নীতিকণা/অহঙ্কার
অহঙ্কার
উচ্চ বংশে জন্ম ব’লে কেন গর্ব্ব কর?
ধন আছে ব’লে কেন অহঙ্কারে মর?
বংশ, পদ, মান, ধন, সকলি অসার,
মিছে সেই সকলের কর অহঙ্কার।
ধরিয়া ভীষণ মূর্ত্তি শমন যখন,
প্রসারিবে দুই কর সংহার কারণ।
ধন, মান, পদ আদি থাকিবে কোথায়?
তাহারা কি বাঁচাইতে পরিবে তোমায়?
তা’দের তরেই হও মহা যত্নবান,
জান না কি সে সকল ছায়ার সমান?
শমনের আলিঙ্গন বড়ই ভীষণ,
তা হ’তে নিস্তার কি হে পায় কোন জন?
তপনের তাপে যা’রা পরিশ্রম করে,
লালায়িত সদা যা’রা উদরের তরে।
তা’দিগে যে মূর্ত্তি ধ’রে সংহারে শমন,
সেই মূর্ত্তি ধ’রে হরে অন্যেরো জীবন।
এ জগতে তা’র কাছে সমান সবাই,
ছোট বড় ব’লে কা’রো বিভিন্নতা নাই।
সসাগরা ধরা জয় করি বাহুবলে,
যশের পতাকা যেই তুলে ভূমণ্ডলে।
বীরত্বে উপমা যা’র নাহিক ধরায়,
মণির মুকুট শোভে যাহার মাথায়।
যা’র পদ শত শত নৃপতি পূজিত,
তাহাকেও হ’তে হয় কাল-কবলিত।
পরাক্রমে পৃথিবী যে করিয়াছে জয়,
মৃত্যুর নিকটে সেও পরাজিত হয়।
নয়ন মুদিলে ভবে কেবা বল কা’র?
তবে আর মিছে কেন কর অহঙ্কার?
প্রভুত্ব, বীরত্ব কিম্বা পদ, মান, ধন,
সে সকল সঙ্গে ল’য়ে যায় কোন জন?
সতত ধর্ম্মের পথে করিয়া গমন,
যাহারা সুকৃত ধন করে উপার্জ্জন।
চিরস্থায়ী তাহাদের হয় সেই ধন,
ধ্বংস নাহি হয় তা’র হ’লেও নিধন।