নীতিকণা/দশাপরিবর্ত্তন
দশাপরিবর্ত্তন।
ছিন্নশাখ বৃক্ষে পুনঃ অন্য শাখা হয়,
পত্র-হীন বৃক্ষে পুনঃ পত্র সুশোভয়।
সুদুঃখিত মানবের তাপিত হৃদয়,
সময়ে যন্ত্রণা হ’তে বিনির্ন্মুক্ত হয়।
শীতকালে কমলিনী বিনষ্ট হইয়া,
বরষায় দেখা দেয় সুচারু হাসিয়া।
কালবশে অবস্থার পরিবর্ত্ত হয়,
এ সংসারে সম দশা কারই না রয়।
সৌভাগ্য কখন নহে স্থির এক স্থানে,
ভ্রমিতেছে নিরন্তর এখানে সেখানে।
জোয়ার ভাটার মত আসে চ’লে যায়,
একস্থলে চিরকাল কে দেখিতে পায়।
যতই আনন্দ কেন হউক তোমার,
অবশ্য সময়ে নাশ হইবে তাহার।
যতই অবস্থা মন্দ হউক এখন,
অবশ্য উঠিবে তব সৌভাগ্য-তপন।
চিরকাল একভাবে থাকে না হেমন্ত,
চিরকাল একভাবে থাকে না বসন্ত।
চিরকাল একভাবে থাকে না রজনী,
নিত্য একভাবে নাহি থাকে দিনমণি।
ক্ষণেক প্রবল থাকি প্রচণ্ড পবন,
পুনর্ব্বার শান্ত-ভাব করয়ে ধারণ।
দুরদৃষ্ট-বশে যাহা এখন হারাই,
অদৃষ্ট প্রসন্ন হ’লে পুনঃ তাহা পাই।
উঠিয়া পড়িতে হয় পড়িয়া উঠিতে,
ইহা যেন থাকে সদা সকলের চিতে।