পরিশিষ্ট।

অধিষ্ঠানাধিকরণ—নগরের প্রধান বিচারপতি।

অনুগাঙ্গ—গঙ্গাতীরবর্ত্তী প্রদেশ।

অন্তর্ব্বেদী—গঙ্গা ও যমুনার মধ্যস্থিত ভূভাগের অপর নাম।

অভিধর্ম্মকোষ ব্যাখ্যা  বৌদ্ধ ধর্ম্মগ্রন্থদ্বয়ের নাম।
অভিধর্ম্মবিভাষা শাস্ত্র

অলসদ্দ—Alexandria, যবনরাজ আলেক্‌জান্দার ভারতের উত্তরপশ্চিম সীমান্তে স্বনামে অনেকগুলি নগর স্থাপন করিয়াছিলেন।

অহিচ্ছত্র—পঞ্চাল রাজ্যের প্রাচীন রাজধানী, ইহা আধুনিক বেরিলী জেলায় অবস্থিত। ইহার বর্ত্তমান নাম রামনগর।

অর্হৎ—সিদ্ধ বৌদ্ধাচার্য্যগণের নাম।

আর্ত্তিমিদর—গ্রীক্ নাম (Artemidoros)

আনর্ত্ত—সুরাট্ ও গুজরাটের নিকটবর্ত্তী প্রদেশের প্রাচীন নাম।

আন্তিয়োক—আলেক্‌জান্দারের সেনাপতি সিলিউকস্ নিকেটরের বংশজাত সিরিয়ারাজ ৩য় আন্তিয়োক (Antiochos III)

আলম্বন—রেলিংএর ঊর্দ্ধভাগ (Architrave)

উদ্যান—প্রাচীন গান্ধারের নিকটবর্ত্তী দেশ বিশেষ। ইহার বর্ত্তমান নাম ‘হাজারা’

উপাসক—বৌদ্ধধর্ম্মাবলম্বী পুরুষ।

উপাসিকা—ঐ স্ত্রী।

উরস—ভারতের উত্তর পশ্চিম প্রান্তস্থিত প্রদেশ।

ঐরাণ—পারস্যের প্রাচীন নাম। খৃঃ ৬ষ্ঠ শতাব্দীর মুদ্রায় ঐরাণ নাম ব্যবহৃত হইয়াছে। (Catalogue of the coins, Indian museum, vol. I, P. 234, note I.)

কনকমুনি গৌতমের পূর্ব্ববর্ত্তী বুদ্ধগণের নাম। বৌদ্ধ মতানুসারে গৌতমের পূর্ব্বে আর পাঁচজন বুদ্ধত্ব লাভ করিয়াছিলেন।
ক্রকুচ্ছন্দ

কপিশা—প্রাচীন কপিশার অবস্থান লইয়া পণ্ডিতগণের মধ্যে মতভেদ আছে। কাহারও মতে কপিশা কাবুলের প্রাচীন নাম। কেহ বলেন ইহা জেলালাবাদের চারিপার্শ্বস্থিত প্রদেশের প্রাচীন নাম।

করুষ—আরা জিলার প্রাচীন নাম।

কিন্নরধ্বজ—অগ্রভাগে কিন্নরমূর্ত্তিযুক্ত ধ্বজ।

কীকট—মগধ বা বিহারের প্রাচীন নাম।

কীর—ত্রিগর্ত্তের নিকটবর্তী প্রদেশের নাম।

কুক্কুটপাদবিহার—ইহার অপর নাম কুক্কুটারাম। ইহা প্রাচীন পাটলিপুত্র নগরের একটী সঙ্ঘারাম।

কুরুবর্ষ—মধ্য এসিয়ার প্রাচীন নাম।

কুশীনগরী বা কুশীনার—মল্লরাজ্যের প্রাচীন রাজধানী, বর্ত্তমান অবস্থান অজ্ঞাত। এই স্থানে গৌতম বুদ্ধের মৃত্যু হইয়াছিল।

কোশাম্বী—উদয়নের রাজধানী, বর্ত্তমান নাম কোশাম, এলাহাবাদ হইতে পনর ক্রোশ দূরে অবস্থিত।



গণ—থর্ব্বাকৃতি লম্বোদর মনুষ্য।

গর্ভগৃহ—মন্দিরের বা স্তূপের অভ্যন্তরস্থিত প্রকোষ্ঠ।

গর্ভচৈত্য—যে সকল চৈত্য বা স্তূপের একটী কক্ষ থাকিত তাহার নাম গর্ভচৈত্য। এই সকল কক্ষে বুদ্ধের বা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রধানগণের অস্থি বা ভস্ম রক্ষিত হইত।

গান্ধার—ভারতবর্ষের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের দেশ-বিশেষ। প্রাচীন গান্ধার দেশ বর্ত্তমান কালের পেশোয়ার ও বন্নু জিলায় অবস্থিত ছিল। প্রাচীন গান্ধারবাসিগণ খৃঃ ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে প্রাচীন গান্ধার পরিত্যাগ করিয়া পশ্চিম দক্ষিণ কোণে যে নূতন নগর স্থাপন করিয়াছিলেন তাহারই বর্ত্তমান নাম কন্দাহার (Cunningham—Archaeological Survey Reports vol. XVI. P.)

