পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২)/৯২
বিভাবতী বসুকে লিখিত
শ্রীশ্রীদুর্গা সহায়
পূজনীয়া মেজবৌদিদি,
আপনার ৫ই ডিসেম্বরের পত্র পেয়ে যে কতদূর আনন্দিত হয়েছি তা বলতে পারি না। আপনার দুইখানি পত্রের উত্তর না দেওয়াতে আমি আশা করি নাই যে আপনার পত্র পাব। যাক্ এখন তিনখানা পত্রের উত্তর দিচ্ছি।
আপনাদের প্রেরিত পাঞ্জাবী কয়েকদিন হ’ল পেয়েছি। পার্শ্বেলটা পেয়েই বুঝতে পারি যে বাড়ীর সূতায় তৈয়ারী—কারণ তা না হলে একখানা পাঞ্জাবী আস্ত না। তবে আমি ঠিক করতে পারি নাই কার সূতায় তৈয়ারী। একবার মনে হ’ল যে পূর্ব্বে সেজবৌদিদিরা যে সূতা কেটেছিলেন তার দ্বারা তৈয়ারী। তার পর মনে হল যে হয়তো লাল মামীমার সূতায় তৈয়ারী—কারণ গতবার যখন জেলে ছিলুম তখন তিনি তাঁর নিজের সূতায় তৈয়ারী কাপড় ও চাদর আমায় পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু এখন দেখছি যে আমার অনুমান ঠিক হয় নাই। আপনারা যে এখন সূতা কাটছেন তা পূর্ব্বে আমি শুনি নাই। আপনারা কে কে সূতা কাটেন এবং কার সূতা কি রকম হয় তা আমাকে অবশ্য ২ লিখবেন। কার সবচেয়ে বেশী উৎসাহ? দিদি সূতা কাটতে পারে? সূতা দিয়ে আপনার থান কোথায় বোনান?
পাঞ্জাবীটি খুব সুন্দর হয়েছে এবং আমি পরেই লিখছি। নিজের হাতের রান্না যেমন পরের রান্নার চেয়ে দশগুণ মিষ্ট লাগে নিজের হাতে তৈয়ারী কাপড় পরের তৈয়ারী কাপড়ের চেয়ে দশগুণ সুন্দর বোধ হয়। আশা করি আপনাদের উৎসাহ দিন দিন বেড়েই যাবে। আমরা এখানে এসে কয়েকদিন সূতা কাটি। তারপর চরকাটা ভেঙ্গে যায় এবং যাঁর খুব বেশী উৎসাহ ছিল তিনি এখান থেকে বদলী হয়ে যান। তাই এখন ভাঙ্গা চরকাটা আলমারীর উপর তোলা আছে। একবার ইচ্ছা হয়েছিল কলকাতায় ডাক্তার পি. সি. রায়কে লিখি একটা চরকা পাঠাতে। তারপর ভাবলাম যে হয়তো পথে আসতে ২ ভেঙ্গে যাবে, তাই লেখা হ’ল না।
সারদার কথা প্রায় মনে হয়। সে এখন কেমন আছে? তার এখন প্রধান অবলম্বন কি? ছাগল, না বেড়াল, না পাখী, না ছেলেমেয়েরা? কাকে নিয়ে বেশী থাকে?
অনেকদিন পূর্ব্বে শুনেছিলুম যে ছোট বৌদিদির অসুখ করেছিল, তিনি এখন কেমন আছেন?
