পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২)/৬৭
পরম পূজনীয় মেজদাদা,
আপনার ৫।১২।২৪ তারিখের পত্র কয়েক দিন পূর্ব্বে ও ১২।১২।২৪ তারিখের পত্র কাল পাইয়াছি।
গরম পােষাকের বিষয়ে গভর্ণমেণ্ট আমাকে জানাইয়াছেন যে, নির্দ্দিষ্ট বরাদ্দের কোনও পরিবর্ত্তন তাঁহারা করিবেন না। বন্দীদের প্রতি তাহাদের মর্য্যাদার অনুরূপ আচরণের ইহাই নমুনা।
* * *
আমিও খরচের একটি কপি পাঠাইবার জন্য বাঙ্গলা গভর্ণমেণ্টকে লিখিতেছি। খরচের কথা তাঁহারা যাহা বলিয়াছেন উহার একটা কপি পাঠাইতে তাঁহাদের কি আপত্তি থাকিতে পারে জানি না।
আমার অনুপস্থিতি কালে একজন অস্থায়ী C. E. O. নিয়োগ করা হইয়াছে জানিয়া আনন্দিত হইলাম। কর্পোরেশনের কাজ কোনও ক্রমেই বাধাপ্রাপ্ত হওয়া উচিত নয়। এ বিষয়ে মেয়রের সঙ্গে আলোচনা করিবেন এবং আমার সহিত মৌখিক যে সব কথাবার্ত্তা হইয়াছিল উহা অনুমোদিত করাইয়া লইবেন।
আপনি আমার বাগানের উন্নতির জন্য চেষ্টা করিতেছেন জানিয়া আমি আনন্দিত বোধ করিতেছি। বাগানের ঠিক মাঝখানে একটি ব্যাডমিণ্টন কোর্ট করিবার আমার ইচ্ছা ছিল। আপনি নিশ্চয়ই সমস্ত জমিটা কাজে লাগাইয়াছেন; তবে ইহাতে কোনও অসুবিধা হইবে না কারণ ৩৮।২ নং বাড়ীর পিছনে যে খালি জায়গাটুকু পড়িয়া আছে উহা ঠিকমত পরিষ্কার করাইয়া লইতে পারিলে সেখানে ছেলেমেয়েদের জন্য একটি ব্যাডমিণ্টন কোর্ট করা যাইতে পারে।
মাদক বর্জ্জন সংক্রান্ত আপনার প্রস্তাবটি বার বার মুলতুবী রাখা হইতেছে বলিয়া যাহা লিখিয়াছেন এজন্য আমি দুঃখিত। আলিপুর হইতে আমার চলিয়া আসার পর কর্পোরেশনের অবস্থা জানিবার জন্য খুব উৎকণ্ঠিত হইয়া আছি; এবং “কর্পোরেশনের আভ্যন্তরীণ অবস্থা”-র বিবরণ পাঠ করিতে সত্যই আনন্দ পাই।
* * *
গভর্ণমেণ্ট এখানকার সমস্ত বন্দীদের বই ইত্যাদি কিনিবার জন্য মাসিক সর্বোচ্চ ৩০৲ টাকা মঞ্জুর করিয়াছেন। জানি না এতগুলি প্রাণীর মানসিক ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য এই সামান্য টাকায় কি বই কেনা যাইতে পারে—বিশেষতঃ যখন ভিন্নরুচিহি লোকাঃ * * আরও অসুবিধা এই যে, এই জেলের নিজস্ব কোনও লাইব্রেরীও নাই * *
আমি এখানে ভালই আছি। “পাথরের প্রাচীর তুলিয়া কারাগার তৈরী করা যায় না; লোহার গরাদে হয় না খাঁচা”—কবির এ কথাগুলি বাস্তবিকই সত্য।
সমসাময়িক ইংরাজী ও পাশ্চাত্ত্য সাহিত্যের কিছু কিছু বই (অনুবাদ অবশ্য) আমার দরকার।
* * *
আপনার স্নেহের
সুভাষ
(ইংরাজী হইতে অনূদিত)