ঘট্ট—ঘাট।

চম্পা—বর্ত্তমান ভাগলপুর নগরের অনতিদূরে অবস্থিত।

চোলমণ্ডল—ভারতের দক্ষিণপূর্ব্ব সমুদ্রোপকূল।

জাউল—জউল বা জউব্লু, শক ও হূণজাতির অংশ বিশেষের নাম।

জাতক—বুদ্ধগণের পূর্ব্বজন্মের কাহিনী।

জালন্ধর—বর্ত্তমান নাম জলন্দর।

টক্ক—পঞ্চনদ বা পাঞ্জাবের প্রাচীন নাম।

তক্ষশিলা—ইহার ধ্বংশাবশেষ রাওলপিণ্ডি জিলার সরাইকালার নামক স্থানে অবস্থিত। ইহাই গ্রীক্‌দিগের ট্যাক্‌সিলা (Taxila)।

তীরভুক্তি—বর্ত্তমান নাম ত্রিহুৎ বা তির্‌হুৎ।

তুষিতস্বর্গ—বৌদ্ধ মতানুসারে একটী স্বর্গের নাম।

ত্রিগর্ত্ত—বর্ত্তমান নাম কাঙ্গড়া।

ত্রিরত্ন—বৌদ্ধ Trinity, রত্নত্রয়ের নাম ধর্ম্ম, বুদ্ধ ও সঙ্ঘ।

থৈদোর—গ্রীক্ নাম (Theodoros)।

দশপুর—বর্ত্তমান নাম মন্দশোর, ইহা মালবের একটী প্রাচীন নগর।

দশশীল—বৌদ্ধধর্ম্মের দশটী নিয়ম।

দণ্ডপাশিক—ফৌজদারী বিভাগের কারাধ্যক্ষ।

দেবপুত্র—কুষণবংশের সম্রাটগণের উপাধি। প্রাচীনকালে চীনের সম্রাট, পারদ-সম্রাট ও কুষণ-সম্রাট এই উপাধি গ্রহণ করিয়াছিলেন।

ধর্ম্মচক্র—বুদ্ধদেব বারাণসীতে প্রথম ধর্ম্মপ্রচার করিয়াছিলেন, বৌদ্ধশাস্ত্রে তাঁহার নাম ধর্ম্মচক্রপ্রবর্ত্তনা। প্রস্তরশিল্পে ধর্ম্মচক্র প্রবর্ত্তনা দেখাইবার জন্য নিম্নলিখিত সাঙ্কেতিক চিহ্নগুলি ব্যবহৃত হইত:—

(১) চক্র—ইহার অর্থ বুদ্ধদেব কর্ত্তৃক প্রথম ধর্ম্মপ্রচার, (২) চক্রের নিম্নে দুইটী মৃগ,—ইহার অর্থ এই যে বারাণসীর উপকণ্ঠে মৃগদাব নামক স্থানে বুদ্ধদেব প্রথম ধর্ম্মপ্রচার করিয়াছিলেন।

নগরহার—ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের একট প্রাচীন নগর।

নবপত্রিকা—প্রস্তরশিল্পের পারিভাষিক শব্দ।

নিগম—শ্রেষ্ঠী, স্বার্থবাহ বা কুলিকগণের সাম্প্রদায়িক সভা (Guild)

নৈম—অর্দ্ধ।

নৌবাটক—যুদ্ধের নৌকাশ্রেণী।

পারদ—পার্থিয়ান (Parthian) মনুসংহিতায় পারদ জাতির উল্লেখ আছে।

পু-আহিত—মিশরদেশীয় খোদিতলিপিসমূহে উল্লিখিত দেশের নাম।

পুরুষপুর = পরষাবর = পেষাবর = বর্ত্তমান পেশোয়ার।

পুলিন্দ—ইহার বর্ত্তমান অবস্থান অজ্ঞাত। অশোকের খোদিতলিপিতে অন্ধ্রজাতির সহিত পুলিন্দজাতির নামযুক্ত থাকায় পণ্ডিতগণ অনুমান করেন যে পুলিন্দজাতি দক্ষিণাপথবাসী ছিল।

ভাণ্ডাগারিক—ভাণ্ডারী

ভিক্ষু—বৌদ্ধ সন্ন্যাসী

ভিক্ষুণী—বৌদ্ধ সন্ন্যাসিনী

ভুক্তি—প্রদেশের অংশবিশেষ, সরকার (Division)

ভৃগুকচ্ছ = ভরুকচ্ছ = ভরোচ (Broach)