আমি যে এক বৎসর কাল দেশান্তরে কারারুদ্ধ অবস্থায় রয়েছি তাতে আপনারা সকলে এবং বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন অত্যন্ত দুঃখিত। আমারও যে মনে কষ্ট হয় না—তা বলতে পারি না। কিন্তু আমি প্রায়ই ভেবে দেখি যে এর মধ্যে নিশ্চয়ই ভগবানের একটা বড় উদ্দেশ্য আছে। তা যদি না হয় তবে এত রাজবন্দীদের মধ্যে আমি বা আমরা কয়জন কেন এখানে এলুম? তা’ছাড়া, আমি মধ্যে মধ্যে এত আনন্দ অনুভব করি যে তা বলতে পারি না। আনন্দ যদি না পেতুম, তবে এতদিনে বোধ হয় পাগল হয়ে যেতুম। আমরা ধর্ম্ম পুস্তকে প্রায়ই পড়ে থাকি যে দুঃখের মধ্যে সুখ আছে। এ কথাটা একশবার সত্যি। কর্ম্মের মধ্যে যদি মানুষ কোন প্রকার সুখ না পেতো, তা হ’লে মানুষ কখনও অম্লান মনে কষ্ট সইতে পারত না। অবশ্য যে কষ্টটা মানুষ পরের জন্য ভোগ করে তার মধ্যে যতটা সুখ পায় বোধ হয় অন্য কোন কষ্টের মধ্যে ততটা সুখ পায় না। মা ছেলের জন্য, ভাই ভাইয়ের জন্য, বন্ধু বন্ধুর জন্য অথবা স্বদেশসেবী দেশের জন্য, যে দুঃখ ভোগ করে, তার মধ্যে যদি আনন্দ না পেতো, তবে কি সে কষ্ট সহ্য করতে পারতো? ভক্ত যে বিরহের মধ্যে শ্রীকৃষ্ণকে পেয়ে থাকে একথা খুব ঠিক। কারণ এক বৎসর কাল দেশান্তরিত হয়ে আমি অনুভব করছি আজ আমার জন্মভূমি আমার নিকট কত প্রিয়, কত মধুর, কত সুন্দর হয়ে উঠেছে। আজ মনে হচ্ছে জন্মভূমিকে এমন যত ভালবাসি, জীবনে এত ভালবাসি নাই। আর সেই স্বর্গাদপি গরীয়সী জন্মভূমির জন্য যদি কষ্ট সইতে হয়—সে কি আনন্দের বিষয় নয়? আজ আমি বাইরে দেশছাড়া—কিন্তু অন্তরের মধ্যে, কল্পনার মধ্যে দেশকে পেয়ে থাকি। আর সে পাওয়ার মধ্যে কি কম আনন্দ?···[ইহার পর পাঁচটি পঙতি সেন্সর কর্তৃপক্ষ বাদ দিয়াছিল]
মেজদাকে গত সপ্তাহে এবং এ সপ্তাহে পত্র দিতে পারি নাই—আগামী সপ্তাহে পত্র দেব।
কনকের প্রেরিত ভাইফোঁটার ধুতি ও চাদর পেয়ে খুব আনন্দিত হয়েছি। তাকে আলাদা পত্র দেব মনে করেছিলুম—কিন্তু শীঘ্র হয়ে উঠবে কিনা জানি না। সে ওখানে এলে আমার কথা বলবেন।
একটা কথা আমার এখনও বলা হয় নাই। পূজার কাপড় যা পাঠিয়েছিলেন পেয়ে আমরা সকলে খুব আনন্দ করেছি। পূজার সময়ে পৌঁছায়নি বটে কিন্তু তাতে ক্ষতি বৃদ্ধি কি? মাসের মধ্যে আমাদের ৩০ দিনই ছুটি। আপনাকে আলাদা করে বিজয়ার প্রণাম জানাতে পারি নাই। মেজদাদার পত্রে জানিয়ে ছিলুম। আশা করি রাগ করেন নাই।
