পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২)/১৪৭

১৪৭
C/o Dr. Bidban C. Roy
Shillong
১৬।৬।২৯

 মাগো, আজ আমি এখানে। এখানে আসার পর শারীরিক বিশ্রাম পেয়েছি কতকটা। কিন্তু চিন্তার অবসর পাই নাই। চিন্তার অবসর পাওয়া খুব দরকার। ঝড়ের মত চলেছি—কোথায় চলেছি, শুভের দিকে অশুভের পশ্চাতে—তা বোঝা দরকার। তা ছাড়া আত্মপরীক্ষাও করা দরকার এবং বেশী অবসর না পেলে আত্মপরীক্ষা করা যায় না।

 মা, তুমি আজ আমাকে প্রাণ ভরে আশীর্ব্বাদ করিও। জানি আমি, তোমার আশীর্ব্বাদ দিবানিশি অযাচিত ভাবে আমার উপর বর্ষিত হইতেছে; তথাপি আমি বলিতেছি, আজিকার দিনটা আশীর্ব্বাদ করিও; এ আশীর্ব্বাদের আর একটা অর্থ আছে।

 মা, আমি নিতান্ত অযোগ্য ও অপদার্থ সন্তান। তোমার ভালবাসা আমাকে মনুষ্যত্বের দিকে টানিয়া লইতেছে। মা, আশীর্ব্বাদ করিও, জন্ম-জন্মান্তরে তোমার মত মাকে পেয়ে আবার জীবন আমি যেন ধন্য করিতে পারি।

 আমার সেবা-জীবনে যিনি একাধারে আমার বন্ধু, সখা ও গুরু ছিলেন তিনি আজ নাই। আজ আমি যে একেবারে কাঙ্গাল। সে কাঙ্গালের একমাত্র আশ্রয় আজ তুমি। অবস্থা-বিপর্য্যয়ের মধ্যে, নানা প্রকার ঘাত-প্রতিঘাতের ভিতরে—সব হারাইলেও যেন কোনও দিন তোমার স্নেহ আমি না হারাই।

 আর, চিন্তা করিয়া বলিও—কোন পথে চলিব। ইতি—

নিতান্ত অপদার্থ অথচ অশেষ

স্নেহভাজন সেবক

সুভাষ