রহ করিয়া আনিয়াছি,”

 সামওয়েলি তৎক্ষণাৎ তাহার বোঁচ্কা খুলিয়া একটি ছিন্ন ও বিবর্ণ পরি- চ্ছদের পুঁটুলি বাহির করিল, তাহার পর একটা বোতল বাহির করিল, বোতলে এক রকম কালো আরোক ছিল –এই জিনিসগুলি সে ডড্‌লের পদ- প্রান্তে রাখিয়া দিল।

 ডড্‌লে বলিলেন, “ছদ্মবেশ ধারণের ব্যবস্থা ত করিলে, কিন্তু অন্যান্য ব্যবস্থাও করিতে হইবে। আমেদ বেল্‌-হাসেনের ‘ধাও’ যেখানে আছে—আমি সেখানে কিরূপে যাইব? আর কিরূপেই বা তাহার অলক্ষ্যে সেই বোটে উঠিব?”

 সামওয়েলি বলিল, “একটা উপায় আছে। আপনি সমুদ্রের কূলে-কূলে চলিয়া ধাওর নিকট উপস্থিত হইবেন, এবং ‘ধাও’খানি যখন নোঙ্গর তুলিবে তখন সাতার দিয়া তাহাতে উঠিবেন। আমেদ বেন-হাসেন খোদার ‘দোয়া’ প্রার্থনা করিবে, আপনাকে তাহার ধাওর উপর দেখিলেই সে বুঝিবে, আল্লা তাহার প্রার্থনায় কর্ণপাত করিয়াছেন। আমি সে সকল ব্যবস্থা করিব।”

 মিঃ স্পরফিল্ড বলিলেন, “ধাওখান কোন সময়ে নোঙ্গর তুলিবে,—অগ্রে তাহা জানা আবশ্যক, তদনুসারে উনি এথান হইতে যাত্রা করিবেন।”

 সামওয়েলি বলিল, “সকালে বাতাস উঠিলে ‘ধাও’ ছাড়িবে।”

 মিঃ ডড্‌লে বলিলেন, “উত্তম, ঠিক সময়ে আমি সেখানে হাজির থাকিব। এখন আর একটা কথা জানিতে চাই, অস্ত্রশস্ত্র কিছু সঙ্গে থাকা আবশ্যক, তাহার কি ব্যবস্থা হইবে? আমেদ বেন্ হাসেন জাহাজ হইতে মালগুলি ‘ধাও'র উপর তুলিলে আমাদের অস্ত্রের আবশ্যক হইবে।—তুমি বন্দুক চালাইতে জান?

 মিঃ স্পরফিল্ড বলিলেন, “সামওয়েলি পাকা গোলন্দাজ।—উহার লক্ষ্য অব্যর্থ। উহার হস্তে অনায়াসেই বন্দুক দিতে পার।” ডড্‌লে বলিলেন, “তাহা হইলে এখনই উহাকে একটা বন্দুক দিয়া রাখি, ‘ধাও'র উপরে গিয়া পুনর্ব্বার উহার সহিত আমার সাক্ষাৎ হুইবে, তৎপূর্ব্বে দেখা হইবার সম্ভাবনা নাই।”

 মিঃ ডড্‌লে তৎক্ষণাৎ একটি কক্ষে প্রবেশ করিয়া একটি উৎকৃষ্ট পিস্তল ও কতকগুলি টোটা লইয়া আসিলেন, এবং তাহা সামওয়েলির সম্মুখে রাখিয়া বলিলেন, “এগুলি তুমি লইয়া যাও, বেন-হাসেন যেন জানিতে না পারে যে— তোমার কাছে হাতিয়ার আছে। খুব গোপনে রাখিবে। আমাদের আত্মরক্ষার জন্যও অস্ত্র-শস্ত্রের আবশুক হইতে পারে।”

 স্পরফিল্ড বলিলেন, “পরমেশ্বর তোমাকে নিরাপদে রাখুন। তুমি নির্ব্বিঘ্নে জাঞ্জিবারে উপস্থিত হইয়াছ, এ সংবাদ না পাওয়া পর্য্যন্ত আমার মন স্থির হইবে না। সামওয়েলি, তুমি যদি কায হাসিল করিতে পার—তাহা হইলে তোমাকে অন্নবস্ত্রের জন্য আর কখন ভাবিতে হইবে না, একদম্ বড় লোক হইয়া যাইবে। কিন্তু যদি বিশ্বাসঘাতকতা কর—তাহা হইলে তোমার খোদাও তোমাকে রক্ষা করিতে পারিবেন না। খুব হুঁসিয়ার থাকিবে। নিমকহারামী করিলে কি রকম শাস্তি পাইতে হয়, তাহা ত জান, বেনার কথা কি এত শীঘ্র ভুলিয়াছ?”