৺পূজার কথা বোধ হয় এখন পুরোন হয়ে গেছে। এত আনন্দ কোনও পূজাতে পেয়েছি কিনা জানি না। আর অনেক ঝগড়াঝাটি করে আমরা পূজা করবার অনুমতি পাই তাই বোধ হয় পূজার মধ্যে বেশী আনন্দ পাই। কতদিন জেলে কাটাতে হবে জানি না। তবে বৎসরান্তে যদি ৺মার দর্শন পাই তবে সব দুঃখ সহ্য করতে পারব। দুর্গামূর্ত্তির মধ্যে আমরা মা-স্বদেশ-বিশ্ব সমস্তই পাই। তিনি একাধারে জননী, জন্মভূমি ও বিশ্বময়ী।
হ্যা একটা কথা বলতে ভুলে যাচ্ছিলুম। আমি মেজদাদাকে পূর্ব্বে জানিয়েছিলুম যে ৺দুর্গাপূজার খরচের টাকা বোধ হয় সরকার থেকে দেওয়া হবে। এখন আমরা হুকুম পেয়েছি যে আমাদের পকেট থেকে দিতে হবে। আমরা বলেছিলুম যে ৫০০৲ টাকা সরকার থেকে দেওয়া হোক—বাকী টাকা আমরা দোব। আমাদের প্রতিশ্রুত অংশ আমরা দিয়ে বসে আছি। কিন্তু ৫০০৲ টাকার এক পয়সা আমরা দিতে পারব না——এবং দোব না। এখানকার খবর অবশ্য জানতে চান। মুরগীর সংখ্যা বেড়েছে। চারটী ছানা হয়েছে। আরও কয়েকটা হয়েছিল—জন্মাবার পর মারা যায়। মুরগীর জন্য বৈজ্ঞানিক প্রণালীতে রীতিমত একটা ঘর তৈয়ারী করা হয়েছে। আর নূতন মোরগও কেনা হয়েছে। মধ্যে মধ্যে মোরগের লড়াই হয়। পূর্ব্বে আমি কখনও মোরগের লড়াই দেখি নাই। পায়রা পোষবার প্রস্তাব হয়েছিল—রাখবার ঘরের অভাবের দরুন কেনা হয় নাই। তবে এখানে বেশীদিন থাকলে যে একটা পায়রার আড্ডা করা হবে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নাই। জেলের মধ্যে জীবনটা এত একঘেয়ে এবং নীরস যে এর মধ্যে রসের সৃষ্টি না করতে পারলে মাথা ঠিক রাখা কষ্টকর ব্যাপার।
বেরালের উপদ্রব পূর্ব্ববৎ চলেছে। পূর্ব্বে ৮।৯টা ছিল। প্রত্যহ রাত্রে হুলো বেরালদের ঝগড়ায় ঘুম ভেঙ্গে যেতো। আমাদের তর্জ্জনগর্জ্জন তারা গ্রাহ্য করত না—কারণ তারা বুঝতে পারত যে আমরা ঘরের মধ্যে বন্ধ। তারপর একদিন আমরা সব কটাকে বস্তা বন্ধ করে দূরদেশে পাঠিয়ে দিই। তার মধ্যে কয়েকটা আবার ফিরে আসে। এখন দাঁড়িয়েছে তিনটা। এদেরও মধ্যে বিদায় করা হয়, আবার ফিরে আসে। এখানে অনেকে খুব বেরালপ্রেমিক। কি করবে— আদর করার বস্তুর অভাবে শেষে বেরালকে আদর ক’রে মনের আশা মেটায়। আমি কিন্তু এখনও বেরাল ভালবাসতে পারলুম না—(আর এগুলো দেখতে এত বিশ্রী)—তবে সারদার বেরালের মত সুন্দর হয় তো ভালবাসা যায়।
বাগান করবার চেষ্টা খুব চলেছে। আমাদের স্থায়ী ম্যানেজার এখন ম্যানেজারী কাজ ছেড়ে বাগানের পেছনে লেগেছেন। কিন্তু জমি রাজী নয় সোনা ফলাতে। ম্যানেজার বাবুও নাছোড়বান্দা। দুই হাত জমির মধ্যে এমন কিছুই নাই তিনি লাগান নাই। শাক, বেগুন, ছোলা, মটর, আখ, আনারস, প্যাঁজ কত কি? তা ছাড়া নানা রকমের ফুলের গাছ। খানিকটা জায়গায় রোদ লাগে না বলে ফুলের গাছগুলি বাড়ছে না দেখে তিনি নান বৈজ্ঞানিক উপায় অবলম্বন করেছেন। আজ এক সপ্তাহ হ’ল তিনি রোদের মধ্যে একটা বড় আর্শি রেখে ফুলের গাছগুলির উপর সূর্য্যের আলো কয়েক ঘণ্টা করে ফেলছেন। তাঁর মতে এই উপায়ের দরুন ফুলের গাছগুলি খুব তাড়াতাড়ি এখন বাড়ছে। আমরা তাই এখন তাঁকে “দ্বিতীয় জগদীশ বোস্” সাব্যস্ত করেছি।
