পঞ্চক মালা/পুরুষসিংহ
পুরুষসিংহ
(হাস্য ব্যাতিরিক্ত নবরসের রচন।)
অদ্ভুত।
অক্ষক্রীড়া ঘটায় ব্রীড়া, কিযে তা বলোনা!
দিন্টা ভোর করিয়া শোর, সতের পোলনা!
বীভৎস।
মেজাজ্ গেল বিগ্ড়ে তাহে মুস্ড়ে গেল প্রাণ;
ভঙ্গ খেলা; সিংহ বাবু গৃহেতে ফিরে যান।
রৌদ্র।
প্রবেশি গেহ কহিল—“কেহ দিবে না কি গো ভাত?”
“এসেছ ঘরে?”-—গিন্নি তারে কহিল দৈবাৎ;
“খেলিলে পাশা ক্ষুধা পিপাসা যায় না মিটিয়া?”
আর কে দ্যাখে? দাঁড়াল বেঁকে সিংহ চটিয়া।
ভয়ানক।
কহিল রাগি’——“দেশ-তেয়াগী হইব এখনি।”
গৃহিণী শুধু মৃদুল মধু হাসিল তখনি।
বস্ত্রগুলি গুছিয়ে তুলি’ পোঁটলা বাঁধিয়া,
চলিল বেগে বেজায় রেগে গোঁপেতে তা দিয়া!”
আদি।
এগিয়ে এসে গিন্নী হেসে ধল্লে সে গুলি,
এক্টি হাত প্রসারি নাথে রাখিল আগুলি।
বীর।
ক্রোধে অধীর হৈল বীর, কথা না মানিল;
বেজায় জোরে আঁকড়ে ধরে বোঁচ্কা টানিল।
হ্যাঁচ্কা টানে বোঁচ্কা নিতে মচ্কে গেল হাত;
ছট্কে পড়ে’ সিংহ যেরে ভূমিতে চিৎপাৎ।
করুণ।
অঙ্গে ব্যথা! সিংহ কথা কহিছে কাতরে—
“হলেম খুন্, হলুদ চুন্ আনতে যাতরে!”
দুচারি-ঘটি জলের ছিটা, পাখার বাতাসে;
হলুদ-চুন-পটির গুণে তুলিল মাথা সে।
ঝাড়িয়া দিল গায়ের ধূলা হস্ত বুলায়ে,
রহিল তবু সিংহ বাবু ওষ্ঠ ফুলায়ে।
দিলেন আনি গৃহিণী তাঁরে পথ্য থালাতে।
যতেক খান্ আবার চান্, ক্ষুধার জ্বালাতে।
হাঁড়িটি বেশ করিয়া শেষ, গুড়াকু ফুঁকিয়া,
ধুমে ও ঘুমে সকল গোল্ গেলারে চুকিয়া।