 সামওয়েলি বলিল, “না, সে কথা ভুলি নাই, আপনাদের কোন ভয় নাই। আমেদ বেন্-হাসেন আমার কিরূপ শক্র তাহা আপনারা জানেন না, তাহাকে জব্দ করিবার জন্যই আমি আপনাদের সাহায্য করিতে যাইতেছি। তবে আর নিমকহারামীর ভয় করিতেছেন কেন?—সে আমার ভাইকে খুন করিয়াছে, আমি তাহাকে খুন করিতে না পারিলে আমার মন স্থির হইবে না। আপনার দোস্ত মুহিবিদিতে ফিরিয়া আসিলে আপনি আমার বক্শিশের ব্যবস্থা করিবেন, কিন্তু স্থির জানিবেন, আমি বকশিশের লোভে এ কাযে হাত দিই নাই। প্রতিহিংসার আগুনে আমার কলিজা জ্বলিয়। যাইতেছে।”

 মিঃ স্পরফিণ্ড বলিলেন, “তোমার কথা আমি বিশ্বাস করিলাম। যে অত্যা- চারের প্রতিফল দিতে না পারে সে কি মানুষ?”  সামওয়েলি তাহাঁদের নিকট বিদায় গ্রহণ করিলে তাঁহারা নিস্তব্ধভাবে ধূমপান করিতে লাগিলেন। অনেকক্ষণ পরে মিঃ স্পরফিল্ড ডড্‌লেকে বলিলেন, “ডড্‌লে, তুমি ত সকল কথা শুনিলে, কাযটা কত বড় বিপজ্জনক তাহাও বেশ বুঝিতে পারিয়াছ, এখন বল, এ সকল জানিয়া-শুনিয়াও কি এই কার্যো প্রবৃত্ত হইতে তোমার আগ্রহ হইতেছে?”

 ডড্‌লে সোৎসাহে বলিলেন, “নিশ্চয়ই। আপনি কি মনে করেন—আমি যে ভার গ্রহণ করিয়াছি, প্রাণভয়ে তাহা হইতে প্রতিনিবৃত্ত হইব? আমাকে সেরূপ কাপুরুষ মনে করিবেন না। বিপদই পুরুষের ভাগ্য-পরীক্ষার কষ্টি- পাথর।”

 স্পরফিল্ড বলিলেন, “খুব সাবধানে থাকিও, অতিরিক্ত উৎসাহ প্রকাশ করিতে গিয়া অনর্থক বিপন্ন হইও না। আমেদ বেন-হাসেন অত্যন্ত নিষ্ঠুর, অতি ভীষণ প্রকৃতির লোক, যদি তোমার প্রতি তাহার বিন্দুমাত্র সন্দেছ হয়, তাহা হইলে সে অসঙ্কোচে তোমাকে হত্যা করিবে। মশা মাছি মারিতে যত- টুকু বিলম্ব হয়—সে ততটুকুও বিলম্ব করিবে না।”

 ডড্‌লে বলিলেন, “তাহা আমি জানি, জানি বলিয়াই আমি যথাসাধ্য দক্ষতার সহিত পাগলের অভিনয় করিব। আশা করি তাহাতে কৃতকার্য্য হইব।”

 স্পরফিল্ড বলিলেন, “তোমার কথা শুনিয়া আশ্বস্ত হইলাম। এখন বিদায়। তুমি শয়ন করিতে যাও, কিন্তু আমাকে অনেক রাত্রি জাগিতে হইবে, হাতে বিস্তর কায আছে।”

 ডড্‌লে স্পরফিল্ডের নিকট বিদায় লইয়া শয়ন করিতে চলিলেন।