জেলখানা যে একটা চিড়িয়াখানা সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নাই। আমাদের এখানে একটি লোক আছে তার নাম শ্যামলাল। তার বুদ্ধির পরিচয় পেয়ে আমরা প্রথমে তাকে “পণ্ডিত” উপাধি দিয়েছি। সম্প্রতি আরও বুদ্ধির পরিচয় পেয়ে তাকে “উপাধ্যায়” দেওয়া হয়েছে এবং তাকে ভরসা দেওয়া হয়েছে যে ক্রমশঃ “মহামহোপাধ্যায়” উপাধি পাবে।
শ্যামলাল মহাপ্রভু ডাকাতি করতে গিয়ে পাঁচ টাকা নিয়ে ঘরে ফেরেন। হাজারের বেশী টাকা তার ডাকাত বন্ধুরা তাকে ঠকিয়ে নিয়ে যায়। পাঁচ টাকার জন্য সে পেল ১৫ বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড। তাকে পাঠান হ’ল রাজশাহী জেলে। সেখানে কয়েদীরা জেল ভেঙ্গে পালাল। যখন সব কয়েদীরা পালাল তখন শ্যামলাল দেখল যে জেলখানা খালি এবং সদর দরজা খোলা। সে গিয়ে জমাদারকে বললে——“জমাদার সাহেব, আমিও কি যেতে পারি?” জমাদার উত্তর দিল, “তুমরা যেযা খুসী করো”। যখন সব কয়েদীরা ধরা পড়ে আবার জেলে এলো—তাদের বিচার আরম্ভ হ’ল। বিচারের সময় শ্যামলাল দাঁড়িয়ে উঠে বল্লে, “হুজুর আমি জমাদারের অনুমতি নিয়ে জেলের বাহিরে গিছলুম।” জজ তার কথা শুনলে না—সে পেলো এক বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড—জেলভাঙ্গার অপরাধে।
এখানে এসে শ্যামলালকে দেওয়া হ’ল স্নানের ঘরের কাজ। তার কাজ জল ঠিক রাখা—কাপড়, তেল, সাবান ঠিক রাখা ইত্যাদি। পাঁচজন কয়েদী এসে স্নানের জল নষ্ট করে দেখে সে মনে মনে বুদ্ধি আঁটল কি করলে জল নষ্ট হবে না। অনেক চিন্তার পর সে স্নানের ঘরে ঢুকে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করল। তারপর জানালা দিয়ে বেরিয়ে এসে জোরে ধাক্কা দিয়ে জানলা বন্ধ করল। ছিটকিনি পড়ে ভিতর থেকে জানালা বন্ধ হয়ে গেল এবং শ্যামলালও মনে মনে খুব সন্তুষ্ট হল। স্নানের সময় যখন দরজা খোলা দরকার হল তখন শ্যামলাল মাথা চুলকোতে লাগল। আমরা তার বুদ্ধির পরিচয় পেয়ে তাকে তৎক্ষণাৎ “পণ্ডিত” উপাধি দিলুম।
শ্যামলালের উপাধির সংখ্যাও বাড়তে লাগল কিন্তু সে পণ্ডিত নামে সবচেয়ে বেশী সন্তুষ্ট রইল এবং উপাধিটি পাবার পর তার কাজের আগ্রহ আরও বেড়ে গেল।
