পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২)/৯৬
তোমার পত্র যথাসময়ে পাইয়াছি। উত্তর দিতে বিলম্ব হইল বলিয়া কিছু মনে করিও না। আশা করি তুমি সকল প্রকার মানসিক অশান্তি দূর করিয়া প্রফুল্লভাবে সকল কর্ত্তব্য করিয়া যাইবে। Milton বলিয়াছেন—“The mind is its own place and can make a hell of heaven and a heaven of hell,” অবশ্য এ কথা কার্য্যে পরিণত করা সব সময়ে সম্ভব হয় না, কিন্তু আদর্শ সব সময় চোখের সামনে না রাখিলে জীবনে অগ্রসর হওয়া একেবারে অসম্ভব। জীবনের কোনও অবস্থাই অশান্তিহীন নহে—এ কথা ভুলিলে চলিবে না।
আমার মুক্তির কথা আমি আর ভাবি না—তোমরাও ভাবিও না। ভগবানের কৃপায় আমি এখানে মানসিক শান্তি পাইয়াছি। প্রয়োজন হইলে এখানে সমস্ত জীবন কাটাইয়া দিতে পারি—এরূপ শক্তি পাইয়াছি বলিয়া মনে হয়। আমার শুভ ইচ্ছার কোনও প্রভাব নাই, কিন্তু বিশ্বজননীর শুভ ইচ্ছা ও আশীর্ব্বাদ তোমাকে বর্ম্মের মত সর্ব্বদা আচ্ছাদন করিয়া রাখুক—ইহাই আমার একান্ত প্রার্থনা। আমি কি লিখিব—বিশ্বজননীতে বিশ্বাস ও ভরসা রাখিও— তুমি তাঁর কৃপায় সকল বিপদ ও মোহ উত্তীর্ণ হইতে পারিবে। মনের মধ্যে সুখ ও শান্তি না থাকিলে কোনও অবস্থায় (বাহিরের অভাব দূর হইলেও) মানুষ সুখী হইতে পারে না। সুতরাং সাংসারিক সকল কর্ত্তব্য করার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বজননীর চরণে হৃদয় নিবেদন করা চাই। ইতি—