মণ্ডল—প্রদেশের অংশ, পরগণা

মৎস্য—পণ্ডিতগণ অনুমান করেন যে আধুনিক জয়পুর রাজ্যই মৎস্য দেশ।

মদ্রদেশ—পঞ্চনদের প্রদেশ বিশেষের প্রাচীন নাম।

মরু—যোধপুরের প্রাচীন নাম।

মহাকোশল—আধুনিক মধ্যপ্রদেশের উত্তরভাগের প্রাচীন নাম।

মহাদণ্ডনায়ক—প্রধান বিচারপতি (ফৌজদারী বিভাগের)।

মহাপ্রতীহার—পুররক্ষিগণের অধ্যক্ষ।

মহাবলাধিকৃত—প্রধান সেনাপতি।

মহাস্থবির—বৌদ্ধসঙ্ঘের বা মঠের প্রধান ভিক্ষু।

মাখেতা—গ্রীক্‌নাম (Machetas)

মায়াপুর—হরিদ্বারের অপর নাম।

মিশর বা মিজ্রাইম—আধুনিক ইজিপ্টের (Egypt) নামান্তর।

মূলস্থানপুর—বর্ত্তমান নাম মূলতান।

মেনন্দ্র—মিলিন্দ বা মেনাণ্ডার (Menandar), ইঁহার মুদ্রায় ভারতীয় অক্ষরে মেনন্দ্র নাম লিখিত থাকে।

যুবরাজ ভট্টারকপাদীয়—অর্থাৎ যাহার পদ যুবরাজগণের সমান।

রাজগৃহ—বর্ত্তমান নাম রাজগির, ইহাই মহাভারতের গিরিব্রজ। পাটলিপুত্র নির্ম্মিত হইবার পূর্ব্বে ইহা মগধের রাজধানী ছিল।

রাষ্ট্রকূট—রাজপুত জাতিবিশেষের নাম। বর্ত্তমান নাম রঠোড় বা রাঠোড়।

লিওনাত—গ্রীক্‌নাম (Leonotos)

বলদর্শন—সৈন্য প্রদর্শন (Parade)

বাবিরুষ—বভেরু বা বাবিলনের (Babylon) অপর নাম

বাহ্লীক—বাল্‌খ বা বল্‌খের প্রাচীন নাম।

বিদিশা—বর্ত্তমান নাম ভিল্‌সা। ইহা গোয়ালিয়ার রাজ্যে অবস্থিত ও ভূপাল নগরের নিকটবর্ত্তী।

বিপশ্বী— গৌতমের পূর্ব্ববর্ত্তী বুদ্ধগণের নাম। বৌদ্ধ মতানুসারে গৌতমের পূর্ব্বে আর পাঁচজন বুদ্ধত্বলাভ করিয়াছিলেন।
বিশ্বভূ—

বিষয়—প্রদেশের অংশ বিশেষ, চাক্‌লা, জিলা।

বিহার—অর্থে বৌদ্ধ মন্দির বা সঙ্ঘারাম উভয়ই বুঝায়।

বৈশালী—বর্ত্তমান নাম বসার, ইহা মোজফ্‌ফরপুর জিলায় অবস্থিত।

শক—জাতি বিশেষের নাম, ইহার প্রাচীন গ্রীক্‌গণের Sakai বা Skythoi।

ষাহি—কুষণ বংশীয় সম্রাটগণের উপাধি, এখনও বহু প্রাচীন রাজপুত বংশ এই উপাধি ব্যবহার করিয়া থাকেন।

সঙ্কাস্য—বর্ত্তমান নাম সঙ্কিসা, ইহা ইটা জিলায় অবস্থিত। প্রবাদ আছে গৌতম বুদ্ধ এই স্থানে ত্রয়স্ত্রিংশ স্বর্গ হইতে অবতরণ করিয়াছিলেন।

সঙ্ঘ—বৌদ্ধ ভিক্ষু সম্প্রদায়। সঙ্ঘ, বৌদ্ধত্রিরত্নের একটি রত্ন।

সঙ্ঘারাম—Monastery; বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদিগের বাসস্থান।

সদ্ধর্ম্ম—বৌদ্ধধর্ম্মের নাম।

সাকেত—অযোধ্যা বা কৌশলের নামান্তর।

সুরসেন—মথুরার প্রাচীন নাম

সুবর্ণভূমি—ব্রহ্মদেশের প্রাচীন নাম।

সুবস্তু—ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের নদীর নাম। ইহার বর্ত্তমান নাম সোয়াত (Swat)

সূচি—রেলিংএর অংশ বিশেষ (Cross bar)

স্তূপ—বৌদ্ধ মন্দিরবিশেষ, ইহার আকার অর্দ্ধবর্ত্তুলের (hemispherical) ন্যায়। বুদ্ধদেব স্বয়ং স্তূপ বা চৈত্যের আকার বর্ণনা করিয়াছিলেন, পালি গ্রন্থবিশেষে এই কথা লিখিত আছে।

স্তূপ-বেষ্টনী—স্তূপের বা চৈত্যের চারি পার্শ্বের প্রাচীর বা রেলিং।

স্থাণ্বীশ্বর—বর্ত্তমান নাম থানেশ্বর।

হিরণ্যবহা—শোণের অপর নাম।