চুলকানি হয়েছে দেখে শ্যাম পণ্ডিত একদিন স্থির করল তার কুষ্ঠ ব্যাধি হয়েছে। কি উপায়ে কুষ্ঠ রোগের আরাম হতে পারে তা জানবার জন্য সে সকলকে জিজ্ঞাসা করতে লাগল। তারপর আর একটি ঘটনায় সে এরূপ বুদ্ধি দেখায় যে তার প্রমোশন হয়ে সে “উপাধ্যায়” উপাধি পায়। যে রকম বেগে তার বুদ্ধির বিকাশ হচ্ছে, সে যে শীঘ্র “মহামহোপাধ্যায়” নাম পাবে সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই।
আর একটি মজার লোক এখানে আছে। তার নাম “ইয়াঙ্কায়া”। তার আদি নিবাস মান্দ্রাজ অঞ্চলে। প্রায় চল্লিশ বৎসর পূর্ব্বে যখন ইংরাজেরা উত্তর বর্ম্মা দখল করে তখন সে ইংরাজদের সহিত এদেশে আসে। এখন তার বয়স মাত্র ৭০ বৎসর এবং জীবনে মাত্র তিনবার বিবাহ করেছে। যেমন লম্বা, তেমন চওড়া, আর পেটটা তার চেয়ে বড়। খেতে খুব ভালবাসে এবং দুনিয়ার মধ্যে পেটটা সব চেয়ে বড় সত্য একথা সে প্রাণে প্রাণে বুঝে। কোন ভাষা সে জানে না। এখন যে ভাষা বলে সেটা কারুঙ্গী (একট। মান্দ্রাজীয় ভাষা) হিন্দুস্থানী ও বর্ম্মা ভাষার একটা খিচুড়ি। সে কোন ভাষা ভাল বলতে পারে না এই গুণের জন্য তাকে প্রথমে বাঙ্গালীদের কাজের জন্য দেওয়া হয়। এখন তার ভাষার চেয়ে তার ভাবভঙ্গী দেখে বুঝি। তার আর একটা বড় গুণ আছে, সে কোনও নাম ঠিক করে উচ্চারণ করতে পারে না। “ভোগ সিং” না ব’লে বলে “বুসিং”; কৃপারামের স্থলে সে বলে “ত্রিপদ-রাজু”; সুভাষবাবুর স্থলে সে বলে “সুর্ব্বন বাবু”; “বিপিন বাবু” স্থলে “গোবিন্ বাবু” ইত্যাদি। তার ভাষার একটা নমুনা দিই—“ত্রিপদ-রাজু চলা গয়া সীদে” অর্থাৎ কৃপারাম চলে গেছে। এর মধ্যে “চলা গয়া” হচ্ছে হিন্দুস্থানী এবং “সীদে” হচ্ছে বর্ম্মা কথা। ইয়াঙ্কায়ার সদা সর্ব্বদ। আশঙ্কা হয় আমরা কোনদিন চলে যাব। তখন ওর খাওয়াদাওয়ার একটু অসুবিধে হতে পারে।
খবর কাগজ নিয়ে আমর! যদি একত্র বসে পড়তে বসি—অমনি তার অন্তরাত্মা খাঁচা ছাড়া হবার উপক্রম। একটু আড়ালে এলেই সে চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞাসা করে, “বাবু বেংলা চলা গয়া?” অর্থাৎ বাবু বাংলা দেশে চলে যাবেন না কি? “না” উত্তর পেলে সে আশ্বস্ত হয়। তবে মুখে বলে, “বাবু, বেংলা চলা গয়া বহুৎ কাউণ্ডে” অর্থাৎ বাবুরা বাংলা দেশে চলে গেলে খুব ভাল হয়। “কাউণ্ডে” হচ্ছে বর্ম্মা কথা, তার মানে “ভাল”।
যাক্ একদিনে কাহিনী শেষ করলে চলবে না। পলি কেমন আছে? কবিরাজী ওষুধ খেয়ে কিছু উপকার পেয়েছি, কিন্তু উপকারটা স্থায়ী হবে কি না বলতে পারি না। মধ্যে সর্দ্দিজ্বর মত হয়েছিল এখন ভাল আছি। আপনারা সকলে কে কেমন আছেন? আমার প্রণাম জানবেন।
শ্রীসুভাষ